করোনা সংক্রমণ রোধে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে

চীন, থাইল্যান্ড ও ভারতে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় আমাদেরও চিন্তিত হওয়ার কারণ আছে বৈকি। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কিছু কিছু পদক্ষেপ নেয়া হলেও তা যথেষ্ট নয় বলে মনে করি। সরকারের পক্ষ থেকে সব স্থল, নৌ ও বিমানবন্দরে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। জনপরিসরে মাস্ক পরা ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথা বলা হয়েছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে ঈদের ছুটি থেকে ফেরা যাত্রীদের মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে। কিন্তু মাস্ক পরা বা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি বিচ্ছিন্নভাবে দেখলে হবে না; প্রতিটি জনপরিসরে এটি কার্যকর করতে হবে।
প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশে সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় অর্থাৎ গতকাল বুধবার আরও ১০ জনের করোনা শনাক্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে চলতি বছর শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ২২৫ জনে। এদের মধ্যে ৬৭ জন শনাক্ত হয় চলতি মাসে। এ বছর কোভিডে প্রাণ গেছে একজনের। গত বৃহস্পতিবার দেশে করোনায় একজন মারা যান। করোনা সংক্রমণের কারণে স্বাস্থ্য বাতায়নের ১৬২৬৩ নম্বরে করোনাবিষয়ক কলের সংখ্যা বেড়ে গেছে। এটা করোনা সম্পর্কে সাধারণ মানুষের সচেতনতা বাড়ারই নমুনা। কিন্তু জনগণ সচেতন হলেই হবে না। করোনা পরীক্ষা ও টিকা সরবরাহের কাজটি করতে হবে সরকারকেই। জনস্বাস্থ্যবিদেরা করোনার সংক্রমণ রোধে হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রয়োজনীয় পরীক্ষার কিটের মজুত থাকার কথা বললেও বাস্তবে তা নেই। সরকারি হাসপাতালগুলোতে করোনা পরীক্ষার কিটের অভাব রয়েছে। এদিকটিতে অবিলম্বে দৃষ্টি দেওয়া উচিত বলে মনে করি আমরা। সেই সঙ্গে নতুন করে টিকা দেওয়ারও প্রয়োজন হতে পারে। সেই প্রস্তুতিও নেয়া দরকার। আমাদের চিকিৎসাব্যবস্থা যে কত দুর্বল, সেটা বিগত করোনা মহামারির সময় হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া গেছে। করোনা পরীক্ষা থেকে চিকিৎসার প্রতিটি ধাপে রোগীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। এবারও যাতে সে রকম পরিস্থিতি তৈরি না হয়, সে বিষয়ে সরকারের আগাম প্রস্তুতি প্রয়োজন। আর কাজটি একা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নয়; জনস্বাস্থ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত সব সংস্থা ও বিভাগকে এ ব্যাপারে সক্রিয় ভূমিকা নিতে হবে।
সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির (ইপিআই) প্রোগ্রাম ম্যানেজার এ এফ এম শাহাবুদ্দিন খান জানান, তাদের হাতে এখন ফাইজারের তৈরি ৩১ লাখ করোনার টিকা আছে। এর মধ্যে গত দুই মাসে ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৯০০ ডোজ ফাইজারের টিকা সব জেলায় পাঠানো হয়েছে, যার মেয়াদ শেষ হবে ৬ আগস্ট। এখন হাতে আছে আসলে ১৪ লাখ টিকা। করোনার সম্ভাব্য বিস্তার রোধে অবিলম্বে পরীক্ষার সরঞ্জাম সংখ্যা বাড়ানোর পাশাপাশি টিকাদান কর্মসূচি জোরদার করার বিকল্প নেই। স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞদের মতে, যারা বয়স্ক, অন্তঃসত্ত্বা, ভিন্ন কোনো জটিল রোগে ভুগছেন, তাদের জন্য তো বটেই, এমনকি যেসব ব্যক্তির সর্বশেষ টিকা নেয়ার মেয়াদ ছয় মাস পার হয়ে গেছে, তাদেরও করোনার টিকা নেয়া উচিত। আশা করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ করোনার বিস্তার ঘটার আগেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে। আর জনসচেতনতার কাজটি করতে হবে সর্বস্তরে, সব খানে। প্রচারমূলক কাজে সংবাদমাধ্যমের পাশাপাশি ব্যবহার করতে হবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকেও।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More