অবৈধ পারপারে ঘটছে করোনার বিস্তার

গত ৬ মাসে মহেশপুর সীমান্তে আটক ৫ শতাধিক

মহেশপুর প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের মহেশপুর সীমান্তে অবৈধ পারাপারই করোন বিস্তারের মূল কারণ, ঝরে গেছে ২০টি প্রাণ। গত ৬ মাসে এ সীমান্তে করোনা রোগী ও দালালসহ ৫০৮ নারী পুরুষ ৫৮ বিজিবির হাতে আটক হয়েছেন। দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হলে মহেশপুর সীমান্তে অবৈধ পারাপার বেড়ে যায়। পার্শ্ববর্তী যশোর, সাতক্ষীরা জেলার সীমান্তে প্রশাসনের অভিযান জোরালো হলে দালাল চক্র নিস্ক্রিয় হয়ে পড়ে। এ সময় মহেশপুর দালাল সিন্ডিকেট সক্রিয় অবস্থানে থাকলে উভয় দেশ থেকে অবৈধ পারাপার বৃদ্ধি পায়।
বিজিবি ও অন্যান্য সূত্র থেকে প্রকাশ, গত ৬ মাসে ভারত থেকে ১৬০ জন নারী-পুুরুষ আসার পথে এবং ৩৪৪ ব্যক্তি যাওয়ার পথে বিজিবির হাতে আটক হয়েছেন। এ সময় ৪ দালালও আটক হয়। আটকৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পাসপোর্ট আইনে মহেশপুর থানায় মামলা হয়। ভারত থেকে আসা ব্যক্তিদের ১৪ দিনের বাধ্যতামূলক হোমকোয়ারেন্টাইনে রাখা হয় ঝিনাইদহ পিটিআই স্কুলে ও মহেশপুর মহিলা কলেজে। এ সকল ব্যক্তিদের করোনা পরীক্ষা করে একাধিক ব্যক্তির শরীরে পজেটিভ রিপোর্ট আসে। এরপর থেকে মহেশপুর সীমান্তবর্তী অঞ্চলে করোনা রোগী বৃদ্ধি পেতে থাকে। এক পর্যায়ে ভারতীয় ভেরিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ে। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে উপজেলা প্রশাসনের ইউএনওসহ অনেকেই আক্রান্ত হয়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা হাসিবুস সাত্তার জানান, সীমান্তের অবৈধ পারাপারই এ অঞ্চলে করোনা বিস্তারের মূল কারণ। মহেশপুর ৫৮ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্ণেল কামরুল আহসান বলেন, এ সীমান্ত দিয়ে যারা পার হয় তার সীমিত সংখ্যক মানুষকে আমরা আটক করতে সক্ষম হই। দালালদের মাধ্যমে অনেকেই পার হয়ে যায়। সীমান্তে বিজিবি কঠোর অবস্থানে থাকলেও অনেক সময় নারীরা দালাল কর্তৃক নির্যাতনসহ লুটপাটের স্বীকার হয়। এ বিষয়ে মহেশপুর থানায় মানবপাচার ও ধর্ষণের চেষ্টা অভিযোগে মামলাও হয়েছে। এ বিষয়ে বিভিন্ন সূত্রে ও ভিকটিমদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, দালালরা নারীদেরকে রাতের আঁধারে ছত্রভঙ্গ করে তাদের ওপর পাশাবিক নির্যাতন চালায়। কিন্তু মুখ খুলে আইনের মুখোমুখি হতে চায়না। যার কারণে দালালরা পার পেয়ে যায়। বাঘাডাঙ্গা গ্রামের ঝড়– ম-লের ছেলে দালাল সিন্ডিকেটের প্রধান সাইফুল সম্প্রতি র‌্যাবের হাতে আটক হলেও ২ সপ্তাহের মধ্যে জামিন পেয়ে সক্রিয় হয়ে উঠেছে। মহেশপুর থানার অফিসার ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম জানান, এ সীমান্তে আটককৃতদের মধ্যে ১৮জন এখনও মহেশপুর মহিলা কলেজে হোমকোয়ারেন্টাইনে আছে এবং পাসপোর্ট আইনে মামলা ২ শতাধিক। একটি বেসরকারি মানবপাচার প্রতিরোধ সংস্থার প্রতিনিধি রোমানা আফরোজ জানায়, সীমান্তে আটককৃত নারীরা দালালদের দ্বারা নির্যাতিত হয় এবং এর মধ্যে অনেক পাচারের ভিকটিম রয়েছে যা নির্ণয় করা হয়নি। সকলকেই আসামি হিসেবে কোর্টে চালান দেয়া হয়।

Comments (0)
Add Comment