ফলন বাড়াতে গুণগত ভালোমানের বীজ বিক্রি নিশ্চিত করতে হবে

ভুট্টার আবাদ বৃদ্ধির লক্ষে অনুষ্ঠিত মতবিনময় সভায় চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক

স্টাফ রিপোর্টার: ‘যে কোন আবাদে ভালো ফলনের অন্যতম শর্ত ভালোমানের বীজ। ভুট্টাসহ যে কোনো আবাদের বীজ নিয়ে কোনো প্রকারের অনিয়ম মেনে নেয়া হবে না। কোন কৃষক বীজ কিনে প্রতারিত হলে অভিযুক্ত বীজ বিক্রেতার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এজন্য অবশ্যই সকল কৃষককে বীজ ক্রয়ের মেমো ও ব্যবহৃত বীজের মোড়ক সংরক্ষণ করতে হবে। অভিযোগও করতে হবে যথাসময়ে।’

ভুট্টা উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষে চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ভুট্টার বীজ আমদানিকারক ও সবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সাথে মতবিনিময়কালে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা উপরোক্ত অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, দেশে ভুট্টার আবাদ ও ফলন দিন দিন বাড়ছে। ভুট্টার আবাদ মরসুম আসন্ন। চুয়াডাঙ্গায় মোট আবাদি জমির প্রায় অর্ধেক জমিতে ভুট্টার আবাদ হবে। ভুট্টাচাষিগণ ভুট্টা আবাদের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ভুট্টার বীজ নিয়ে অতীতে কিছু অনিয়ম পরিলক্ষিত হয়েছে। এবার কোনোভাবেই অনিয়যম দুর্নীতি হতে দেয়া যাবে না। এজন্যই বীজ বিক্রয় ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে এ আয়োজন। যেসব প্রতিষ্ঠান বীজ আমদানি করে আমাদের দেশে কৃষকদের মাঝে তাদের এজেন্ট বা ডিলারদের মাধ্যমে বিক্রি করে তাদেরও বিশেষভাবে সতর্ক হতে হবে। গুণগত ভালোমানের বীজ ভুট্টাচষিদের মাঝে বিক্রি করতে হবে। অধিক মুনাফা করতে গিয়ে কৃষক ফলনে বঞ্চিত হলে এবং এ বিষয়ে যথাসময়ে প্রমাণসহ অভিযোগ উত্থাপন হলে শুধু জরিমনা নয়, জেলও দেয়ার পদক্ষেপ নেয়া হবে। কারণ, ফলন বিপর্যয় মানে শুধু কৃষক নয়, জাতির ক্ষতি। এ ক্ষতি মেনে নেয়ার সুযোগ নেই।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় সদর উপজেলা কৃষি অফিসার তালহা জুবায়ের মাসরুর, দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসার মনিরুজ্জামান, জেলা মার্কেটিং অফিসার শহিদুল ইসলাম, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব সভাপতি সরদার আল আমিন, সাধারণ সম্পাদক রাজীব হাসান কচিসহ জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের বীজ বিক্রেতা, সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সোহেল রানা, আরিফ হোসেন, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা- শাহিন রাব্বী, মুসলেউদ্দীনসহ সাংবাদিকদের মধ্যেই অনেকেই উপস্থিত থেকে মতামত দেন। বীজ বিক্রেতাদের মধ্যে দেশত্ববোধ জাগ্রত করে দেশের কল্যাণে মান সম্পন্ন বীজ বিক্রির দিকে বিশেষ নজর দেয়ার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক বলেন, কোথাও কোনো ব্যক্তি বীজ নিয়ে প্রতারণার আশ্রয় নিলে সংশ্লিষ্ট এলাকার কৃষি কর্মকর্তাসহ জেলা কর্মকর্তাদের দ্রুত অবহিত করুন। কোনরকম কালবিলম্ব না করে দ্রুত উপযুক্ত ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। বীজ কেনার সময় মোড়কে লেখা মেয়াদ দেখে নিতে হবে। কোন ব্যক্তি মেয়াদ ঘষে নতুন করে লিখলে, কিম্বা খুচরা বিক্রয় মূল্য কেটে নতুন করে বেশি লিখে কৃষকদের নিকট থেকে তা আদায় করলেও বিক্রেতা বা সরবরাহকারীকে আইনের আওতায় নেয়া হবে। ফলে সকলকে এ বিষয়ে সতর্ক থাকা অতীব জরুরি। মনে রাখতে হবে, ফলন বাড়াতে গুণগত ভালমানের বীজ বিক্রি বা সরবরাহের বিকল্প নেই।

ভুট্টার আবাদ বৃদ্ধির লক্ষে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় উপস্থিত কৃষিকর্মকর্তাগণ জমি ফেলে না রেখে যে জমিতে যা হয় তা আবাদে আগ্রহী হওয়ার আহ্বান জানিয়ে আসন্ন মরসুমে শস্যের আবাদ বৃদ্ধির দিকে আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানান।

Comments (0)
Add Comment