জীবননগরের আন্দুলবাড়িয়ায় স্কুল ছাত্রীকে উত্যক্তের অভিযোগ সালিস বৈঠকে অতর্কিত হামলায় ৩জন আহত

স্টাফ রিপোটার: জীবননগরের আন্দুলবাড়িয়া বহুমুখী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে উত্যক্ত করার অপরাধে সালিস বৈঠকে উত্যক্তকারী অতর্কিত হামলা চালিয়ে ৩জনকে রক্তাক্ত জখম করে আহত করেছে। প্রকাশ্যদিবালোকে মহড়া দিয়ে এ হামলা চালিয়ে আহত করার ঘটনায় বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে বিদ্যালয় অ্যাসেম্বিলিতে এ হামলার ঘটনা ঘটে। প্রভাবশালী উত্যক্তকারীর ভাড়াটিয়া পেটুয়া বাহিনীর হামলায় আহত বিচারপ্রার্থী বাঁকা ইউনিয়নের আব্দুল মান্নানের ছেলে রমিজ উদিন (৪০), আবু তাহের আলীর ছেলে শাওন (৩৩) ও ওয়াজেদ আলীর ছেলে সাহেব আলী (৪২) বলে জানা গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মহড়া দেয়ার ঘটনা ভাইরাল হয়ে পড়লে এলাকায় ঘটনাটি ব্যাপক আলোচিত হয়ে উঠে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রত্যক্ষদর্শীগণ সূত্রে জানা গেছে, আন্দুলবাড়িয়া বহুমুখী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির এক ছাত্রী উপজেলার বাঁকা ইউনিয়নের মোক্তারপুর গ্রাম থেকে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করেন। কুলতলা গ্রামের নুর আলমের ছেলে বখাটে রাফি (২২) ওই শিক্ষার্থীকে যাতায়াতের পথে উত্যক্ত করে আসছিল। শিক্ষার্থী এ উত্যক্তর ঘটনাটি অভিভাবকে জানালে তার অভিভাবক ছেলেটিকে উত্যক্ত না করার জন্য নিষেধ করেন। এ নিষেধ উপেক্ষা করে ফের উত্যক্ত করায় গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে স্কুল অ্যাসেম্বিলিতে উভয় পক্ষকে নিয়ে সালিস বৈঠকের আয়োজন করা হয়। এ বৈঠকে শুনানিকালে উভয় পক্ষের মধ্যে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে উত্যক্তকারীর পেটুয়া বাহিনী অতর্কিত লাঠিসোঁটা নিয়ে ছাত্রীর অভিভাবক ও সঙ্গীয় লোকজনের ওপর হামলা চালায়। এ অতর্কিত হামলায় ছাত্রীর চাচা রমিজ উদ্দিন, শাওন ও সাহেব আলীর মাথায়, চোখ ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম হয়েছে। আহতরা স্থানীয় চিকিৎসকের নিকট প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বর্তমানে এ ঘটনায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলী হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, ১২টার দিকে একদল লোক হঠাৎ বিদ্যালয়ের অ্যাসেম্বিলিতে প্রবেশ করেন। শিক্ষার্থী উত্যক্ত করার ঘটনায় সালিস সভার কথা শুনে বিষয়টি স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, পুলিশ ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবগত করা হয়। এরই মধ্যে হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আমি কিংকর্তব্য বিমুট হয়ে পড়ি। তবে এ সম্পর্কে এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে অবশ্য আইনহত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রী অভিভাবক এ প্রতিবেদককে বলেন, আমার মেয়ে স্কুলে যাতায়াতের পথে কুলতলা গ্রামের নুর আলমের ছেলে রাফি উত্যক্ত করে আসছিল। তাকে নিষেধ করার পর উপেক্ষা করে ফের গতকাল উত্যক্ত করায় স্কুলের মধ্যে সালিস বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সালিস বৈঠকে উভায় পক্ষের শুনানি করাকালে কথাকাটাকাটির এক পর্যায়ে রাফির লোকজন অতর্কিত হামলা চালিয়ে আমার দুই ভাইসহ সঙ্গীয় একজনকে বেধড়ক পিটিয়ে জখম করে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমার মেয়ের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়া টিসি নিয়ে অন্যত্রে ভর্তি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের অ্যাডহক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আজিম খান বলেন, আমি ব্যবসায়ী কাজে ঈশ্বরদী রয়েছি। শুনেছি ছাত্রী উত্যক্ত করার ঘটনায় উভায় পক্ষ সমন্বয় করেন। পরবর্তীতে ফের উত্যক্ত করার ঘটনায় সালিস বৈঠকে হাঙ্গামার ঘটনা ঘটেছে। এ সর্ম্পকে আমি এখনো পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। সাহাপুর ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই মেহেদী হাসান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। প্রধান শিক্ষকের নিকট ঘটনাটি শুনেছি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More