চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণাকালে পৌর প্রশাসক নাগরিকদের প্রয়োজন : সম্ভাবনা ও চাহিদার ভিত্তিতেই বাজেট প্রণয়ন
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৭২ কোটি ৯৩ লাখ ২৪ হাজার ৮২৬ টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে পৌরসভা মিলনায়তনে এ বাজেট ঘোষণা করেন পৌর প্রশাসক ও চুয়াডাঙ্গার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার। বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘চুয়াডাঙ্গা পৌরবাসীর প্রয়োজন, সম্ভাবনা ও চাহিদার ভিত্তিতে এ বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। নাগরিক সেবার মানোন্নয়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে স্বচ্ছতা বজায় রাখার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে।’ ঘোষিত বাজেটে রাজস্ব খাতে আয় ধরা হয়েছে ১৩ কোটি ৮২ লাখ ১৯ হাজার ৯৭৮ টাকা এবং ব্যয় ১৩ কোটি ৬২ লাখ ১৯ হাজার ৯৭৮ টাকা। এতে রাজস্ব উদ্বৃত্ত দেখানো হয়েছে ২০ লাখ টাকা। উন্নয়ন খাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখা হয়েছে-উভয় খাতে আয় ও ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৬ কোটি ৯০ লাখ ৩৩ হাজার ৯২৯ টাকা। বাজেটে বিভিন্ন খাতভিত্তিক আয়-ব্যয়ের সম্ভাব্য হিসাবও উপস্থাপন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এম. সাইফুল্লাহ। বাজেট অধিবেশন পরিচালনা করেন পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা এস. এম. রেজাউল করিম। বিশেষ অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন: কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মাসুদুর রহমান সরকার, জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক সিদ্দিকা সোহেলী রশীদ, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দিল আরা চৌধুরী, সাবেক অধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমান, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শফিকুল ইসলাম পিটু, চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মনি, ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আসলাম হোসেন অর্ক ও জেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবীব প্রমুখ। পৌর বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মনির বক্তব্যে উঠে আসে বাস্তবায়নের গুরুত্ব। তিনি বলেন, ‘বাজেটে উন্নয়ন পরিকল্পনা যতই ভালো হোক, তা বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত না হলে কাক্সিক্ষত সুফল মিলবে না। নাগরিকদের মতামত বাজেট প্রক্রিয়ায় গুরুত্ব পেতে হবে। বাজেট যেন কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ না থাকে-বাস্তবে তার প্রতিফলন হোক, এটাই প্রত্যাশা।’ তিনি আরও বলেন, ‘পৌর এলাকার ড্রেনেজ সমস্যা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ও সড়ক সংস্কারকে অগ্রাধিকার দেয়া প্রয়োজন। শহরের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলে এখনও অনেক উন্নয়ন বাকি-সেদিকেও দৃষ্টি দিতে হবে।’ বক্তৃতার শেষে তিনি বর্তমান প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্রশংসা করে বলেন, ‘এমন স্বচ্ছতা আগে কখনো দেখা যায়নি ধন্যবাদ পৌর প্রশাসক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে।’ বাজেট-পরবর্তী আলোচনায় বক্তারা বলেন, এই বাজেট চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার উন্নয়নের একটি সম্ভাবনাময় রূপরেখা। তবে বাস্তবায়নে স্থানীয়দের সম্পৃক্ততা, সময়ানুবর্তিতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা জরুরি। তারা বলেন, পৌর এলাকার পানি নিষ্কাশন, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, রাস্তা মেরামত, পরিচ্ছন্নতা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, আলো ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে। নাগরিকদের মতামত ও প্রয়োজন বিবেচনায় নিয়ে প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের তাগিদ দেন বক্তারা। তারা আরও বলেন, অনুন্নত ও উপেক্ষিত ওয়ার্ডগুলোতেও সমান গুরুত্ব দিয়ে বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন: শহর সমন্বয় কমিটির সদস্য, পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.