অবশেষে পরিবারের কাছে ফিরলেন মুজিবুর

কর্মস্থলে এক দুর্ঘটনায় মাথায় গুরুতর আঘাত পান মুজিবুর রহমান। প্রচণ্ড রক্তক্ষরণে হারিয়ে ফেলেন স্বাভাবিক চলাফেরার ক্ষমতা। টানা ৯ মাস কাটান ট্রমায়, হাসপাতালের বিছানায়। এ সময় পরিবার থেকেও কেউ তার কাছে যেতে পারেনি, শুধু অপেক্ষা আর উদ্বেগে দিন কেটেছে স্ত্রী-সন্তান ও বৃদ্ধ বাবা-মায়ের।

পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম সদস্যের এমন পরিণতিতে স্তব্ধ হয়ে যায় গোটা পরিবার। গ্রামের বাড়িতে প্রতিদিনই আলোচনায় থাকত একটাই প্রশ্ন ‘মুজিবুরকে কি আর ফিরে পাওয়া যাবে?’ শেষমেশ পরিবার বাংলাদেশ হাইকমিশনের কাছে দেশে ফেরানোর আবেদন জানায়।

হাইকমিশন মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে গ্রহণ করে এবং শুরু হয় দীর্ঘ প্রক্রিয়া। হাসপাতাল, মালয়েশিয়ার বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তর, এয়ারলাইন্স—সব জায়গায় সমন্বয় করে এগিয়ে আসে বাংলাদেশ হাইকমিশন। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের আওতায় ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড আর্থিক সহায়তা দেয়।

অবশেষে সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দেশে ফিরেছেন মুজিবুর রহমান। বিমানে ওঠার আগেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়ে, যেন এক অসহায় মানুষের দীর্ঘ যন্ত্রণার অবসান হলো।

ফেরার পর মুজিবুরের পরিবারের চোখে জল আর মুখে কৃতজ্ঞতা। এক আত্মীয় বললেন, আমরা ভেবেছিলাম হয়তো আর কোনোদিন তাকে ফিরিয়ে আনতে পারব না। হাইকমিশন ও সরকারের সহযোগিতায় আজ তাকে আমাদের কাছে ফিরে পেয়েছি, এ আমাদের জন্য পরম স্বস্তি।’

বাংলাদেশ হাইকমিশন তাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে বিষয়টি জানিয়ে সহযোগীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। তারা বলেছে, ‘মানবিক সহায়তায় সবসময় পাশে থাকতে হাইকমিশন বদ্ধপরিকর।’

বিদেশে রোজগারের স্বপ্ন ভেঙে গেলেও মুজিবুর রহমান আজ পরিবারের কাছে ফিরে এসেছেন। হয়তো তিনি আর কখনো আগের মতো হাঁটতে পারবেন না, কিন্তু ভালোবাসার মানুষের সান্নিধ্যে ফিরে পাওয়া তার জন্য নতুন জীবনের শুরু।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More