দামুড়হুদায় আধুনিক পদ্ধতিতে টমেটো চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের

দামুড়হুদা অফিস: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলায় আধুনিক পদ্ধতিতে টমেটো চাষ বাড়ছে। ইতোমধ্যে অনেকে নতুন পদ্ধতিতে শীতকালীন হাইব্রিড টমেটোর আবাদ করে সফল হয়েছেন। নতুন এ পদ্ধতিতে টমেটো চাষে ব্যবহার করা হচ্ছে বাঁশের খুঁটি ও নাইলনের দড়ি। নতুন পদ্ধতিতে টমেটো চাষে বাড়তি কিছু খরচ হলেও গাছের পরিচর্যা অনেক সহজ হয় ফলন ও বেশি হয়।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, দামুড়হুদা উপজেলায় এবার টমেটো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬৮ হেক্টর জমিতে। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে বলে আশা করছেন কৃষি অফিস। উপজেলার কেশবপুর, জয়রামপুর, হাউলি, বিষ্ণপুর ও পারষ্ণপুর মদনা গ্রামের মাঠে সবচেয়ে বেশি এই চাষ হয়ে থাকে। ফলন ভালো হওয়ায় প্রায় সকলেই এখন এই পদ্ধতিতে চাষ করেছে। হাইব্রিড জাতের টমেটো গাছ সাধারণত দেশি জাতের গাছের তুলনায় বেশ বড় হয়ে থাকে। মাচা পদ্ধতিতে চাষ করলে এই গাছ মাটিতে ঠেকতে পারে না। লাইন করে লাগানো এসব গাছ বড় হলেও মাচা থাকায় মাটিতে ঠেকতে পারে না গাছে প্রচুর পরিমাণ আলো বাতাস পাওয়ায় রোগ বালায় কম হয়। গাছে ফুল ফল এলে মাটিতে না ঠেকতে পারায় পচন ধরে না। মাচা পদ্ধতিতে গাছের দুই ধারের সারির মাঝে বেশ খানিক ফাঁকা জায়গা থাকায় পরিচর্যা করতে অনেক সুবিধা হয়। মাচা করতে প্রয়োজন হয় বাঁশের খুঁটি আর নাইলন দড়ি। বাঁশের খুঁটি মাটিতে পুতে নাইলন দড়ি  টানিয়ে মাচা করা হয়ে থাকে।

দামুড়হুদা বাজারপাড়ার মিনহাজ গাইনের ছেলে লাল্টু মিয়া বলেন, কয়েকবছর ধরে আমি এই পদ্ধতিতে হাইব্রিড টমেটো চাষ করছি। এ বছর আমি ৩ বিঘা জমিতে এই পদ্ধতিতে হাইব্রিড জাতের টমেটো চাষ করেছি। এখন চলছে গাছের পরিচর্যা কাজ ক্ষেতের গাছগুলোও বেশ পুষ্ট হয়েছে। ইতোমধ্যে গাছে গুটি গুটি টমেটো ধরেছে। নতুন পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি বলেন, এই পদ্ধতিতে একটু খরচ বেশি হলেও গাছ সবসময় সোজা হয়ে থাকে। এতে গাছের পরিচর্যা করতে সুবিধা হয়, গাছে আলো-বাতাস লাগে এবং ফল মাটিতে ঠেকবে না। ফলে টমেটোর রংও ভালো হয়।

দামুড়হুদার হাউলি গ্রামের সফল সবজি চাষি রমজান আলী বলেন, দুই বিঘা জমিতে এই পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করেছে এখন পর্যন্ত তার সেচ, সার, লেবার দিয়ে খরচ হয়েছে ২০ হাজার টাকা। ফসল তোলা পর্যন্ত আরও ২০-২২ হাজার টাকা খরচ হবে। সব মিলিয়ে ৪০-৪২ হাজার টাকা খরচ হবে। ফলন ভালো হলে এবং বাজার  দর ভালো পেলে তার দুই বিঘা জমিতে ৯০ হাজার থেকে এক লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করা সম্ভব হবে।’

দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসার মনিরুজ্জামান বলেন, টমেটো সাধারণত বেলে দোআশ মাটিতে ভালো হয়। আমাদের এলাকার মাটি টমেটো চাষের জন্য খুবই উপযোগী। আমাদের এলাকার অধিকাংশ চাষি এই পদ্ধতিতে চাষ করছে। আমরা তাদেরকে সবসময় সকল ধরণের পরামর্শ দিয়ে আসছি। আশা করছি প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে বাজার দর ভালো থাকলে চাষিরা ভালো লাভবান হবে।

 

Comments (0)
Add Comment