স্টাফ রিপোর্টার: নানা দিক বিবেচনায় রেখে সংযত বাজেট ঘোষণা করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। অনেকটা গতানুগতিক ধাঁচের এই বাজেটে আগের বছরের মতোই বিশাল ঘাটতি রয়েছে-যা পূরণ করতে হবে অভ্যন্তরীণ ব্যাংক ঋণ এবং বিদেশি অনুদান থেকে। বাজেটে কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম থাকলেও আগের বাজেটের ধারায়ই বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ব্যক্তি পর্যায়ের করমুক্ত আয়সীমা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে কিছু কিছু নিত্যপণ্যের দাম কমানোর প্রস্তাবনার পাশাপাশি সরকারের শুল্ক ও কর আহরণ বাড়ানোর উদ্যোগের কারণে বাড়বে বিভিন্ন পণ্যের দাম। গতকাল অর্থ উপদেষ্টার বাজেট বক্তৃতা টেলিভিশনে সম্প্রচার করা হয়। সচিবালয় থেকে সরবরাহ করা হয় বাজেট ডকুমেন্ট। সাধারণত রাজনৈতিক সরকারের সময় জাতীয় সংসদে বাজেট উপস্থাপন করা হয় এবং সংসদেই বাজেট পাস হয়। এবার প্রেসিডেন্টের অনুমোদনের পর উপদেষ্টা পরিষদের সভায় বাজেট পাস হবে। প্রস্তাবিত বাজেটে মধ্যবিত্তের জন্য দুঃসংবাদ রয়েছে। কারণ ফ্রিজ, এসি, মোটরসাইকেল, মোবাইল ফোন, কসমেটিক্স পণ্য, ওয়ান টাইম প্লাস্টিকের মতো পণ্যের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে বাজেটে বেশ কিছু স্বস্তির খবরও আছে। ব্যাংকে জমানো ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত কোনো আবগারি শুল্ক দিতে হবে না। আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের আকার ধরা হয়েছে ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা, যা চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল বাজেটের তুলনায় ৭ হাজার কোটি টাকা কম। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাজেটের আকার হ্রাস পাওয়ার ঘটনা। বাজেটে ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ৬৬ হাজার কোটি টাকা, যা মোট বাজেটের ৩.৬ শতাংশ। এটি বর্তমান সরকারের দৃষ্টিতে সংকোচনমূলক বাজেট। এদিকে সংশ্লিষ্টরা জানান, সরকার এমন এক সময়ে বাজেট ঘোষণা করেছে যার এক বছরের মধ্যে একটি জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা। রাজনৈতিক সরকারগুলোর আমলে ভোটারকে তুষ্ট করতে নির্বাচনবান্ধব বাজেটের দিকে নজর থাকে বেশি। কিন্তু এবারের ঘোষিত বাজেটে এ ধরনের কোনো প্রকল্প নেই। আবার জনসাধারণকে স্বস্তি দিতে পারে এমন কোনো উদ্যোগও নেই। বাজেট কিছুটা ব্যতিক্রমধর্মী: ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটকে কিছুটা ব্যতিক্রম আখ্যায়িত করে এ বাজেটে মানুষকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো আমরা বিগত বাজেটের চেয়ে ছোট আকারের বাজেট আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাব করছি। প্রবৃদ্ধিকেন্দ্রিক ধারণা থেকে সরে এসে আমরা চেষ্টা করেছি সামগ্রিক উন্নয়নের ধারণায় জোর দিতে। তাই প্রথাগত ভৌত অবকাঠামো তৈরির খতিয়ান তুলে ধরার পরিবর্তে আমরা এবারের বাজেটে প্রাধান্য দিয়েছি মানুষকে। তিনি বলেন, এবারের বাজেটে তাই শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সুশাসন, নাগরিক সুবিধা, কর্মসংস্থান ইত্যাদি বিষয়ের উপর বিশেষ জোর দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি, চতুর্থ শিল্প-বিপ্লব, স্বল্পোন্নত দেশ হতে উত্তরণ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্রমাগত যে সব সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে তার সুবিধা ভোগ এবং যে সব চ্যালেঞ্জ তৈরি হচ্ছে তা মোকাবিলা করে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার দিকেও মনোযোগ দেয়া হয়েছে।
এর আগে সোমবার সকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরে উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে ওই বৈঠকে আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন দেয়া হয়েছে। উপদেষ্টা পরিষদের বিশেষ বৈঠকে প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন শেষে তাতে সই করেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এরপর বাজেট ডকুমেন্টস নিয়ে রামপুরার বিটিভি ভবনে যান অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সেখানে রেকর্ড করা হয় ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেট উপস্থাপনা, যা বিকাল ৩টায় সমপ্রচার করে বাংলাদেশ টেলিভিশন। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের এই বাজেট প্রস্তাব পাস হবে ৩০ জুন। ১লা জুলাই থেকে শুরু হবে নতুন অর্থবছর। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট দেশের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং স্থিতিশীলতা ও প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। এবারের বাজেটটি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন নিয়ে এসেছে, যা পূর্ববর্তী বছরগুলোর বাজেটের তুলনায় ভিন্ন।
মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নামার প্রত্যাশা: বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, মূল্যস্ফীতি ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসের ১০.৮৯ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে গত এপ্রিল মাসে ৯.১৭ শতাংশে নেমে এসেছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি জুন মাসেই পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের কোঠায় নেমে আসবে। মূল্যস্ফীতির সঙ্গে এ লড়াইয়ের ফলে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা কম হতে পারে। বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বিদ্যুতের মূল্য আপাতত না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মূল্যস্ফীতি আগামী মাসে ৮ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতকে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এবারের বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে।
করমুক্ত আয়সীমা বাড়েনি: উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা বাড়েনি। অর্থাৎ আগের মতোই বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা অপরিবর্তিত রেখেছেন। তবে ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে ৩০ শতাংশ হারে একটি কর স্তর করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া স্তরেও পুনর্বিন্যাস করা হয়েছে। পাশাপাশি ২০২৬-২৭ অর্থবছর থেকে পরের এক অর্থবছর পর্যন্ত করমুক্ত আয়সীমা ২৫ হাজার টাকা বাড়ানোর ঘোষণাও দিয়ে রেখেছেন অর্থ উপদেষ্টা। ২০২৬-২৭ ও ২০২৭-২৮ অর্থবছরে করমুক্ত আয়সীমা হবে ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। কর স্তরের পুনর্বিন্যাস করার প্রস্তাব করা হয়েছে। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রথম সাড়ে তিন লাখ টাকার পরে প্রথম এক লাখ টাকার জন্য ৫ শতাংশ, পরবর্তী ৪ লাখ টাকার জন্য ১০ শতাংশ, পরবর্তী ৫ লাখ টাকার জন্য ১৫ শতাংশ, পরবর্তী ৫ লাখ টাকার জন্য ২০ শতাংশ ও পরবর্তী ২০ লাখ টাকা আয়ের জন্য ২৫ শতাংশ এবং বাকি অর্থের ওপর ৩০ শতাংশ হারে কর বসবে। প্লাস্টিকের পণ্যে ঘর গোছানোর খরচ বাড়লো: প্লাস্টিকের তৈরি বিভিন্ন পণ্য দিয়ে কম খরচে ঘর সাজানোর ক্ষেত্রে ব্যয় বাড়ছে। প্রস্তাবিত বাজেটে প্লাস্টিকের তৈরি পণ্যের ওপর ভ্যাটের হার দ্বিগুণ করে ১৫ শতাংশ করা হয়েছে। প্লাস্টিকের তৈরি সকল ধরনের টেবিলওয়্যার, কিচেনওয়্যার, গৃহস্থালি সামগ্রী, হাইজেনিক ও টয়লেট্রিজ সামগ্রীসহ অনুরূপ যে কোনো পণ্যের উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাটের হার ৭.৫ শতাংশ এর পরিবর্তে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। ৬২৬ পণ্য আমদানিতে শুল্ক ছাড়: বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যে বাড়তি শুল্ক আরোপের প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ‘সংলাপের প্রস্তুতি ও পর্যায়ক্রমে কমিয়ে আনার’ অংশ হিসাবে ৬২৬টি পণ্যে শুল্ক ছাড় দেয়া হচ্ছে। এর মধ্যে ১১০টি পণ্যের আমদানি শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহ্ উদ্দিন আহমেদ। এ ছাড়া ৬৫টি পণ্যের আমদানি শুল্ক হ্রাস, ৯টি পণ্যের সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার এবং ৪৪২টি পণ্যের সম্পূরক শুল্ক হ্রাস করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ওটিটি’ বিনোদনে খরচ বাড়বে: নতুন বাজেটে ওটিটি বা ওভার দ্য টপ প্লাটফর্ম সেবায় ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। তাতে অনলাইনে সিনেমা, সিরিজসহ বিভিন্ন কন্টেন্ট দেখতে বাড়তি খরচ গুনতে হবে দর্শকদের। মূল্যস্ফীতি ৬.৫ শতাংশে আটকে রাখার লক্ষ্য: গড় মূল্যস্ফীতি ৬.৫ শতাংশের মধ্যে ধরে রাখার লক্ষ্য ঠিক করে নতুন অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন অর্থ উপদেষ্টা। এই জুন মাসেই পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের কোঠায় নেমে আসবে মনে করেন উপদেষ্টা। রাজস্ব আদায় ও দেশীয় শিল্প সুরক্ষায় বেশকিছু পণ্যের ওপর কর, শুল্ক ও ভ্যাট আরোপ করতে যাচ্ছে সরকার। এর প্রভাবে বাজারে কিছু পণ্যের দাম বাড়তে পারে, যা মধ্যবিত্তের জন্য দুঃসংবাদ। যেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে- ফ্রিজ, এসি, রড, মোটরসাইকেল, মোবাইল ফোন, কসমেটিক্স পণ্য, ওয়ানটাইম প্লাস্টিক পণ্য প্রভৃতি। অনলাইনে পণ্য বিক্রেতাদের জন্য দুঃসংবাদ: ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে অনলাইনে পণ্য বিক্রেতাদের জন্য দুঃসংবাদ দিয়েছে সরকার। অনলাইনে পণ্য বিক্রয় কমিশনের ওপর ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর ফলে অনলাইনে কেনাকাটায় খরচ বাড়বে।
