ডিলারদের কারসাজিতে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরি করে বেশি দামে বিক্রি

সরকার নির্ধারিত দাম মানছেন না মেহেরপুরের সার ব্যবসায়ীরা

স্টাফ রিপোর্টার: সরকারিভাবে সারের দাম বাড়ার কারণে নতুন দাম নির্ধারণ করে দেয়া হলেও তা মানছেন না মেহেরপুরের সার ব্যবসায়ীরা। ডিলারদের কারসাজিতে কৃত্রিম সংকট তৈরিতে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে সার। অনাবৃষ্টি, ডিজেল, শ্রমিকের দাম বৃদ্ধি, লোডশেডিং আর সারের দাম বৃদ্ধি হওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন মেহেরপুরের কৃষকরা। বস্তাপ্রতি ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বেশি নেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন কৃষকরা। বাড়তি দামে সার কিনে ফসল উৎপাদনে খরচ বাড়ছে কৃষকের। তবে এ বিষয়ে কৃষি বিভাগের সেই পুরোনো সুর। বেশি দামে সার বিক্রি করছে- এমন তথ্য পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কৃষকরা জানান, সরকারিভাবে ৫০ কেজি ইউরিয়া সারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১১০০ টাকা। অথচ বিসিআইসি অনুমোদিত ব্যবসায়ীরা প্রতি বস্তা সার বিক্রি করছে ১২৫০ টাকা দামে। শুধু ইউরিয়া না, তিউনেশিয়া সারের দাম ১১০০ টাকা, সেটি বিক্রি হচ্ছে ১৪৭০ টাকায়। এই সার আবার খুচরা ব্যবসায়ীরা কিনে গ্রামের কৃষকদের কাছে বিক্রি করছে ২৮ টাকা কেজি দরে। তাহলে এক বস্তা সারের দাম পড়ে ১৪০০ টাকা।

কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, জেলায় বছরে সারের চাহিদা থাকে ৩৫ হাজার ৪৯২ টন। সে অনুযায়ী সরবরাহও ঠিক আছে, তারপরও ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে সারের। জেলায় ৯৪ জন সরকার অনুমোদিত বিসিআইসি ও বিএডিসির লাইসেন্সধারী ব্যববসায়ী আছে, যার মধ্যে ৩৫ জন বিসিআইসি ও ৫৯ জন বিএডিসি অনুমোদিত ব্যবসায়ী রয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, ডিলারদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে অভিযোগ দিলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানের ভয়ে অধিক দামে পাইকারদের কাছে সার বিক্রি করে দোকান বন্ধ রাখছেন জেলার অধিকাংশ সার ডিলাররা। এতে খুচরা দোকান থেকে বেশি টাকায় সার কিনতে হচ্ছে কৃষকদের।

কাজিপুর গ্রামের কৃষক মনিরুল বলেন, ‘ধান লাগানোর শেষের দিকে সারের সরকারি রেট ছিল ১১০০ টাকা। এখন সার ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। এভাবে সার কিনে কীভাবে আমাদের চলবে, আমাদের খরচ বেশি হয়ে যাচ্ছে।’

নিশিপুর গ্রামের চাষি সেন্টু রহমান বলেন, ‘১০ থেকে ১৫ কেজি সারের দরকার, অথচ ব্যবসায়ীরা দিচ্ছে না। নিলে বস্তা ধরে নিতে হবে। এত সার কোথায় দেব, আমাদের যা দরকার তাই নেবো।’

বামন্দী বিএডিসি অনুমোদিত সার ডিলার গ্লোডেন ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী তানিয়া খাতুন বলেন, ‘কৃষকদের চাহিদা থেকে কম সার পাওয়ার কারণে সারের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। তাছাড়া সারের দাম বেড়ে যাওয়ার পর থেকে আগের তুলনায় সারের চাহিদাও বেড়ে গেছে। তাই সার শেষ হয়ে যাওয়ায় গোডাউন বন্ধ করে রাখতে বাধ্য হচ্ছি।’

মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সামসুল আলম বলেন, ‘জেলায় সারের কোনো ঘাটতি নেই, অন্য কোনো অজুহাত দেখিয়ে যদি কোনো ব্যবসায়ী বেশি দামে বিক্রি করে তাহলে তাকে কখনই ছাড় দেয়া হবে না।

‘যদি সরকার নির্ধারিত দামের বাইরে বিক্রি করে সে ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলা আছে, কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। সরকার নির্ধারিত দামের বাইরে কোনোভাবেই সার বিক্রি করা যাবে না। এ ব্যাপারে কৃষি বিভাগ তৎপর আছে।’

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More