গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে কৃষকের ভাগ্য বদলের হাতছানি

স্টাফ রিপোর্টার: বাজারে উঠেছে শীতকালীন সবজি কিন্তু ক্রেতারা হিমশিম খাচ্ছেন তাতে হাত দিতে কারণ দাম খানিকটা বেশি অন্যবারের তুলনায়। তবে প্রান্তিক কৃষকের মনে অনেকটাই প্রশান্তি। প্রায় সব ধরনের শাকসবজির ভালো দাম পাচ্ছেন এ বছর। গ্রীষ্মকালীন আগাম টমেটো চাষিদের লাভের খাতা এ মরসুমে ভরপুর। নানান জাতের আগাম টমেটোর মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট উদ্ভাবিত বারি-৮ জাতের টমেটোর ফলন সবার নজর কেড়েছে। এ জাতের টমেটো চাষে সময় লাগে ৯০ থেকে ১২০ দিন। হেক্টর প্রতি ফলন ৪০ টন। কৃষক বাজারে বিক্রি করতে গিয়ে কেজি প্রতি দাম পাচ্ছেন ৯০ থেকে ১২০ টাকা।
গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করে চলতি মরসুমে সাফল্যের মুখ দেখেছেন চুয়াডাঙ্গা সদর, দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা অঞ্চলের কৃষকরা। ভালো ফলন আর দাম বেশি পাওয়ায় অল্প জমিতে চাষ করেই বেশি লাভের মুখ দেখছেন চাষিরা। কৃষকের ভাগ্য বদলের একটা সুযোগ তৈরী করছে এই ফসল। ফলে অনেকেই আগ্রহী হয়ে উঠেছেন গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে। এ জাতের টমেটো চাষে কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত বিজ্ঞানীরা। নিয়মিত কৃষকদের মাঠে গিয়ে খবরাখবর নিচ্ছেন কৃষি বিভাগের এই কর্মকর্তারা।
গতকাল শুক্রবার চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দুধপাতিলার মাঠে বারি উদ্ভাবিত দেরিতে বপন করা গ্রীষ্মকালীন টমেটো বারি-৮ এর চাষ কৌশলের বিভিন্ন দিক তুলে ধরতে আয়োজন করা হয় দিনব্যাপী কৃষক প্রশিক্ষণ ও মাঠ দিবস।
বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিউটের সরেজমিন গবেষণা বিভাগের এসএমও ড. জাহান আল মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সগবি, বারি গাজীপুরের মূখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মুহা. সহিদুজ্জামান। বিশেষ অতিথি ছিলেন গ্রীষ্মকালীন টমেটো প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. ফারুক হোসেন। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইন্সটিউটের (বারি) বৈজ্ঞানিক সহকারী মো. রাসেল কবীর তরফদার।
কৃষি বিজ্ঞানী ড. জাহান আল মাহমুদ জানান, চলতি মরসূমে চুয়াডাঙ্গা ও দর্শনার মাঠে ১৫ বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন টমেটোর চাষ করা হয়েছে। সফল টমেটো চাষি দামুড়হুদা উপজেলার দুধপাতিলার হাবিবুর রহমান বিপ্লবের টমেটোর ক্ষেত দেখাতে আনা হয়েছে আগ্রহী প্রায় শতাধিক কৃষককে। এছাড়া ৩০ জন কৃষককে টমেটো চাষে আজ (শুক্রবার) প্রশিক্ষণ দেয়া হলো।
তিনি আরও জানান, চুয়াডাঙ্গা ও দর্শনা এলাকার অনেক চাষি এবার গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ করেছেন। এক বিঘা জমিতে এ জাতের টমেটো চাষে খরচ হয় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা, আর বিক্রি করা যায় প্রায় আড়াই লাখ টাকার মতো। গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষের জন্য জুন মাস থেকে জমি প্রস্তুত করা হয়। টমেটোর সুরক্ষায় বাঁশের মাচা তৈরি করে উপরে দেয়া হয় স্বচ্ছ পলিথিন। গাছ রোপণের ৬০ দিন পর থেকে ফলন আসতে শুরু করে।
ব্যবসায়ীরা দূর দূরান্ত থেকে এসে মাঠ থেকেই টমেটো কিনে নিয়ে যায়। বাজারে এর চাহিদাও ব্যাপক বলে জানান ব্যবসায়ীরা। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় জেলায় এই আগাম টমেটো চাষ বাড়ছে বলেও জানান এই কৃষি বিজ্ঞানী।

Comments (0)
Add Comment