আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করলো ইসি

স্টাফ রিপোর্টার: আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। নির্বাচন কমিশন সচিব আক্তার আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের কক্ষে বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে তিনি জানিয়েছেন। বৈঠকে সিইসিসহ নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম, আব্দুর রহমানেল মাছউদ, সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ ও সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন। গতকাল সকালে বিদেশি একটি সংস্থার প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। বৈঠক শেষে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রসঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘যখন দেখবেন আকাশে সূর্য উঠে গেছে, তখন পরিষ্কার হয়ে যাবে, অপেক্ষা করেন।’ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আওয়ামী লীগ ও এর নেতাদের বিচারকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেসসহ দলটির যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গত শনিবার রাতে নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এ-সংক্রান্ত আরেক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না। এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন হলে নির্বাচন কমিশন (ইসি) বসে সিদ্ধান্ত নেবে। সিইসি বলেন, ‘আমরাও এটা নিয়ে কনসার্ন। বাট উই আর ওয়েটিং ফর দ্য গেজেট নোটিফিকেশন টু কাম।’ রাজনৈতিক দলগুলোকে নিবন্ধন দিয়ে থাকে নির্বাচন কমিশন। কোনো দল দলীয় প্রতীকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে চাইলে নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত হতে হয়।
উল্লেখ্য, মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ছাত্র-জনতা ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সংগঠনের তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলে। আন্দোলনের মুখে শনিবার আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। শনিবার রাত ১১টায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠক এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, উপদেষ্টা পরিষদের এক বিশেষ সভায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সংশোধনী অনুমোদিত হয়। সংশোধনী অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কোনো রাজনৈতিক দল, তার অঙ্গসংগঠন বা সমর্থক গোষ্ঠীকে শাস্তি দিতে পারবে। আইন উপদেষ্টা বলেন, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও তার নেতাদের বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা, জুলাই আন্দোলনের নেতাকর্মীদের নিরাপত্তা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বাদী ও সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে সাইবার স্পেস-সহ আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরিপত্র পরবর্তী কর্মদিবসে জারি করা হবে। এর আগে বিচার না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। আজ আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়, কিন্তু ট্র্যাকব্যাক এবং পিংব্যাক খোলা.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More