ইতালি নিয়ে যাওয়ার কথা বলে দুই কোটি ১৫ লক্ষাধিক টাকা আদায় চুয়াডাঙ্গায় আদম দালালের খপ্পরে পড়ে নিঃস্ব ২৯ পরিবার
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গায় আদম ব্যবসায়ীর খপ্পরে পড়ে ২৯ পরিবার এখন নিঃস্ব। ইতালি নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখিয়ে ভুক্তভোগী এসব পরিবারের কাছ থেকে দুই কোটিরও বেশি টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়েছে আদম দালালরা। টাকা চাইলে আড়াল থেকে বিভিন্নভাবে দিচ্ছে প্রাণনাশের হুমকি। টাকা ফেরতের দাবিতে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। চুয়াডাঙ্গা পশুহাটপাড়ার আলতাফ উদ্দিনের ছেলে রাজু অভিযোগ করে বলেন, চুয়াডাঙ্গা মাঝেরপাড়ার সাজেদুর রহমানের ছেলে আববাদ আলী লসন, মৃত আসাদুল হক আসার ছেলে সাজেদুর রহমান লাভলু, চুয়াডাঙ্গা ছাগলফার্ম পাড়ার শাহ আলম হাওলাদারের স্ত্রী জলি খাতুন, শাহ আলমের ছেলে ইতালি প্রবাসী শামীম হাওলাদার, সাজেদুর রহমান লাভলুর স্ত্রী রওশন আরা, ইতালি প্রবাসী শামীম হাওলাদারের স্ত্রী রোমানা খাতুন আদম দালাল। তারা বৈধভাবে ইতালি নিয়ে যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আড়াই বছর আগে আমাদের ২৯ জনের কাছ থেকে ২ কোটি ১৫ লাখ ৭৭ হাজার টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে নেয়। ছয় মাসের মধ্যে ইতালিতে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু আড়াই বছর গত হলেও তা হয়নি। আমরা টাকা ফেরত চাইলে চুয়াডাঙ্গার যুবলীগ নেতা সাজেদুর রহমান লাভলুসহ দালালরা বিভিন্নভাবে প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে। ভুক্তভোগীরা জানান, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তালতলা পশুরহাটপাড়ার রাজু বিশ্বাস ২০ লাখ, ছয়ঘরিয়া গ্রামের শাকিল আরেফিন ৪ লাখ, বসু ভা-ারদহ গ্রামের আহাদ আলী ৩ লাখ ৮০ হাজার, ইসলামপাড়ার সোহেল রানা ১৫ লাখ ৬০ হাজার, রাফিউল আলম ২ লাখ ৫০ হাজার, দৌলাতদিয়াড় গ্রামের মুন্না ১১ লাখ ৮০ হাজার, চুয়াডাঙ্গা ছাগল ফার্মপাড়ার নাজমা খাতুন ৪ লাখ, রেলপাড়ার রাজীব হোসেন ৪ লাখ ৫০ হাজার এবং হাজরাহাটি গ্রামের জাহিদুর রহমান ৬ লাখ টাকা দালালদের হাতে তুলে। এছাড়া আলমডাঙ্গা উপজেলার জাহাপুর গ্রামের ইমরান হোসেন ৬ লাখ, বেগুয়ারখাল গ্রামের পিন্টু রহমান ৮ লাখ ৫০ হাজার, মুজিবুল ইসলাম ১৪ লাখ ২০ হাজার, বারোঘরিয়া গ্রামের রাজিবুল হাসান বাপ্পি ৬ লাখ, নান্দবার গ্রামের হাসমত উল্লাহ ৪ লাখ ৫৭ হাজার, চিলাভালকি গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম ৪ লাখ, আসমানখালীর স্বাধীন আলী ৬ লাখ, শফিকুল ইসলাম ৭ লাখ, কান্তপুর গ্রামের নাজিম উদ্দিন ১৫ লাখ ৫০ হাজার, জোড়গাছা গ্রামের মোকলেছুর রহমান ৫ লাখ এবং মোতালেব আলী ১০ লাখ ২০ হাজার টাকা দেন দালালদের হাতে। চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দামুড়হুদার জিহাদ ৭ লাখ, ছুটিপুরের জীবন ৬ লাখ, নাঈমুর রহমান ৬ লাখ ও শকিবুল ইসলাম ৬ লাখ টাকা টাকা দেন। কুষ্টিয়া পোড়াদহের রাশেদ ৭ লাখ, একই জেলার মিরপুরের রুবায়াত হোসেন ৫ লাখ, ভোলা জেলার রানা ৪ লাখ এবং জয়পুরহাট জেলার সেলিম হোসেন ৬ লাখ টাকা দেন ইতালি যাওয়ার জন্য। সব মিলে ২৯ জনের কাছ থেকে আদম দালালরা ২ কোটি ১৫ লাখ ৫৭ হাজার টাকা দিয়েছে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। তারা বলেন, আমরা টাকা ফেরত চাইলে কদিন থেকে আদম দালালরা বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। তবে বিভিন্নভাবে প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে। ভুক্তভোগীরা বলেন, আমরা এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি এবং টাকা ফেরতের দাবিতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গতকাল রোববার সংক্ষিপ্ত মানববন্ধন করি।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.