চুয়াডাঙ্গা আন্তঃজেলা ট্রাক ও ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়নের প্রধান কার্যালয়ে হামলার ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা আন্তঃজেলা ট্রাক ও ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়নের প্রধান কার্যালয়ে প্রকাশ্য দিবালোকে নগ্ন হামলার তীব্র প্রতিবাদ এবং চিহ্নিত হামলাকারীদের বিরুদ্ধে অবিলম্বে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়েছে। সংগঠনের সভাপতি মো. মুনতাজ আলী স্বাক্ষরিত চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দফতরে পাঠানো পত্রে বলা হয়েছে; চুয়াডাঙ্গা জেলার পণ্য পরিবহন শ্রমিকদের প্রতিনিধিত্বকারী অন্যতম বৃহৎ ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠন হলো ‘চুয়াডাঙ্গা আন্তঃজেলা ট্রাক ও ট্যাংকলরি শ্রমিক ইউনিয়ন’। ইউনিয়নটি দেশের বিদ্যমান শ্রম আইনের অধীনে সরকার কর্তৃক নিবন্ধিত এবং শ্রম আইন-২০০৬, শ্রম বিধিমালা-২০১৫ (অদ্যাবধি সংশোধিত) ও ইউনিয়নের অনুমোদিত গঠনতন্ত্র অনুযায়ী নিয়মতান্ত্রিকভাবে পরিচালিত হয়। সরকার অনুমোদিত রেজি. নং- খুলনা, ১৮৯৫/০৬। প্রতি তিন বছর পর পর সাধারণ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধিগণ ইউনিয়ন পরিচালনার দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। বর্তমানে ইউনিয়নের সদস্য সংখ্যা দুই হাজারের অধিক এবং তা ক্রমবর্ধমান। বলা বাহুল্য, শ্রম আইনের বিধান মতে কোনো ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠন দেশের কোনো রাজনৈতিক দলের অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠন নয়। আইনের নির্দেশনা অনুযায়ী ট্রেড ইউনিয়নগুলো শুধু নিজেদের শ্রেণি বা পেশার প্রতিনিধিত্বকারী জাতীয়ভিত্তিক শ্রমিক সংস্থা বা ফেডারেশনের সাথে সংযুক্ত হতে পারে। শহীদ কাশেম সড়ক (টাউন মাঠের সামনে), শ্রমিক ভবন (৩য় তলা)। বিগত প্রায় ১৯ বছর যাবৎ এই কার্যালয় থেকেই ইউনিয়নের সামগ্রিক সাংগঠনিক কার্যক্রম সুশৃঙ্খল ও ধারাবাহিকভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে। কিন্তু আমরা গভীর বিস্ময় ও ক্ষোভের সাথে লক্ষ্য করলাম যে, পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটি বা বন্ধ থাকাকালীন গত ১২ জুন বৃহস্পতিবার বিকেল আনুমানিক সাড়ে ৫টার দিকে ‘চুয়াডাঙ্গা জেলা ট্রাক, ট্রাক্টর, কাভার্ডভ্যান, ট্যাংকলরি (দাহ্যপদার্থ বহনকারী ব্যতীত) শ্রমিক ইউনিয়ন (রেজি, নং- ৯৫৭)’-এর সভাপতি রাশেদুল ইসলাম রাশেদ’র নেতৃত্বে ৩০/৩৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ চক্র যারা বেআইনি জনতা গঠনপূর্বক বিনা কারণে ও বিনা উস্কানিতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঠিকানায় উল্লিখিত আমাদের ইউনিয়নের প্রধান কার্যালয়ে নগ্ন হামলা, ভাঙচুর ও জবর দখলের অপচেষ্টা চালায়। আমরা সংবাদ পাওয়ার পর তাৎক্ষণিকভাবে জেলা আইনশৃঙ্খলা কর্তৃপক্ষের প্রধান হিসেবে সম্মানীয় পুলিশ সুপারকে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের সহায়তায় হামলাকারীদের প্রতিরোধ এবং কার্যালয়টিকে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে রক্ষার ব্যবস্থা করেন। এছাড়া তাৎক্ষণিক সেনাবাহীনির টহল দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। উল্লেখ্য, হামলাকারীদের কথিত ইউনিয়নটি চুয়াডাঙ্গা জেলার পরিবহন খাতের অপর একটি ট্রেড ইউনিয়ন। যাকে আমরা আমাদের প্রতিপক্ষ সংগঠন বলে মনে করি না। তাই এটি সহজে অনুমেয় যে, কথিত ইউনিয়নের নামধারী চক্রটি কোনো গোষ্ঠীর অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়নে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ‘চুয়াডাঙ্গা আন্তঃজেলা ট্রাক ও ট্যাংকলরী শ্রমিক ইউনিয়ন’-এর প্রধান কার্যালয়ে বেআইনিভাবে হামলা ও জবর দখলের ঘৃণ্য অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়। যা দেশের ফৌজদারি আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। সংঘটিত ফৌজদারি অপরাধের পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের ট্রেড ইউনিয়নের কার্যনির্বাহী কমিটির প্রতিনিধি ও শত শত সাধারণ সদস্য বর্তমানে ক্ষুব্ধ, আতঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন। সংগত কারণে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এই অবস্থায় কর্তৃপক্ষ চিহ্নিত হামলাকারীদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনতে ব্যর্থ হলে চুয়াডাঙ্গার বিস্তৃত এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা উড়িয়ে দেয়া যায় না। এমন অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির উদ্ভব হলে তা কারো জন্য নিশ্চয় সুখকর হবে না এবং এর অনিবার্য পরিণতিতে পণ্য পরিবহন সেবা মারাত্মকভাবে বিঘিœত হবে। সংঘটিত ফৌজদারি অপরাধের পুনরাবৃত্তি রোধে চিহ্নিত অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা; ইউনিয়নের প্রধান কার্যালয় এবং সার্বক্ষণিক কর্তব্যরত নির্বাহী প্রতিনিধি ও কার্যালয়ে গমনাগমনকারী সাধারণ সদস্যদের যথাযথ নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বিনয়ের সাথে আবেদন জানানো হয়েছে।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.