কোটচাঁদপুরের কমিউনিটি ক্লিনিকে ওষুধ নেই : মেলে শুধু পরামর্শ চরম ভোগান্তিতে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসা লক্ষাধিক মানুষ

কোটচাঁদপুর প্রতিনিধি: চারমাস ধরে ওষুধ সরবরাহ নেই ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোয়। চলছে শুধু রক্তচাপ পরিমাপ আর পরামর্শ দেয়ার কার্যক্রম। এতে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসা উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে। তারা এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চায়। সিভিল সার্জন অবশ্য আশার বাণী শুনিয়েছেন। তিনি বলেছেন, দ্রুত এই সংকট কেটে যাবে। জানা যায়, কোটচাঁদপুর উপজেলায় রয়েছে পাঁচ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা। এই উপজেলার বাসিন্দা এক লাখ ৫৬ হাজার ৫৪৫ জন। এর মধ্যে এক লাখ ৯ হাজার ১৮১ জনের বসবাস গ্রামে। তাদের বেশির ভাগ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে থাকে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোয়। উপজেলায় ১৬টি কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে। চার মাস ধরে এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নেই কোনো ওষুধ সরবরাহ। এদিকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার এসব প্রতিষ্ঠানে ওষুধ না থাকায় সীমাহীন ভোগান্তি হয় খেটে খাওয়া লোকজনের। কোটচাঁদপুরের গুড়পাড়া গ্রামের জুলেখা বেগম (৬০) এসেছিলেন গ্যাস্ট্রিক, অ্যালার্জি ও মাথাব্যথার বড়ি নিতে। না পেয়ে ফিরছেন কৃমিনাশক ও আয়রনের বড়ি নিয়ে। তিনি বলেন, ‘আমাদের ছোটখাটো সমস্যা হলে এই ক্লিনিকে আসি। এখান থেকে ওষুধ নিয়ে খেলে ভালো হয়ে যায়। রোজার পর থেকে কোনো ওষুধ পাচ্ছি না। আজ এসেছিলাম ওষুধ এসেছে কি না খোঁজ নিতে। না পেয়ে আয়রনের বড়ি আর কৃমিনাশক বড়ি নিয়ে যাচ্ছি।’ কুল্লাগাছা আসাননগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির তিন ছাত্রী লামিয়া খাতুন, জাকিয়া খাতুন ও মোছা আরবি খাতুন এসেছিল কুল্লাগাছা আসাননগর কমিউনিটি ক্লিনিকে ওষুধ নিতে। এ সময় দায়িত্বরত কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) মনিরুজ্জামান ওষুধ নেই বললে তারা খালি হাতে ফিরে যায়। একই চিত্র অন্যান্য কমিউনিটি ক্লিনিকে। মনিরুজ্জামান বলেন, গত এপ্রিলের পর থেকে ওষুধের সরবরাহ নেই। ক্লিনিক চলছে স্বাস্থ্যশিক্ষা, রক্তচাপ মাপা আর পরামর্শ দিয়ে। তাই সেবা নিতে আসা মানুষ রয়েছে চরম ভোগান্তিতে। তিনি বলেন, ‘কয়েক দিন আগে হাসপাতালে খোঁজ করেছিলাম। তারা ওষুধ আসেনি বলে জানিয়েছে।’
ফুলবাড়ি কমিউনিটি ক্লিনিকের দায়িত্বরত কর্মকর্তা জেসমিন আরা বলেন, ‘ওষুধ না থাকায় রোগীর চাপ কমছে। ওষুধ থাকাকালে প্রতিদিন ৭০-৮০ জন রোগী আসত। কোনো কোনো দিন ১০০ জনের বেশি আসত। এখন ১৫-২০ জনে দাঁড়িয়েছে। এরপরও প্রয়োজনীয় ওষুধ দিতে পারি না। কবে এই অবস্থার অবসান ঘটবে জানি না।’ ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন কামরুজ্জামান বলেন, ‘আমার জানামতে, কোনো কোনো জায়গায় কিছু ওষুধ রয়েছে। আবার কোথাও একেবারেই নেই। তবে খুব দ্রুত অবস্থার উন্নতি ঘটবে।’

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More