ভ্রান্ত পরিবেশ ছাড়পত্র কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়: রিজওয়ানা

পরিবেশ সুরক্ষায় কঠোর আইন প্রয়োগ ও ছাড়পত্র প্রদানে অনিয়মের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ ও আইন প্রয়োগে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ভ্রান্ত পরিবেশ ছাড়পত্র কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

শনিবার ‘স্ট্রেন্থিনিং এনভায়রনমেন্টাল রেগুলেটারি অ্যান্ড অ্যানফোর্সমেন্ট ক্যাপাসিটি ফর এ সাসটেইনেবল বাংলাদেশ’ শীর্ষক তিন দিনব্যাপী প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

গাজীপুরের শ্রীপুরে বিশ্বব্যাংক এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

উপদেষ্টা বলেন, আইন প্রয়োগ মানে শুধু জরিমানা নয়। এতে স্বচ্ছতা, বিকল্প ব্যবস্থা ও জনগণের সম্পৃক্ততা থাকতে হবে।

ডাইং কারখানা, সিমেন্ট কারখানা ও ইটভাটার মতো প্রধান দূষণ উৎসকে অগ্রাধিকার দিয়ে শক্তিশালী পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।

তিনি বলেন, সবচেয়ে দূষণকারী শিল্পগুলোকে চিহ্নিত করে বাজেট ও পরিকল্পনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে। দূষণকারীদের নাম প্রকাশ্যে আনুন। তথ্য উন্মুক্ত করলে জনগণ নিজেরাই রাজনৈতিক চাপ মোকাবিলায় সহায়ক হবে।

বন্যা প্রবাহ এলাকা বা পরিবেশগতভাবে সংবেদনশীল স্থানে বর্জ্য ফেলার কেন্দ্র স্থাপনের জন্য ছাড়পত্র দেওয়ার কঠোর সমালোচনা করে পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, এ ধরনের ছাড়পত্র অবৈধ ও দায়িত্বজ্ঞানহীন। রাজনৈতিক চাপ থাকলেও আপত্তি জানাতে হবে। দায়িত্ব পালন করতে না পারলে বদলি হোন, কিন্তু পরিবেশের সঙ্গে আপস করবেন না।

উপদেষ্টা পরিবেশ ছাড়পত্র প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সব লাল ক্যাটাগরির শিল্পের পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন (ইআইএ) প্রতিবেদন পরিবেশ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে প্রকাশ এবং জনগণের মতামত বিবেচনা করার আহ্বান জানান।

তিনি একটি দূষণকারী সিরামিক কারখানাকে জাতীয় পুরস্কার দেওয়ার উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, দূষণকারীদের শাস্তি দিতে হবে, পুরস্কৃত নয়। এছাড়া অভিযোগ নিষ্পত্তি ডিজিটালাইজেশন, অভিযোগ ট্র্যাক করার জন্য মোবাইল অ্যাপ চালু এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন উপদেষ্টা।

অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের ডিভিশন ডিরেক্টর জ্যাঁ পেসম, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যাদুঘরের সাবেক মহাপরিচালক মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফিন, বেস্ট প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক একেএম রফিকুল ইসলাম এবং বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের পরিবেশ বিশেষজ্ঞ বুশরা নিশাত বক্তব্য দেন।

প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী সারা দেশ থেকে আসা পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের হাতে সনদপত্র তুলে দিয়ে উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান তাদের প্রতি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পরিবেশ সুরক্ষায় অঙ্গীকারবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More