গাংনীতে নিষিদ্ধ যুবলীগ নেতা আরিফুলের বিরুদ্ধে ফুফুকে দাদি সাজিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করে নেয়ার অভিযোগ

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামে জমি জালিয়াতির এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগের তীর কথিত নিষিদ্ধ যুবলীগ নেতা আরিফুল ইসলামের দিকে, যিনি নিকট আত্মীয় ফুফু সকিনা খাতুনকে দাদি সাজিয়ে পূর্বপুরুষদের জমি এককভাবে নিজের নামে রেজিস্ট্রি করে নিয়েছেন বলে দাবি করেছেন তারই বড় ফুফু সকিনা খাতুন। অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, আরিফুল ইসলামের দাদা মৃত আরমান ম-ল ও দাদি মৃত ছফুরা খাতুনের অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে। সম্পত্তির সকল শরিকদের মধ্যে বণ্টন না করে একক দখলে নেয়ার চেষ্টা করছেন আরিফুল। অভিযোগ অনুযায়ী, নিজের ফুফু সকিনা খাতুনকে দাদি সাজিয়ে দুই বিঘা জমি দেয়ার লোভ দেখিয়ে কৌশলে সকিনা খাতুনকে দাদি ছফুরা খাতুন পরিচয়ে ব্যবহার করে জমি রেজিস্ট্রি করে নেয়া হয় ৫ বিঘা ৭ শতক। ওই জমির আরেক শরীক মামুন জানান, দাদিও ২২ বিঘা জমির মধ্যে আমার চাচা আব্দুর রহিম এরআগে আমার দাদার জমি দাদিকে দিয়ে ভুল বুজিয়ে ২ বিঘা ৭ শতক জমি রেজিস্ট্রি করে নেয়। তারপর আমার চাচাতো ভাই আরিফুল ইসলাম ২০০৮ সালে আমার দাদির জমি ৫ বিঘা ৭ শতক জমি জালিয়াতির মাধ্যমে রেজিস্ট্রি করা জমিগুলোর মধ্যে রয়েছে: ১৭৮ নং খতিয়ানের ৪৭৪২ ও ১৬২০ দাগ, ৮২ নং খতিয়ানের ১৬৬০৭ দাগ, ৩১৪ নং খতিয়ানের ৬২ নং দাগ, ১৭৫ নং খতিয়ানের ১৬৫২, ২২২০ ও ১৭৮৮ নং দাগ। বর্তমানে এসব জমি আরিফুল ইসলাম ও তার পরিবারের দখলে রয়েছে। জমির প্রকৃত উত্তরাধিকারদের দাবি, তারা যখন নিজেদের প্রাপ্যতা ফিরিয়ে চাইতে যান, তখন তাদের নানাভাবে ভয়ভীতি ও মামলার হুমকি দেয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, আরিফুল ইসলাম রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে একটি প্রভাবশালী বিএনপি নেতার আশ্রয়ে থেকে এসব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আরও জানিয়েছেন আমার চাচাতো আরিফুল ইসলাম যুবলীগের নেতা ছিলো। ফলে তার বিরুদ্ধে এতোদিন প্রদক্ষেপ নেয়া যেতো না। তবে তারা বাপ-ছেলে মিলে মোট ৭ বিঘা ১৪ কাটা জমি জালিয়াতি করলেও বর্তমানে ১৩ বিঘা ১৪ কাটা জমি ভোগ দখলে রেখেছেন। জমির বিষয়ে কথা বল্লে বিভিন্ন্ভাবে হুমকি দেয়। এবং সবচেয়ে মজার বিষয় আমার ফুফুকে সে প্রলোভন দিয়ে জমি রেজিস্ট্রি করে নেয় আমরা সেটা জানতাম না। তবে গত কয়েকদিন আগে আমার সকিনা ফুফু যখন আরিফুলের কাছে দুই বিঘা জমি যেটা রেজিস্ট্রির সময়ে দিতে চেয়েছিল সেটা চাইতে যায়। আরিফুল ইসলাম তখন জমি দেবে না বলে জানিয়ে দেয়। বিষয়টি তখন ফুফু প্রচার করেছে। এবং বর্তমানে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। শরীকরা অভিযোগ করেন, জমি ফেরত চাইলে ‘একাধিক মামলা দিয়ে হয়রানি’ করার হুমকি দিয়েছেন আরিফুল। স্থানীয়দের মতে, এটি কেবল একটি পারিবারিক বিরোধ নয় বরং জমির মালিকানা নিয়ে সুপরিকল্পিত প্রতারণার চিত্র। সকিনা খাতুন বলেন, ২০১৮ সালের দিকে হঠাৎ আরিফুল আমাকে বলে যে ফুফু তোমাকে ২ বিঘা জমি দেব একটি কাজ করতে হবে। আর তা হল তোমাকে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে গিয়ে দারিয়ে থাকতে হবে আর আমার দাদির পরিচয় দিতে হবে। আমি তার কথা মত একাজ করি কিন্তু আরিফুল আমাকে জমিটি আজ কাল করে ঘুরাতে থাকে। আর কয়েকদিন আগে সে বলেছে আমি আর জমি দেব না। তাই বিষয়টি আমি সবাইকে বলে দিয়েছি। কারণ আমার শরীকানা জমিও পাচ্ছি না। আমি আরিফুলের বিচার চাই। কারণ আমার মা দীর্ঘদিন ধরে চোখে দেখতে পাইনা। সে অসুস্থ ছিল। আবার আমরা অসহায় আমাদের সবাইকে ফাকি দিয়ে জমি দখলে রেখেছেন সেই জমি গুলোর আমরা ভোগ দখল চাই। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও ভূমি অফিসের পক্ষ থেকে এখনও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। তবে তারা দ্রুত আইনি সহায়তা পেতে আদালতের আশ্রয় নেবে বলে নিশ্চিত করেছেন। আদালতের নির্দেশে যাতে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত মালিকদের প্রাপ্য ফেরত দেয়া যায়।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More