দর্শনায় চোর সন্দেহে গণপিটুনির শিকার যুবক ফিরলো পরিবারের কাছে

দর্শনা অফিস:দর্শনায় মোটরসাইকেল চোর সন্দেহে গণপিটুনির শিকার সেই যুবক ইয়ামিনকে মানবিক উদ্যোগে তার বাবা-মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিল দর্শনা থানা পুলিশ।

সোমবার দুপুর ১২টার দিকে দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শহীদ তিতুমীর ইয়ামিনকে তার মা-বাবার হাতে তুলে দেন।

ইয়ামিনের বাবা জিলু মিয়া ও মা সাহেদা খাতুন জানান, পাঁচ বছর আগে বিদ্যুৎ মিস্ত্রির কাজ করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ইয়ামিনের মানসিক ভারসাম্য নষ্ট হয়। এরপর থেকে সে প্রায়ই বাড়ি থেকে চলে যেত এবং ফিরে আসতে পারত না। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর থানার চান্দুরা ইউনিয়নের ইব্রাহিমপুর গ্রামের বাসিন্দা। এর আগে ৪-৫ বার নিখোঁজ হলেও পরিবার তাকে খুঁজে ফিরিয়ে এনেছে। এবারও ২২ দিন আগে নিখোঁজ হওয়ার পর গত রবিবার দর্শনা রেলগেট এলাকায় একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে নাড়াচাড়া করার সময় স্থানীয়রা তাকে চোর সন্দেহে গণপিটুনি দেয়।

খবর পেয়ে দর্শনা থানা পুলিশ ইয়ামিনকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে সে ভিন্ন ভিন্ন নাম ঠিকানা বলায় পুলিশ বুঝতে পারে, সে মানসিক ভারসাম্যহীন। পরে তার হাতের বাঁধন খুলে থানায় রাখে এবং খাবার দেয়।

মানবিক উদ্যোগে ওসি মোহাম্মদ শহীদ তিতুমীর বিভিন্ন কৌশলে ইয়ামিনের কাছ থেকে অস্পষ্ট নাম–ঠিকানা জেনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থানার পুলিশ ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এভাবে ইয়ামিনের বাবা-মায়ের সন্ধান পাওয়া যায়। পরে তারা চট্টগ্রাম থেকে মামুন পরিবহনে করে সোমবার দুপুরে দর্শনায় পৌঁছান। মামুন পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার আব্দুল আলিম তাদের থানায় নিয়ে আসেন।

ওসি শহীদ তিতুমীর ইয়ামিন ও তার বাবা-মাকে দুপুরের খাবার খাওয়ান এবং সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে ইয়ামিনকে বাবা-মায়ের হাতে তুলে দেন। পরে মামুন পরিবহনের মালিকের সঙ্গে কথা বলে তাদের বিনা ভাড়ায় চট্টগ্রামে পৌঁছানোর ব্যবস্থাও করেন।

উল্লেখ্য, পারকৃষ্ণপুর গ্রামের আতিয়ার রহমানের ছেলে মাসুদ রানা তার টিভিএস মোটরসাইকেল (নং: চুয়াডাঙ্গা হ-১৫-৩৭০৩) চুরির চেষ্টা করার অভিযোগে ইয়ামিনকে থানায় সোপর্দ করেন। তখন ইয়ামিন নিজের পরিচয় বারবার বদলাচ্ছিল কখনো বলছিল ইয়ামিন মিয়া, পিতার নাম জিলু বা ঝিরু মিয়া, ঠিকানা কখনো চান্দুরা, কখনো ঢাকা গাজীপুর, আবার কখনো শেরপুর।

চুয়াডাঙ্গা জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কাছে হেফাজতের প্রস্তাব দিয়েও সাড়া না পেয়ে ওসি শহীদ তিতুমীর নিজেই খোঁজ নিয়ে ইয়ামিনকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন। পুলিশের এ মানবিক কর্মকাণ্ডের জন্য স্থানীয় জনগণ ও সাংবাদিকরা ওসি মোহাম্মদ শহীদ তিতুমীরের প্রশংসা করেছেন

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More