বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকী আজ

স্টাফ রিপোর্টার: স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী, মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকী আজ। তাঁর জন্ম ১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া গ্রামে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে জাতির পিতার হত্যাকারীদের নিষ্ঠুর, বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞের সময় শহীদ হন তিনি।

বেগম ফজিলাতুন নেছা তিন বছর বয়সে বাবা আর পাঁচ বছর বয়সে মাকে হারান। তার ডাকনাম ‘রেণু’। তার বাবার নাম শেখ জহুরুল হক ও মায়ের নাম হোসনে আরা বেগম। দাদা শেখ কাসেম চাচাতো ভাই শেখ লুৎফর রহমানের ছেলে শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে বেগম ফজিলাতুন নেছার বিয়ে দেন। গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলে তিনি প্রাথমিক লেখাপড়া করেন। পরে গ্রামে গৃহশিক্ষকের কাছে লেখাপড়া করেন। টুঙ্গিপাড়ার অজপাড়াগাঁয়ের সন্তান শেখ মুজিব দীর্ঘ আপসহীন লড়াই-সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় ধীরে ধীরে শুধু বাঙালি জাতির পিতাই নন, বিশ্ববরেণ্য রাষ্ট্রনায়কে পরিণত হয়েছিলেন, তার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তারই সহধর্মিণী, মহীয়সী এই নারী বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব। বঙ্গবন্ধুর সমগ্র রাজনৈতিক জীবন ছায়ার মতো অনুসরণ করে তার প্রতিটি রাজনৈতিক কর্মকান্ডে অফুরান প্রেরণার উৎস হয়েছিলেন বেগম মুজিব। বাঙালি জাতির মুক্তিসনদ ছয় দফা ঘোষণার পর বঙ্গবন্ধু যখন বারবার পাকিস্তানি শাসকদের হাতে বন্দীজীবন যাপন করছিলেন, তখন দলের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী তার কাছে ছুটে আসতেন, তিনি তাদের বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন দিকনির্দেশনা পৌঁছে দিতেন এবং লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার জন্য অনুপ্রেরণা জোগাতেন। বিশেষ করে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় যখন বঙ্গবন্ধুর প্যারোলে মুক্তি প্রশ্নে কিছু কুচক্রী স্বাধীনতা সংগ্রামকে বিপন্ন করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছিলো, তখন প্যারোলে মুক্তির বিপক্ষে বেগম মুজিবের দৃঢ়চেতা অবস্থান বাংলার মুক্তিসংগ্রামকে ত্বরান্বিত করেছিল; যা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। দিবসটি পালন উপলক্ষে আওয়ামী লীগ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আজ শনিবার সকাল ৯টায় বনানী কবরস্থানে কড়াকড়িভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বঙ্গমাতার স্মরণে তার কবরে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ, কোরআনখানি ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো এ কর্মসূচিতে অংশ নেবে। ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী জাতীয়ভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এ বছরের প্রতিপাদ্য ‘বঙ্গমাতা ত্যাগ ও সুন্দরের সাহসী প্রতীক’। বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা। বঙ্গমাতার জ্যেষ্ঠ কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফরমে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান করবেন। জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী। বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকীতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত নারীদের আর্থিক সাহায্য ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে দুস্থ নারীদের সেলাই মেশিন ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে নগদ অর্থ প্রদান করা হবে।

সারাদেশে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন দফতর-সংস্থা বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী উদযাপনে আলোচনাসভার আয়োজন করবে। এ ছাড়া মহীয়সী নারী বঙ্গমাতার গৌরবময় কর্মজীবনের ওপর প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ ও স্মরণিকা প্রকাশ করা হবে। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ অন্যান্য ইলেকট্রনিক মিডিয়া বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে।

বঙ্গমাতার জন্মদিন উপলক্ষে আজ দুপুর ১২টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কৃষক লীগ আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেছে। বাদ আসর ঢাকা মহানগরী উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগসহ সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের আয়োজনে বঙ্গবন্ধু এভিনিউর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল হবে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী যথাযথ মর্যাদায় পালন করার জন্য আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠনের সর্বস্তরের নেতা-কর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More