চুয়াডাঙ্গার গহেরপুর পাকশির বিল পুনঃখনন নিয়ে উত্তেজনা পুলিশি মধ্যস্থতায় প্রশমন : মাটি বিক্রি না করার নির্দেশ

বেগমপুর প্রতিনিধি: পুলিশি মধ্যস্থতায় কোটি টাকা ব্যয়ে চুয়াডাঙ্গা গড়াইটুপির গহেরপুর পাকশির বিল পুনঃখননের নামে মাটি বিক্রি নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যকার উত্তেজনার প্রশমন করেছে পুলিশ। সেই সাথে খননকৃত মাটি কোনোভাবেই বিক্রি না করার নির্দেশও দিয়েছেন। প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতেই এস্কেভেটর ভাঙচুর নিয়ে নাটক সাজানো হয়েছে বলে গুঞ্জন উঠেছে। উত্তেজনাকর পরিবেশ শান্ত করায় দর্শনা থানা পুলিশকে সাধুবাদ জানিয়েছে এলাকাবাসী।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপেজলার গড়াইটুপি ইউনিয়নের গহেরপুর ও বাটিকাডাঙ্গা মৌজায় অবস্থিত পাকশির বিল পুনঃখননের কাজ মৎস অধিদফতরের মাধ্যমে বাস্তবায়ন শুরু করে স্থানীয় গহেরপুর মৎসজীবি সমিতির লোকজন। কাজের বিপরীতে ৫টি স্কিমে ১ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাবও অনুমোদন হয়। প্রথম পর্যায়ে ৩টি স্কিমের বিপরীতে ৬০ লাখ টাকার কাজ শুরু করে সমিতির লোকজন। অভিযোগ ওঠে কাজের শুরুতেই সমিতির সাধারণ সম্পাদক গহেরপুর গ্রামের আসাদুল হক খননকৃত মাটি অবৈধভাবে বিক্রি করতে থাকে। এতে করে ফুঁসে ওঠে এলাকাবাসী। দীর্ঘদিন পর বিলের ধারে বাঁধ দিলে আশপাশ এলাকার সমতল জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি ও চাষাবাদ বিঘিœত, উত্তোলনকৃত মাটি বিক্রি, আর মাটি বিক্রির ট্রাক্টর চলাচলে গ্রামীন পাকাসড়ক নষ্ট হচ্ছে এমন অভিযোগ তুলে সাবেক ইউপি সদস্য জাহিদুল ইসলামসহ এলাকাবাসী গণস্বাক্ষর করে বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ করেন। তাতেও কর্ণপাত করেন না সংশ্লিষ্ট দফতরসহ সমিতির লোকজন। এনিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দানা বাঁধতে থাকে। এরই বহিঃপ্রকাশ ঘটে মঙ্গলবার রাতে স্কেভেটর ভাঙচুরের মাধ্যমে। যদিও গুঞ্জন উঠেছে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে নিজেরাই নিজেদের স্কেভেটর ভাঙচুর করে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপানোর অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। সূত্র আরও জানায়, জনৈক এক জনপ্রতিনিধির মাটি বিক্রি এবং স্কেভেটর নিতে সমিতির লোকজনকে বাধ্য করা হয়েছে। যার কারণে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা হতে থাকলে দর্শনা থানা পুলিশ অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে উভয়পক্ষকে থানায় আসার জন্য বলে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে গড়াইটুপি ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান রাজুসহ উভয়পক্ষ থানায় উপস্থিত হন। দর্শনা থানার অফিসার ইনচার্জ মাহাব্বুর রহমান কাজল উভয়ের কথা শোনেন এবং মধ্যস্থতা করে দেন। যাদের নামে বরাদ্ধ এসেছে তারাই শুধু তদারকিতে থাকবে। কেউ যেনো অযাচিত হস্তক্ষেপ না করে। সেই সাথে খননকৃত মাটি শুধুমাত্র পাড়বাঁধা ছাড়া কোনোভাবেই যেনো বিক্রি না হয় সে বিষয়েও সতর্ক করে দেন তিনি। জাহিদুল ইসলাম বলেন, সরকারি সম্পদ সরকারি টাকায় রক্ষনাবেক্ষণ হবে এটাই স্বাভাবিক। তাই বলে অবৈধভাবে মাটি বিক্রি এবং গ্রামীণ পাকাসড়ক নষ্ট করার অধিকার কারো নেই। পুলিশ যে নির্দেশ দিয়েছে তা মেনে চলবো। সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদুল হকের কাছে স্কেভেটর ভাঙচুর ও কে মাটি বিক্রি করেছে জানতে চাইলে তিনি সব বিষয় এড়িয়ে যান।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান রাজুর সাথে মোবাইলফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ওসি মাহাব্বুর রহমান কাজল বলেন, আইন-শৃংখলা বজায় রাখতে উভয়পক্ষকে থানায় ডাকা হয়েছিলো। যাদের নামে বরাদ্ধ এসেছে তারাই শুধু নীতিমালা মেনে কাজ করবে বলে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। আর কোনোপ্রকার মাটি বিক্রি করতে পারবে না। এদিকে উত্তেজনকর পরিবেশ প্রশোমন করায় দর্শনা থানা পুলিশকে সাধুবাদ জানিয়েছে এলাকাবাসী।

Comments (0)
Add Comment