দেশে করোনা শনাক্ত ছাড়ালো ৬০ হাজার : মৃত্যু ৮১১ জনের

স্টাফ রিপোর্টার: দেশে করোনাভাইরাসে শনাক্তের হার সুস্থতার তুলনায় ৪ গুণের বেশি। অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে যে হারে সুস্থ হয়ে ওঠেন তার চেয়ে নতুন রোগী শনাক্তের হার ৪ দশমিক ৩৯ গুণ বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আরও ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে করোনায় মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ৮১১ জনে। একই সময়ে আরও ২ হাজার ৮২৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত ৬০ হাজার ৩৯১ করোনা রোগী শনাক্ত হলেন। এ সময়ে সুস্থ হয়েছেন ৬৪৩ এবং এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ১২ হাজার ৮০৪ জন। শুক্রবার বেলা আড়াইটায় কোভিড-১৯ সম্পর্কিত সার্বিক পরিস্থিতি জানাতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত স্বাস্থ্য বুলেটিনের আয়োজন করা হয়। সেখানে এসব তথ্য জানান স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। বুলেটিনে জানানো হয়, গত একদিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ১৭ জন পুরুষ, ১৩ জন নারী। এর মধ্যে ১৭ জন হাসপাতালে, ১৩ জন বাড়িতে মারা গেছেন। তাদের ১১ জন ঢাকা বিভাগের, ১২ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৩জন সিলেট বিভাগের, ১ জন রাজশাহী বিভাগের, ১ জন রংপুর বিভাগের এবং ২ জন বরিশাল বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। এই ৩০ জনের মধ্যে এক জনের বয়স ছিলো ৮০ বছরের বেশি। এছাড়া ২ জনের বয়স ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে, ৬ জনের বয়স ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে, ১১ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ৭ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৩ জনের বয়স ছিলো ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে।
বুলেটিনে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৫০টি পরীক্ষাগারে ১৪ হাজার ৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ০৭ শতাংশ। আর শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বিবেচনায় সুস্থতার হার ২১ দশমিক ২০ শতাংশ, মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ। নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ। তবে কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ ও জামালপুরের শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজে ‘কারিগরি ত্রুটির’ কারণে নমুনা পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে। অধ্যাপক নাসিমা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে আনা হয়েছে ৩৬৫ জনকে। বর্তমানে সারাদেশে আইসোলেশনে রয়েছেন ৬ হাজার ৯৪৬ জন রোগী।
গত বৃহস্পতিবারের বুলেটিনে জানানো হয়, করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৫ জন মারা গেছেন। ১২ হাজার ৬৯৪টি নমুনা পরীক্ষায় করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে আরও দুই হাজার ৪২৩ জনের দেহে। সে হিসাবে আগের ২৪ ঘণ্টার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বাড়লেও কমেছে মৃত্যু। দেশে একদিনে সর্বোচ্চ ৪০ জনের মৃত্যুর রেকর্ড আছে। এ তথ্য জানানো হয় ৩১ মের বুলেটিনে। সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড আছে দুই হাজার ৯১১ জনের, যা গত ২ জুনের বুলেটিনে জানানো হয়। শুক্রবারের বুলেটিনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনার পরীক্ষার ভিত্তিতে শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৭ শতাংশ। এ পর্যন্ত রোগী শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ২১ দশমিক ২০ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৪ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ৩৬৫ জনকে এবং বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন ছয় হাজার ৯৪৬ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ১৭৩ জন এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন তিন হাজার ৮৪৭ জন। দেশে মোট আইসোলেশন শয্যা রয়েছে ১৩ হাজার ২৮৪টি। এর মধ্যে রাজধানী ঢাকায় সাত হাজার ২৫০টি এবং ঢাকার বাইরে বিভিন্ন হাসপাতালে ছয় হাজার ৩৪টি শয্যা রয়েছে। সারাদেশে আইসিইউ শয্যার সংখ্যা ৩৯৯টি এবং ডায়ালাইসিস ইউনিট রয়েছে ১১২টি। গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে দুই হাজার ২৪৫ জনকে। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে নেয়া হয়েছে দুই লাখ ৯৭ হাজার ৪৩৩ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৪৯৫ জন। এ পর্যন্ত মোট ছাড় পেয়েছেন দুই লাখ ৪০ হাজার ১১৪ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন ৫৭ হাজার ৩১৯ জন। দেশের ৬৪ জেলা-উপজেলা পর্যায়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনের জন্য ৬২৯টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে সেবা দেয়া যাবে ৩১ হাজার ৯৯১ জনকে। বরাবরের মতোই করোনাভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকতে সবাইকে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, মুখে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানান ডা. নাসিমা। করোনাভাইরাসের প্রকোপে গোটা বিশ্ব এখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। চীনের উহান শহর থেকে গত ডিসেম্বরে ছড়ানোর পর এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৬৭ লাখ ছাড়িয়েছে। মৃতের সংখ্যা তিন লাখ ৯৩ হাজারেরও বেশি। তবে ৩২ লাখ ৬২ হাজারের বেশি রোগী ইতোমধ্যে সুস্থ হয়েছেন। বাংলাদেশে করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ৮ মার্চ।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More