ঝিনাইদহ পৌরসভায় দীর্ঘ ১১ বছর পর ভোট কাল

 

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ পৌরসভায় দীর্ঘ ১১ বছর পর আগামীকাল রোববার সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। সীমানা সংক্রান্ত আইনী জটিলতায় দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচন বন্ধ ছিল। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা নেমেছেন ভোটযুদ্ধের প্রচারণায়। সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। দীর্ঘদিন পর কে হচ্ছেন এবার পৌর মেয়র-এ নিয়ে চায়ের দোকান, রাস্তাঘাটে চলছে আলোচনা। শুক্রবার রাত ১২টা থেকে শেষ হয়েছে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা।

এদিকে, নির্বাচনের সার্বিক পরিবেশ সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ। নির্বাচন চলাকালীন ১৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, পাঁচ প্লাটুন বিজিবিসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। আগামী ১১ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) এ ভোট গ্রহণ করা হবে। নির্বাচনে মেয়র পদে চারজন এবং সংরক্ষিত নারী ওয়ার্ডসহ ১২টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে ৮৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ইতিমধ্যে ভোটের মাঠ জমে উঠলেও প্রার্থীরা পরস্পরের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উত্থাপন করছেন।

সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখানে আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ নির্বাচন করলে তাদের প্রার্থীই বিজয়ী হওয়া সম্ভব। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল হাই ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুসহ দলের নেতা-কর্মীরাও সকল দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ভুলে এক সঙ্গে নৌকা প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদী নৌকার প্রার্থী আব্দুল খালেক।

এছাড়া স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদী ও মিজানুর রহমান মাসুম ভোটযুদ্ধে নেমেছেন কোমর বেঁধে। তারাও বিজয়ের আশা নিয়েই রাত-দিন ভোটের মাঠে কাজ করে যাচ্ছেন। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সঙ্গেই আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র প্রার্থীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা সাধারণ ভোটারদের। ঝিনাইদহ জেলা নির্বাচন আ: ছালেক জানান, ২০১৫ সাল থেকে সীমানা জটিলতা মামলায় প্রায় ১১ বছর পর ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে ঝিনাইদহ পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

ঝিনাইদহ পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ৮২,৬৯৫ জন, এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৪০,৪৪৬ জন ও নারী ভোটার ৪২,২৪৯ জন, ভোট কেন্দ্র ৪৭টি এবং ভোট কক্ষ রয়েছে ২৬৫ টি।

মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪ জন। তারা হলেন- আওয়ামী লীগ মনোনীত মো: আব্দুল খালেক (নৌকা), মো. কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদী (নারিকেল গাছ) স্বতন্ত্র, মিজুনুর রহমান মাসুম (মোবাইল ফোন) স্বতন্ত্র ও সিরাজুল ইসলাম ইসলাম (হাতপাখা) ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। এখানে নারী সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর (নারী) আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১৯ এবং সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৬৪ জন।

এ পৌরসভায় স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীর সাথে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থীর মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে জানিয়েছেন ভোটাররা। নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও গ্রহণযোগ্য করতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে ৫ প্লাটুন বিজিবি, ১৮ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ৩ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, ৪৮০ জন পুলিশ, ৪২৩ জন আনসার ও ৯টি মোবাইল টিমসহ স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে র্যাবের ৩টি টহল সার্বক্ষণিক মোতায়েন থাকবে বলে জানিয়েছেন ঝিনাইদহ র‌্যাব ক্যাম্পের অধিনায়ক স্কোয়ার্ডন লিডার ইসতিয়াক হোসেন।

Comments (0)
Add Comment