আবু সাঈদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ

স্টাফ রিপোর্টার:বর্তমানে ছাত্র-জনতার সমাবেশ বা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের যেকোনো রাজনৈতিক দলের মিছিলের অপরিহার্য শ্লোগান হলো ‘আবু সাঈদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’। অনেকেই জানেন না, এই শ্লোগানটি কীভাবে তৈরি হলো। আর কীভাবেই বা ছড়িয়ে গেলো সবখানে।

 

মূলত লাইন দু’টি সংগীতশিল্পী, সাংবাদিক ও লেখক আমিরুল মোমেনীন মানিকের একটি গান থেকে নেয়া। তিনি জানিয়েছেন, ২০২৪-এর জুলাইয়ে অধিকার আদায়ে রাজপথে নেমে আসে সর্বস্তরের ছাত্র-জনতা। বহু মানুষের রক্ত, অঙ্গহানি, পঙ্গুত্বের বিনিময়ে ওই বছরের ৫ আগস্ট ঘটে বিরল এক গণঅভ্যুত্থান। কিন্ত অভ্যুত্থানকে নস্যাৎ করতে নানামুখী আন্দোলনের নামে চলতে থাকে ফ্যাসিবাদী চক্রান্ত।

 

মানিক বলেন, ‘জুলাইয়ের আন্দোলন যে শেষ হয়নি, সেটা উপলব্ধি করে ১৬ আগস্ট ২০২৪-এ, লিখি ‘আবু সাঈদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’। এই দুই লাইনকে সামনে রেখে পুরো একটি গান তৈরি করে ফেলি। কথার সঙ্গে সুরও প্রস্তুত হয়ে যায়।  এ সময় হঠাৎ মাথায় আরেকটি আইডিয়া আসে। এর মধ্যে ২৫  আগস্ট সচিবালয়ের সামনে আনসাররা বিদ্রোহ করে। তখন ভাবলাম, শুধু গান নয়, শ্লোগান আকারে লাইন দুটোকে ছড়িয়ে দেওয়া দরকার। ৫ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে গণঅভ্যুত্থানের ১ মাস উপলক্ষে ‘শহিদি মার্চ’ এ প্রথমবারের মতো ছাত্ররা এ শ্লোগান দেন।’

 

এরপরই মূলত গানের এই লাইন দুটি শ্লোগান হিসাবে ছড়িয়ে পড়ে। এভাবেই জনপ্রিয় হয়ে উঠে দুটো অনুপ্রেরণাদায়ী লাইন ‘আবু সাঈদ-মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ’।

 

শ্লোগানটি কীভাবে গান হিসেবেও জনপ্রিয় হয়ে উঠল? এ প্রসঙ্গে আমিরুল মোমেনীন মানিক বলেন, গান লেখা হয় ১৬ আগস্ট ২০২৪-এ। ১৯ অক্টোবর গানটি পরিবেশন করি ঢাকা কলেজের অডিটোরিয়ামে ‘কালের ধ্বনি’ আয়োজিত ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত কবি লেখকদের গল্প’ শিরোনামের অনুষ্ঠানে। উপস্থিত সবাই গানটি শুনে আপ্লুত হন। গান শেষ হবার পর শিক্ষার্থীরা গানের শুরুর দুটি লাইনকে শ্লোগান হিসেবে লুফে নেয়। এরপর, খুব দ্রুত লাইন দুটো মানুষের মুখে মুখে ছড়িয়ে পড়ে।

 

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে আমিরুল মোমেনীন মানিক মূলত জীবনমুখী গান দিয়ে আলোচনায় আসেন। প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তীর সঙ্গে তার গাওয়া ‘আয় ভোর’, ‘নীল পরকীয়া’, ‘সকাল হবে কি’ শিরোনামের গানগুলো জনপ্রিয়তা পায়। লেখক হিসেবে ২০১২ সালে বাংলা একাডেমির একুশে বইমেলায় তার লেখা ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় স্টুপিড শিক্ষক’ বইটি বেস্টসেলার হয়। সাংবাদিকতায় আমিরুল মোমেনীন মানিক ২০১১ সালে পেয়েছেন সম্মানজনক ‘ইউনেস্কো ক্লাব জার্নালিজম অ্যাওয়ার্ড’। বর্তমানে মানিক হামদর্দ বাংলাদেশের পরিচালক তথ্য ও গণসংযোগ হিসেবে কর্মরত।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More