বিএনপিকে এত সহজে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেয়া যাবে না: মির্জা ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার: বিএনপিকে এত সহজে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার বিকালে রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে ‘তারেক রহমান: দ্য হোপ অব বাংলাদেশ’ নামে বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। বইটি সম্পাদনা করেন কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল। মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে বিএনপির বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, তার পেছনে রয়েছে একটি সুনির্দিষ্ট ও সুপরিকল্পিত চক্রান্ত। সেই চক্রান্তের লক্ষ্য হলো- বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করা এবং তারেক রহমানের নেতৃত্বকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া। তাকে খারাপ জায়গায় ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করা। তবে বিএনপিকে এত সহজে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেওয়া যাবে না। বিএনপি বারবার প্রমাণ করেছে, ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে জেগে উঠতে পারে। তারেক রহমানের সাধারণ দক্ষতাই তাকে নেতৃত্বে এনেছে এমনটা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এ নেতৃত্বটা এসেছে অনেক দিক দিয়ে। তারেক রহমানের নিজস্ব গুণ আছে। যে গুণগুলোর জন্য তিনি আজকে এ পর্যন্ত এসেছেন। আমি বেশ কিছুদিন একসঙ্গে ধরে কাজ করছি। তারেক রহমান দায়িত্ব পাওয়ার পরে অর্থাৎ ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) জেলে যাওয়ার পরে উনার (তারেক) সঙ্গে সরাসরি কাজ করছি। আমি দেখেছি, অসাধারণ একটা সাংগঠনিক দক্ষতা তার আছে। এটা খুব কম রাজনীতিবিদদের মধ্যে আছে। অসাধারণ। অতি অল্প সময়ের মধ্যে তিনি বিশাল একটা অংশকে সংগঠিত করে ফেলতে পারেন। অল্প সময়ের মধ্যে তিনি বাংলাদেশের গ্রামে, একেবারে ওয়ার্ডে পৌঁছে গেছেন। সে কারণে তিনি সংগঠিত করে ফেলতে পারেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপির বিশাল যুব ও ছাত্র সমাজ আছে। এটাকে সংগঠিত করতে হবে। বিএনপির রাজনীতিটা তাদের মাথার মধ্যে ঢুকানোর চেষ্টা করতে হবে। এটা আমাদেরকেই করতে হবে। আমরা গত সময়গুলোতে শুধু লড়াই করেছি। কিন্তু সেই লড়াইটাকে সমৃদ্ধ করবার জন্য যে জ্ঞানটা, সেটা কিন্তু আমরা অনেকে অর্জন করতে পারিনি। আজ তা না হলে যে কথাগুলো আমাদের শুনতে হচ্ছে, সেই কথাগুলো হয়ত শুনতে হতো না। ২০০২ সালে বেগম খালেদা জিয়ার চীন সফরের কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘ওই সফরে প্রধানমন্ত্রীর (সাবেক) সঙ্গে আমরাও যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। সেখানে প্রচ- শীত ছিল, ডিসেম্বর মাস বরফ পড়ছিল, বাইরে অনুষ্ঠান করা সম্ভব ছিল না। সেজন্য গ্রেট হলের ভেতরে ম্যাডামকে গার্ড অব অনার রিসিপশন দেওয়া হলো। ওই অনুষ্ঠানে গার্ড অব অনারের পরে ম্যাডাম চীনের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে আমরা যারা তার সঙ্গে গিয়েছিলাম তাদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। ওই পরিচয় পর্বে আমার মনে আছে আমার পাশেই ছিলেন আমান উল্লাহ আমান (চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা) তার পাশেই ছিলেন তারেক রহমান। যখন উনার সামনে গিয়ে চীনের প্রধানমন্ত্রীকে বললেন, মাই সান। প্রধানমন্ত্রী তার (তারেক রহমান) হাতটা শক্ত করে ধরে ঝাঁকি দিয়ে বললেন, কেরি দ্যা ফ্ল্যাগ অব ইউর ফাদার অ্যান্ড মাদার।’ বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ‘উনি (তারেক রহমান) নির্যাতন সহ্য করেছেন, শারীরিক নির্যাতন সহ্য করেছেন, নির্বাসিত হয়েছেন, একা থেকেছেন। এই যে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া সব কিছু মিলিয়ে তারপরেও তারেক রহমান মাথা নত করেননি। তিনি তার মায়ের মতোই। উনার মা যেমন মাথা নত করেননি, তারেক রহমান ও করেননি।’ বিএনপির সমর্থিত অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও ব্লগারদের বিগত আন্দোলনের তাদের ভূমিকার কথা স্মরণ করে সব সময়ে তাদের পাশে থাকার কথাও বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহর সভাপতিত্বে ও কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. জাহিদ উর রহমান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান উপদেষ্টা মাহদী আমিন, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেন্টাল অনুষদের ডিন সহযোগী অধ্যাপক সাখাওয়াত হোসেন সায়ন্থসহ বিএনপির মতাদর্শের অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট, ব্লগাররা বক্তব্য রাখেন।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More