কলাগাছ এখন সবুজ সোনা : সুতার দাম নিয়ে সঙ্কিত

দামুড়হুদা অফিস: কলাগাছ দিয়ে তৈরী হচ্ছে আঁশযুক্ত সুতা। দেশী প্রযুক্তিতে তৈরী করা বিদ্যুৎ চালিত মেশিন দিয়ে এই সুতা তৈরী করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে সুতা তৈরী করে মজুদ করছে তরুণ দুই উদ্যোক্তা।
কলাগাছের কলা কেটে নেয়ার পর কলা গাছটি নিজের জায়গায় বেড়ে ওঠা স্থানেই তাকে পঁচতে হতো। না হয় জমির মালিক ওই গাছটিকে কেটে সরিয়ে ফেলে দিতো। এখন দেশী প্রযুক্তিতে তৈরী মেশিন দিয়ে কলা গাছের খোলস ছাড়িয়ে তৈরী হচ্ছে সুতা। দামুড়হুদা উপজেলার দৈউলী গ্রামের আবু সাঈদ (২৫) ও তার বন্ধু একই উপজেলার পাটাচোরা গ্রামের সাইফুল ইসলাম (২৬) দুজনেই পরামর্শে বগুড়া থেকে এই মেশিন কিনে এনেছেন। পাটাচোরা গ্রামে বসানো হয়েছে ওই মেশিন। গত চার দিন ধরে কলাগাছ দিয়ে সুতা তৈরী করছেন তারা। একদিনে ১৫-২০ কেজি করে সুতা তৈরী করা হচ্ছে। তারা মাঠ থেকে নিয়মিত পরিত্যক্ত এসব কলাগাছ ইঞ্জিনচালিত পাওয়ারট্রিলারযোগে বাড়ি নিয়ে আসছেন। প্রতিটি কলাগাছের দুইদিকের অংশ কেটে ফেলে খোলস বের করে মেশিনে দেয়া হচ্ছে। মেশিনের মধ্যে থেকে বের হয়ে আসছে আশযুক্ত সুতা। এই সুতা রোদে শুকানো হচ্ছে। শুকানোর পর এই সুতার রং হচ্ছে সোনালী।
সাঈদ ও সাইফুল জানান, লাভের আশায় এই মেশিন বগুড়া থেকে কিনে এনেছি। সুতাও তৈরী করছি। বাজার দর নিয়ে আমরা সঙ্কিত। এই সুতার নির্দিষ্ট কোনো বাজার দর নেই। যারা এই সুতা ক্রয় করে তারাই দাম বেধে দেয়। তবে তারা যে দাম বেধে দেয় তাতে করে লাভ করা কঠিন হয়ে পড়বে। এরপরও সুতা তৈরী অব্যাহত রেখেছি। কলাগাছের বজ্রগুলো জৈব সার হিসেবে ব্যবহারের জন্য আলাদা করে রাখা হচ্ছে। সেই সাথে কলাগাছের পানিও বিক্রি হবে বলে সেগুলো আলাদা করে সংরক্ষণ করছি। তারা জানান, এই সুতা পরিবেশবান্ধব, বিদেশে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ইতোমধ্যে বিদেশি ক্রেতারা এসব সুতা বাংলাদেশ থেকে কিনে নিয়ে যাচ্ছে। এর দাম কতো আমরা জানতে পারছি না। বাজার দর ভালো পেলে আমরা মেশিন আরো একটি নিয়ে আসবো।
কলাগাছ দিয়ে তৈরীকৃত সুতার বাজারদর ঠিক করা, পরিত্যাক্ত বজ্র জৈব সার হিসেবে ব্যবহারের উপযোগী করা। স্বল্প সুদে এসব তরুণ উদ্যাক্তাদের ঋণের ব্যবস্থা করা হলে এটি টিকিয়ে রাখা যাবে। সেই সাথে বিদেশে সুতা রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা যাবে।

 

Comments (0)
Add Comment