চুয়াডাঙ্গায় জাতীয় হিন্দু মহাজোটের পুনর্মিলনী, শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভায় সংরক্ষিত আসন দাবি

স্টাফ রিপোর্টার:বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার উদ্যোগে শারদীয় দুর্গোৎসব ২০২৫ উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১১টায় চুয়াডাঙ্গা শহরের শ্রী শ্রী সত্য নারায়ণ মন্দির প্রাঙ্গণে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত নেতৃবৃন্দ, সুধীজন ও ধর্মীয় ব্যক্তিত্বরা অংশগ্রহণ করেন ও পরে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় মন্দির প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব অ্যাডভোকেট ড. গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক। তিনি বাংলাদেশের রাজনীতিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের অবস্থান নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন “বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলো যে যখন ক্ষমতায় এসেছে, আমাদেরকে খাঁচায় বন্দী করে তাদের পারপাস সার্ভ করে। এতদিন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল তারা আমাদের সবচাইতে বেশি ক্ষতি করেছে। আমরা আর কোনো দলের লেজুড়বৃত্তি করতে চাই না।”

তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদে হিন্দু সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষিত আসন করে দেওয়ার দাবি জানান।
ড. প্রামাণিক আরও উল্লেখ করেন, “০৫ আগস্টের আগে যেভাবে চাঁদাবাজি টেন্ডারবাজি জমি দখলসহ নানা অপকর্ম ঘটিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার ও নেতৃবৃন্দ, আমরা ভেবেছিলাম ০৫ আগস্টের পর আমরা নতুনভাবে সনাতন ধর্মলম্বীসহ দেশের জনগণ স্বাধীনভাবে চলতে পারব। কিন্তু আসলে তার বিপরীত হয়েছে। আগেও চাঁদাবাজি, হামলাসহ বিভিন্ন নির্যাতন করা হয়েছে, এখনো ০৫ আগস্টের পর এমনটাই হচ্ছে। তাই আমরা চাই আগামী সংসদ নির্বাচনে জাতীয় সংসদে আমাদের জন্য সংরক্ষিত আসন।”
বক্তাদের কণ্ঠে সম্প্রীতি ও অধিকারের আহ্বান
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা. হেমন্ত কুমার দাস, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট শুভ মজুমদার,
চুয়াডাঙ্গা চেম্বার অব কমার্স এর পরিচালক শ্রী কিশোর কুমার কুন্ডু, চুয়াডাঙ্গার বিশিষ্ট শিল্পপতি, শ্রী উমা শংকর আগরওয়ালা,
সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার আহ্বায়ক স্বপন চক্রবর্তী।
বক্তারা জোর দিয়ে বলেন “শারদীয় দুর্গোৎসব শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়; এটি বাংলাদেশের হাজার বছরের সংস্কৃতি, সামাজিক সম্প্রীতি ও পারস্পরিক সহাবস্থানের প্রতীক।”
তাঁরা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমাজে শান্তি, ভ্রাতৃত্ব ও মানবিক মূল্যবোধ বজায় রাখার আহ্বান জানান। এছাড়া, হিন্দু সম্প্রদায়ের ন্যায়সংগত অধিকার, ধর্মীয় নিরাপত্তা ও উৎসবের সময় নির্বিঘ্ন পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রশাসন এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আরও সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন বক্তারা।
দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানে জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন মন্দিরের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। অনুষ্ঠানের শুরুতে গীতাপাঠ করেন জেলা শাখার আহ্বায়ক স্বপন চক্রবর্তী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন সদস্য সচিব চির কুমার সাহা (কনক)।

এছাড়া, আরও পড়ুনঃ

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.

This website uses cookies to improve your experience. We'll assume you're ok with this, but you can opt-out if you wish. Accept Read More