খোশ আমদেদ মাহে রমজান

।। প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউসুফ আলী।।

খোশ আমদেদ মাহে রমজান

।। প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউসুফ আলী।।

আজ পয়লা রমজান। অশেষ রহমত, বরকত ও মুক্তির বার্তা নিয়ে আজ থেকে শুরু হচ্ছে পবিত্র রোজার মাস। মোবারক হো হে মাহে রমজান। অশেষ কল্যাণের ফল্গুধারায় সিক্ত সিয়াম সাধনের এই মাসে আল্লাহর রহমত বৃষ্টি ধারার ন্যায় ঝরতে থাকে এবং প্রতিটি নেক আমলের প্রতিদান বহুগুণে বৃদ্ধি করা হয়। এ মাসে একটি নফল আদায় করলে অন্য মাসে একটি ফরজ আদায় করার সমান ছওয়াব পাওয়া যায়; আর প্রতিটি ফরজের ছওয়াব অন্য মাসের ৭০টি ফরজের ছওয়াবের সমান দেয়া হয়। এ কারণে রোজার মাসকে পূণ্যের বসন্ত বা নেকির মওসুম বলা হয়। হাদিসে আছে, জান্নাতে ‘রাইয়ান’ নামক একটি দরজা আছে। এই দরজা দিয়ে শুধুমাত্র রোজাদাররাই প্রবেশ করবে (বুখারী, মুসলিম)। যে ব্যক্তি ঈমানসহ সওয়াবের আশায় রমজানের রোজা রাখবে তার অতীতের সমস্ত গোনাহ মাফ করে দেয়া হবে (বুখারী, মুসলিম, তিরমিজী)। হাদিসে আরও এসেছে, এই মাসে একজন ঘোষণাকারী ঘোষণা দিতে থাকেন যে, হে নেকী অšে^ষণকারী ! অগ্রসর হও এবং হে পাপাচারী, বিরত হও। আর বহু লোককে এ মাসে জাহান্নাম থেকে মুক্ত করে দেয়া হয় এবং প্রত্যেক রাতেই এরূপ হতে থাকে (তিরমিজী ও ইবনে মাজা)। এই মাসে দুর্বৃত্ত শয়তানকে শৃক্সখলাবদ্ধ করা হয় যাতে আল্লাহর প্রিয় বান্দাদের নেক কর্মগুলো নষ্ট করতে না পারে। এই মাস আত্মশুদ্ধি ও তাকওয়া অর্জনের মাস। এই মাসের প্রথম দশকে রয়েছে রহমত, দিত্বীয় দশকে মাগফেরাত এবং তৃতীয় দশকে জাহান্নাম থেকে নাজাত। রমজানের রোজা আমাদের ওপর ফরজ। মহান আল্লাহ জাল্লাশানুুহ্ এরশাদ করেন, হে ইমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে যেমন তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপরও ফরজ করা হয়েছিল যাতে তোমরা তাকওয়া বা  আল্লাহ ভীতি অর্জন করতে পার (বাকারা:১৮৩)। দুনিয়ার প্রত্যেকটি জিনিষের একটি উপযুক্ত সময় আছে; ব্যবসায়ীদের লাভের একটি মওসুম আছে, প্রতিটি ফসলের একটি নির্দিষ্ট ঋতু আছে। এমনিভাবে সর্বাধিক নেকী কামায়েরও একটি সময় আছে। আর এটা হলো এই রোজার মাস। আমরা যাতে এই মাসে বেশী বেশী নেকী অর্জন করতে পারি তার জন্য আজ থেকেই প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে এবং আমাদের দুনিয়াবি কাজ কিছুটা কমিয়ে নেক আমলে বাড়তি সময় দিতে হবে। রমজান মাসের প্রত্যেকটি মুহূর্তই দামী। এই কারণে আমাদের এই মাসের কদর করতে হবে। বেশি বেশি সময় কাটাতে হবে কুরআন তেলওয়াত, জিকির-আজকার, গরিবদের সাহায্য সহযোগিতা ও অন্যান্য ইবাদত-বন্দেগীর মাধ্যমে। আল্লাহ জাল্লাশানুহু আমাদের সবাইকে রমজানের সমুদয় বরকত দান করেন। আমীন।  (লেখক: মৎস্য বিজ্ঞানী ও অধ্যাপক, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়)

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More