খাঁটি সরিষার তেল সরবরাহ করতে সরিষা আর ঘানি নিয়ে হাজির হচ্ছে রুপসী বাংলাদেশ!

জীবননগর ব্যুরো: খলনায়ক আমজাদ খানের খুবই চায়ের নেশা ছিলো। হিন্দি সিনেমার ভিলেন আমজাদ খানের কথা বলছি। প্রতিদিন সুটিং শেষে রাতে বাড়ি ফেরার পথে বোম্বে সিনেপাড়ায় অবস্থিত কৃষ্ণের চায়ের দোকান হতে এক কাপ দুধের চা খেয়ে তারপর বাড়ি ফিরতেন। সেদিন সুটিং শেষ করতে রাত অনেক গভীর হয়ে গেছে। যথারীতি সুটিং শেষে মধ্যরাতে চা খেতে আমজাদ খান চায়ের দোকানে হাজির। কৃষ্ণ ভয়ে ভয়ে বললেন, স্যার দুধ নেই শেষ হয়ে গেছে। এ কথা শুনে আমজাদ খান বেশ মর্মাহত হলেন। তার চায়ের নেশা আরও বেড়ে গেলো। রাগে গর গর করতে করতে তিনি চায়ের দোকান থেকে উঠে বাড়ি চলে গেলেন। আমজাদ খানের এভাবে চলা যাওয়া দেখে দোকানী কৃষ্ণ বেশ ভয় পেলেন। এরপরে আসা যাক পরেন দিনের ঘটনায়। চায়ের দোকানী কৃষ্ণ রাতে হঠাৎ খেলায় করলেন আমজাদ খান তার প্রাইভেটকারে চড়ে আসছেন; আর তার পেছনে পেছনে মহিষ ও বাছুর নিয়ে আসছেন রাখাল। আমজাদ খান তার প্রাইভেট থেকে নেমে আসলেন আর মহিষটি চায়ের দোকানের পাশে বাধার জন্য রাখালকে ইশারা করলেন। এরপর তিনি চায়ের দোকানে বসে আয়েসি ভঙ্গিতে বসে কৃষ্ণকে বোঝাতে চাইলেন; এই নাও তোমার জন্য বাছুরসহ মহিষ এনে দিলাম। এখন থেকে আমাকে যেনো রাতে চা না খেয়ে আর বাড়ি যেতে হয়। ঠিক তেমনই ভেজালের এ ভিড়ে ক্রেতাদের চাহিদা পূরণ ও সন্তুষ্টি অর্জন করে খাঁটি সরিষার তেল সরবরাহ করতে দর্শনার মোবারকপাড়ার হাতেম আলী বস্তা ভরা সরিষা আর ঘানির মেশিন নিয়ে হাজির হয়ে যাচ্ছেন খরিদ্দারের দুয়ারে। চোখের সামনে ভাঙিয়ে দিচ্ছেন খাঁটি সরিষার তেল। এ যেনো ভেজালের এ ভিড়ে খরিদ্দারকে খাঁটি সরিষার তেল সরবরাহের প্রয়াস।

জেলার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থানা শহরের মোবারকপাড়ার শহীদুল্লাহ খানের ছেলে হাতেম আলী খরিদ্দারের খাঁটি সরিষার তেল সরবরাহ করতে রুপসী বাংলাদেশ গড়ে তোলেন। ক্রয় করেন ঘানির মেশিন। আলমসাধুর আকৃতির এ গাড়িতে সরিষা বস্তা নিয়ে তিনি ছুটে চলেন জীবননগর, আন্দুলবাড়িয়া, ধোপাখালী ও দর্শনাতে। এ হাটে সাপ্তাহিক হাটের দিনই তিনি বেশী যান। খরিদ্দারের চাহিদা অনুযায়ী তাদের চোখের সামনে সরিষা ভাঙিয়ে তা সরবরাহ করা হয়। হাতেম আলী জানান, তেল একেবারে ফিল্টার হয়ে আসে। বাজারে রাধুঁনি, প্রাণ কিংবা অন্যান্য ব্র্যান্ডের যে তেল বিক্রি হয় ঠিক ওই রকমই এ তেল। তবে তার তেল নিয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই। হাতেম আলী জানালেন, প্রতিদিন দুই বস্তা সরিষা ভাঙানো যায়। উৎপাদিত তেল প্রতি লিটার ২শ’ টাকা দরে বিক্রি করা হয়ে থাকে। অনেক সময় খরিদ্দারের চাহিদা অনুযায়ী তেল দেয়া সম্ভবপর হয় না বলে জানান তিনি। এদিকে চোখের সামনে সরিষা ভাঙিয়ে খাঁটি তেল সরবরাহ করায় হাতেম আলীর রুপসী বাংলা ঘানি মেশিনের সামনে খরিদ্দারের লাইন লেগে থাকে। ফলে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে তার ঘানি মেশিন।

 

Comments (0)
Add Comment