সঞ্চয়কারীদের জন্য সুখবর: প্রস্তাবিত বাজেটে সাধারণ ব্যাংক গ্রাহকদের জন্য কিছুটা স্বস্তির খবর এসেছে। আগে ব্যাংকে বছরে একবার এক লাখ টাকার বেশি জমা হলে ১৫০ টাকা আবগারি শুল্ক দিতে হতো। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এই সীমা বাড়িয়ে তিন লাখ টাকা করা হয়েছে। অর্থাৎ, এখন থেকে ব্যাংকে পুরো বছরজুড়ে জমার পরিমাণ যদি তিন লাখ টাকার কম হয়, তাহলে কোনো আবগারি শুল্ক দিতে হবে না। তবে কেউ যদি তিন লাখ টাকা বা তার বেশি জমা রাখেন, তাহলে শুল্ক প্রযোজ্য হবে। অর্থ উপদেষ্টা বলেন, জনসাধারণকে কিছুটা স্বস্তি প্রদানের লক্ষ্যে কতিপয় ক্ষেত্রে ভ্যাট ও আবগারি শুল্ক অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।
মধ্যমেয়াদি নীতি-কৌশল বিষয়ে আলোচনা করার সময় অর্থ উপদেষ্টা বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, ভেঙে পড়া আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি, শ্রমিক অসন্তোষ কমিয়ে শিল্প খাতে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনা বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিল। বিগত সরকারের সময়ে লাগামহীন দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার ফলে চরম সংকটাপন্ন ব্যাংকিং খাতের শৃঙ্খলা পুনরুদ্ধারের মতো কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে। তবে অর্থনীতিকে স্বাভাবিক গতিতে ফিরিয়ে আনার পথে এখনও বেশকিছু ঝুঁকি রয়েছে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, গত ১৫ বছরে নজিরবিহীন লুটপাট, দুর্নীতি ও অপশাসনের মাধ্যমে আর্থিক খাতকে ধ্বংসের কিনারায় নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি, তারল্য সংকট, দেউলিয়াত্ব বা অস্তিত্বের জন্য হুমকি এ ধরনের ঝুঁকির সময়োপযোগী সমাধান এবং আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে ব্যাংক রেজুল্যুশন অধ্যাদেশ করা হয়েছে।
একনজরে বাজেট: সম্পদের সুষম বণ্টন ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে অর্থ উপদেষ্টা যে বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন, সেখানে অনুদান ছাড়া ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা। অনুদানসহ সামগ্রিক ঘাটতি ধরা হয়েছে ২ লাখ ২১ হাজার কোটি টাকা। আগামী অর্থবছর ৪ হাজার কোটি টাকা অনুদান পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এই ঘাটতি মেটাতে বৈদেশিক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক লাখ ৩৫ হাজার কোটি টাকা। বৈদেশি ঋণ পরিশোধ করা হবে ৩৯ হাজার কোটি টাকা। এতে নিট বৈদেশিক ঋণ দাঁড়াবে ৯৬ হাজার কোটি টাকা। ২০২৫-২৬ অর্থবছরে অভ্যন্তরীণ খাত থেকে ঋণ নেয়া হবে এক লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে ব্যাংক থেকে নেয়া হবে এক লাখ ৪ হাজার কোটি টাকা। ব্যাংকবহির্ভূত ঋণ নেয়া হবে ২১ হাজার কোটি টাকা। সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকার। প্রস্তাবিত বাজেটে ঋণের সুদ পরিশোধে ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ এক লাখ কোটি টাকা। এছাড়া বৈদেশিক ঋণের সুদ ২২ হাজার কোটি টাকা। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকা। এনবিআর-বহির্ভূত কর ধরা হয়েছে ১৯ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া কর ছাড়া অন্য খাত থেকে পাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৬ হাজার কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বাজেটে পরিচালন ব্যয় ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৩১৭ কোটি টাকা। পরিচালন ব্যয়ের মধ্যে আবর্তক ব্যয় ৪ লাখ ৯৮ হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা। এছাড়া দেশি-বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধে এক লাখ ২২ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। পাশাপাশি ৩৬ হাজার ৫৩৩ কোটি টাকা ধরা হয়েছে মূলধন ব্যয় বাবত।
পূর্ববর্তী পোস্ট
দীর্ঘদিনের দাবি ও স্বপ্ন পূরণ : আলমডাঙ্গায় যাত্রাবিরতির অনুমোদন পেলো বেনাপোল এক্সপ্রেস
পরবর্তী পোস্ট
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.