স্টাফ রিপোর্টার : প্রথম স্ত্রীর করা যৌতুক (দেনমহর,) মামলায় গ্রেপ্তারকৃত চাকরীচ্যুত পুলিশের এসআই আতিকুর রহমান গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় চুয়াডাঙ্গা আমুলিয়া আদালতে সোপর্দ করা হয়। একজন অ্যাডভোকেট মারা যাওয়ার কারণে কোর্টে চলতেছিল কোর্ট রেফারেন্স। সে কারণে আসামি পক্ষের কোন উকিল জামিনের আবেদন না করায় আদালত সরাসরি আসামি আতিকুর রহমানকে কারাগারে পাঠিয়েছে।
উল্লেখ্য গতবুধবার বিকেল সাড়ে ৫টায় চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের একটি চৌকস টিম তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঝিনাইদহর কোটচাঁদপুর রেলওয়ে প্লাটফর্ম থেকে আতিকুর রহমানকে গ্রেফতার করে। আতিকুর রহমান ট্রেন যোগে খুলনা অভিমুখে যাচ্ছিলেন। চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার্স ইনচার্জ খালিদুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশের এস আই বাবলু খানের নেতৃত্বে একটি চৌকস পুলিশ টিম যৌতুক মামলার ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামি আতিকুর রহমান (তাহামুন) কে গ্রেফতার করে।
জানা গেছে, চাকুরীচ্যুত পুলিশের এসআই মো: আতিকুর রহমান( তাহামুন) ২০১৬ সালের ৩০ জুন পারিবারিকভাবে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সরোজগঞ্জ বসুভান্ডারদহের নুরুল ইসলামের কন্যা মোছাম্মদ নুরজাহান শেখের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। বিবাহের পর কিছুদিন যেতে না যেতেই বিভিন্ন ছুতো-নাতা ও যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী নুরজাহানকে নির্যাতন করতে থাকে। নির্যাতনের মাত্রা সইতে না পেরে নুরজাহান শেখ তার বাবাকে বিষয়টি জানাই। নুরজাহান শেখ এর বাবা একাধিকবার এ বিষয় নিয়ে আতিকুর রহমান ও তার পরিবারের সাথে বসে সমস্যার সমাধানের চেষ্টা করেন। কিন্তু সমাধান তো দূরের কথা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠে আতিকুর রহমান। আতিকুর রহমান পুলিশের চাকরীরত অবস্থায় বিউটি খাতুন (কনস্টেবল নং ৫০০) নামের এক মহিলা কনস্টেবলের সাথে পরকীয়া প্রেমের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়াই দ্বিতীয় বিবাহ করে। বিউটি চুয়াডাঙ্গা জীবননগরের যাদবপুর গ্রামের আব্দুল হামিদের মেয়ে। ২০১৯ সালে প্রথম স্ত্রী নুরজাহান শেখ এর বাবা নুরুল ইসলাম আতিকুর রহমানের বিরুদ্ধে যৌতুক মামলা দায়ের করেন। সে মামলায় চুয়াডাঙ্গা আমলী আদালত তাকে ১বছরের প্রদান করে। সে সময় আতিকুর মেহেরপুর জেলায় চাকরীরত ছিলেন। প্রথম স্ত্রীর অনুমতি ছাড়ায় দ্বিতীয় বিবাহ করায় আবারো তার বিরুদ্ধে কন্যার বাবা নুরুল ইসলাম মামলা করেন। এরপর প্রথম স্ত্রী নুরজাহান শেখ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বরাবর বিভাগীয় মামলার দরখাস্ত দেন। সেই মামলার তদন্তে দোষীসাবস্ত্য হয়ে ২০২২ সালে চাকুরীচ্যুত হয় এস আই আতিকুর রহমান। পরে দেনমহর মামলায় গতকাল বুধবার চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর রেলওয়েস্টেশনের প্লাটফর্ম থেকে চাকুরীচ্যুত এস আই আতিকুর রহমানকে গ্রেফতার করে। গতকাল সন্ধ্যায় তাকে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার কাস্টডিওতে রাখা হয়। আজ বৃহস্প্রতিবার চুয়াডাঙ্গা আদালতে সপর্দ করা হবে। নিশ্চিত করেন চুয়াডাঙ্গা থানার ওসি খালেদুর রহমান। উল্লেখ্য পুলিশের চাকুরীচ্যুত সাবেক এস আই আতিকুর রহমান (তাহামুন) চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অধীন সরোজগঞ্জ যুগীরহুদা গ্রামের কাচারী পাড়ার আবু বক্করের ছেলে।
পূর্ববর্তী পোস্ট
এছাড়া, আরও পড়ুনঃ
মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.