সবজির দামে পুড়ছে বাজার, ডিমের ডজন ১৫০ টাকা

শাক-সবজি থেকে শুরু করে মুরগি, ডিম, চাল, মাছসহ প্রায় সব নিত্যপণ্যের দামই এখন ঊর্ধ্বমুখী। বলা চলে ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। বাজারে একমাত্র কাঁচা পেঁপে ছাড়া প্রায় সব ধরনের সবজির দাম ৮০ টাকার ঘরে আটকে আছে। এর মধ্যে করলা, বেগুন ও টমেটোর মতো সবজিগুলোর দাম আরও বেশি।

শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাজধানীর খিলক্ষেত, কারওয়ান বাজার, যাত্রবাড়ি, কৃষিমার্কেট ঘুরে সবজির দামের এমন চিত্র দেখা গেছে।

বিক্রেতারা সবজির দাম বাড়ার কারণ হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে মৌসুম শেষ হওয়া, সরবরাহ কম এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বৃষ্টির অভিযোগ জানিয়ে আসছেন।

আজকের বাজারে প্রতি কেজি করলা বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়, প্রতি কেজি শসা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৮০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ১৮০ টাকা, পটল প্রতি কেজি ৮০ টাকা, বরবটি প্রতি কেজি ১০০ টাকা, ঝিঙা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, কচুর লতি প্রতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া, প্রতি কেজি ধুন্দল বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, কাঁকরোল প্রতি কেজি ৮০ টাকা, বেগুন (গোল) প্রতি কেজি ১৪০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৩০ টাকা, চিচিঙ্গা প্রতি কেজি ৮০ টাকা, কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ২৪০ টাকা, বেগুন (লম্বা) প্রতি কেজি ৮০ টাকা, কঁচু প্রতি কেজি ৮০ টাকা, জালি প্রতি পিস ৬০ টাকা এবং লাউ প্রতি পিস ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

রাজধানীর খিলক্ষেত বাজারে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে বাজার করতে আসা জেসমিন বলেন, আজ প্রায় দুই মাস ধরে বাজারে সবজির অতিরিক্ত দাম চলছে। মাছ-মাংসের পাশাপাশি এখন মনে হচ্ছে সাধারণ ক্রেতারা সবজিও খেতে পারবে না।

ব্যবসায়ীদের দাবি, বেশিরভাগ সবজিরই এখন মৌসুম শেষ, তাই সরবরাহ কম। কিন্তু দুই মাস ধরেও কী একই রকম অবস্থা চলতে পারে? সবজির মৌসুম তো দুই মাস আগেই শেষ হয়েছে। এখনো কী নতুন সবজি ওঠেনি? এত বেশি দাম হলে তো সাধারণ ক্রেতারা সবজিও কিনতে পারবে না।

কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা ফিরোজ জানান, সবজির দাম বাড়ার পর থেকে আমাদের মতো সাধারণ বিক্রেতাদের সবজি বিক্রি অনেক কমে গেছে। দাম বাড়ার কারণে মানুষ এখন কম পরিমাণে সবজি কিনছে। এ কারণে আগে এক ধরনের সবজি যেখানে ১৫-২০ কেজি করে আনতাম, এখন তা আনি মাত্র পাঁচ কেজি করে। অর্থাৎ, মানুষ আগে এক কেজি সবজি কিনলে এখন আধা কেজি কিনছে। সবমিলিয়ে সবজির দাম বাড়ার কারণে আমাদের ব্যবসাও কমে গেছে।

কারওয়ান বাজারসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সপ্তাহ ব্যবধানে বেড়েছে মুরগির দাম। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায়। যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা। সোনালি মুরগি ৩২০-৩৪০ টাকা, সাদা কক ৩০০ টাকা, লাল কক ২৮০-৩০০ টাকা এবং দেশি মুরগি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বিক্রেতারা বলছেন, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়ছে মুরগির। রাজধানীর কারওয়ান বাজারের মুরগি বিক্রেতা দিদার বলেন, ব্রয়লার মুরগির দাম দুই সপ্তাহ ধরে বাড়ছে। তবে সোনালি ও অন্যান্য মুরগির দাম কিছুটা ওঠানামা করছে।

বর্তমানে প্রতি ডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়; যা গত সপ্তাহেও ছিল ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকা। এছাড়া প্রতি ডজন সাদা ডিম ১৪০ টাকায় কিনতে হচ্ছে; যা গত সপ্তাহেও ছিল ১৩৫-১৪০ টাকা। আর প্রতি ডজন হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ২৩০ টাকায়।

তবে গরু ও খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায়, খাসির মাংস এক হাজার ২০০ টাকা এবং ছাগলের মাংস এক হাজার ১০০ টাকায়।

এদিকে, রাজধানীর বাজারে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ২০০ টাকায়। আর ৫০০-৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ এক হাজার ৬০০ টাকা, ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ এক হাজার ৮০০ টাকা এবং দেড় কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার টাকায়।

এছাড়া প্রতিকেজি বোয়াল ৭৫০-৯০০ টাকা, কোরাল ৮৫০ টাকা, আইড় ৭০০-৮০০ টাকা, চাষের রুই ৩৮০-৪৫০ টাকায়, কাতল ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ১৮০-২২০, পাঙাশ ১৮০-২৩০, কৈ ২০০-২২০ এবং পাবদা ও শিং বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৫০০ টাকায়। আর চাষের ট্যাংরা প্রতি কেজি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, কাঁচকি ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা ও মলা ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More