প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে পেছনে ফেলে একটি দেশের টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়
চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন-মান উন্নয়নে অবহিতকরণ সেমিনারে বক্তারা
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুরে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবন-মান উন্নয়নে অবহিতকরণ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের প্রান্তিক পেশাজীবী জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন (দ্বিতীয় ফেইজ) প্রকল্পের আওতায় এ সেমিনারের আয়োজন করে হয়। সেমিনারের বক্তারা বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বলতে আমরা সেই মানুষদের বুঝি, যারা সমাজের একেবারে নিচের স্তরে অবস্থান করে। যেকোনো মুহূর্তে তারা অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে ছিটকে পড়তে পারে। কামার, কুমার, মুচি, নাপিতসহ এসব পেশাজীবীদের দিকে তাকালে আমরা বুঝতে পারি, তারা কীভাবে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছেন। অথচ এই মানুষগুলোরই শ্রম ও কারিগরি দক্ষতা আমাদের অর্থনীতিকে নীরবে এগিয়ে নিচ্ছে। বক্তারা আরও বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে পেছনে ফেলে একটি দেশের টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই সরকার এসব জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। চুয়াডাঙ্গা জেলায় প্রান্তিকক জনগণের উন্নয়নে কী ধরনের সমন্বিত পদক্ষেপ নেয়া যায় তা আজকের সেমিনারে উঠে আসবে বলে আমি আশা করি। সবার পরামর্শ ও মতামতের ভিত্তিতে একটি সুসংহত পরিকল্পনা তৈরি করে বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। সেমিনারে অংশগ্রহণকারীরা মাঠপর্যায়ে প্রান্তিক পেশাজীবীদের সমস্যা, চাহিদা ও উন্নয়নের সম্ভাবনা তুলে ধরেন। তারা এ প্রকল্পের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ, ক্ষুদ্র ঋণ, উদ্যোক্তা সহায়তা এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় কার্যকর উদ্যোগ বাস্তবায়নের দাবি জানান। চুয়াডাঙ্গায় প্রান্তিক পেশাজীবী জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে করণীয় নির্ধারণে অনুষ্ঠিত হয়েছে অবহিতকরণ সেমিনার। গতকাল বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়। জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের প্রান্তিক পেশাজীবী জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন (দ্বিতীয় ফেইজ) প্রকল্পের আওতায় এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়। জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সিদ্দীকা সোহেলী রশীদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে সহকারী পরিচালক এএসএম জুবায়ের পাওয়ার পয়েন্টের মাধ্যমে প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা, সিভিল সার্জন ডা. হাদী জিয়া উদ্দীন আহমেদ, জেলা তথ্য অফিসার শিল্পী ম-ল, সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আবু তালেব, প্রবেশন কর্মকর্তা ছানোয়ার হোসেন, সমাজসেবা কর্মকর্তা সাঈদ হাসান, জেলা সমাজকল্যাণ কমিটির সদস্য ডা. মার্টিন হীরক চৌধুরী, শহর সমাজসেবা কর্মকর্তা নাজমুল হোসেন, সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মৌমিতা পারভীন, দামুড়হুদা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা তোফাজ্জেল হক, জীবননগর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জাকির উদ্দীন মোড়ল, জীবননগর সহকারী সমাজসেবা কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দীন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক ও সমাজ কল্যাণ কমিটির সদস্য আসলাম হোসেন অর্ক ও তামান্না খাতুন, সমাজকর্মী মনিরুজ্জামান মনি, অ্যাড. হাসিবুল ইসলাম ও মফিজুর রহমাম মনা, সাহিত্য পরিষদের সভাপতি ইকবাল আতাহার তাজ, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী মিতা রাণী দে, মিঠু দাস, দিলীপ কুমার দাস, সবিতা বালা এবং সরকারি কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সেমিনারে প্রাপ্ত সুপারিশসমূহ সংকলন করে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে জানান আয়োজকরা। চুয়াডাঙ্গা জেলায় মোট ৪ হাজার ১৮৬জন প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অর্ন্তভুক্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ৭৬৯ ও পৌরসভা এলাকায় ৪৯৯জন, আলমডাঙ্গা উপজেলায় এক হাজার ৫৪৬জন, দামুড়হুদা উপজেলায ৭৬৯জন এবং জীবননগর উপজেলায় ৩৮০জন। এরমধ্যে থেকে বাছাই করে ১০ দিনের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে এবং আর্থিক সহযোগিতা করা হবে।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, বাংলাদেশের প্রান্তিক ও পেশাজীবী জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের প্রান্তিক ও পেশাজীবী জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প (২য় ফেইজ) প্রকল্পের অবহিতকরণ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে মেহেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় সভাকক্ষে মেহেরপুর সদর উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উদ্যোগে বাংলাদেশের প্রান্তিক ও পেশাজীবী জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন প্রকল্প (২য় ফেইজ) প্রকল্পের অবহিতকরণ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। মেহেরপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. খায়রুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাগেরহাটের চীতলমারী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সোহেল পারভেজ।এ সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক আসাদুল ইসলাম, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের রেজিস্ট্রেশন অফিসার কাজী আবুল মনসুর, সদর উপজেলা সমাজসেবা অফিসার আনিসুর রহমান, শহর সমাজসেবা কর্মকর্তা সোহেল মাহামুদ, কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম রেজা, আমদহ ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যান রওশন আলী টোকন, বুড়িপোতা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ইসমাইল হোসেন, আমঝুপি ইউনিয়নে পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, শ্যামপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এস এম ইকবাল, পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. ইকবাল হোসেনসহ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.