চুয়াডাঙ্গায় একদিনেই তাপমাত্রা কমেছে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও ফেরেনি স্বস্তি : বৃষ্টির পূর্বাভাস
স্টাফ রিপোর্টার: তাপমাত্রা কিছুটা কমে তীব্র তাপপ্রবাহ দূর হয়েছে। চুয়াডাঙ্গা জেলায় এক দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা কমেছে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সঙ্গে রয়েছে বৃষ্টির পূর্বাভাস। চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার গতকাল সোমবার জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রোববার একই সময়ে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ছিলো প্রচ- তাপপ্রবাহ। এক দিনের ব্যবধানে জেলায় তাপমাত্রা কমেছে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সেই সঙ্গে গতকাল সোমবার সকাল থেকেই দিনভর আকাশজুড়ে মেঘের আনাগোনার কারণে সূর্যের তাপ মাটিতে সেভাবে পৌঁছাতে না পারায় কিছুটা হলেও স্বস্তিতে ছিল জনজীবন। দীর্ঘদিন পর আবহাওয়া অধিদপ্তর সুখবর হিসেবে দিয়েছে বৃষ্টির পূর্বাভাস। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জামিনুর রহমান জানান, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সোমবার বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টিপাত হচ্ছে। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকায় তাপমাত্রা নামতে শুরু করেছে। আগামীকাল (আজ মঙ্গলবার) খুলনা বিভাগের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে বৃষ্টিপাত হতে পারে। কথা হয় পৌর এলাকার সরদারপাড়ার বাসিন্দা রিকশাচালক আতিকুল ইসলামের সঙ্গে। রোদের তেজ একটু কমলেও পুরো স্বস্তির জন্য বৃষ্টির আশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আজগে রোদির তেজ এট্টু কম মনে হচ্চে। প্যাসেন্দারও পাওয়া যাচ্চে। অ্যাকন এট্টু পানি হলি জানে শান্তি আসপে।’
স্থানীয় আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা গেছে, চলতি মরসুমে ১৩ মার্চ থেকে চুয়াডাঙ্গায় তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে। ওই দিন জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিলো ৩৭ দশমিক ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর আর কমেনি। ১০ মে চলতি বছরে সারা দেশের সর্বোচ্চ ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল দক্ষিণ-পশ্চিমের এই জেলায়।
আবহাওয়াবিদেরা জানান, ৩৬ ডিগ্রি থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলা হয়ে থাকে। এ ছাড়া ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে মাঝারি তাপপ্রবাহ এবং ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ৪২ ডিগ্রির বেশি তাপমাত্রাকে খুব তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়ে থাকে। সে হিসেবে চলতি মরসুমে জেলায় ২২ দিন তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। এর মধ্যে ১২ দিন মৃদু, ৬ দিন মাঝারি, ৩ দিন তীব্র এবং একদিন অতি তীব্র তাপপ্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে জেলায়।
আবহাওয়া সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ মঙ্গলবার ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়াভাবে দমকা হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টি হতে পারে, সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। একই সঙ্গে সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে এবং রাতের তাপামাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। বুধবারের আবহাওয়া সম্পর্কে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয় ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টি হতে পারে, সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। বৃহস্পতিবারের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে; রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে, সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। এ অবস্থায় সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। শুক্রবার রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টি হতে পারে, সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এদিন সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও জানায়, আগামী ৫ দিনে বজ্রবৃষ্টিপাতের প্রবণতা বৃদ্ধি পাবে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.