বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকতে অসহায়-দরিদ্র মায়েদের ফ্রি পোলাপস অপারেশন

মেহেরপুর অফিস ঃ পোলাপস (জরায়ুর নাড়ী নিচে নেমে যাওয়া) মায়েদের একটি জটিল রোগ। সার্জারী ব্যাতিত এ রোগ সহসাই সারেনা। দেশে অন্ততঃ ৫ লক্ষ অসহায় ও দরিদ্র মা এ রোগ নিয়ে অনেক কষ্টে জীবন যাপন করছেন। চিকিৎসা ব্যয় বেশি হওয়ায় ডাক্তার দেখানো ও সার্জারী করাতে পারেন না ওই সব মায়েরা। এবার অসুস্থ্য মায়েদের ফ্রি চিচিৎসা দিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ।

দেশে অনেক মায়েরা আছেন যারা ২০ বছর ৩০ বছর  (পোলাপস) জরায়রু নাড়ী নিচে নেমে যাওয়া সমস্যা নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। চিকিৎসা ব্যয় বেশি হওয়ায় ডাক্তারের স্বরণাপন্ন হননা তারা। এবার বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে সারা দেশ থেকে ওই সকল মায়েদের খুঁজে খুঁজে নিয়ে এসে সার্জারী- পোস্ট অপারেটবিভ কেয়ার সহ সুস্থ করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে সহায়তা করছে ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ মেহেরপুর প্রোগ্রাম। বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকীর শুরু থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ১৩ হাজার মায়ের সফল অপারেশন ও চিকিৎসা সম্পন্ন করেছে সংস্থাটি। এখনও চলমান রয়েছে এ চিকিৎসা কার্যক্রম।

রাজবাড়ি জেলা থেকে মায়ের সার্জারী করাতে এসেছেন রাফিয়া সুলতানা। তিনি বলেন- আমাদের অভাবের সংসার। আমার মা দীর্ঘদিন ধরে জরায়ু জনিত সমস্যায় ভূগছিলেন। গেল বৃহস্পতিবার ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশনে আমার মায়ের ফ্রি অপারশেন করা হয়েছে। মা এখন ভাল আছেন। অনেকটাই সুস্থ্য হয়ে গেছেন। আগে এ অপারশেন করতে অনান্য হাসপাতালে ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা খরচ হবার কথা জানিয়েছিলেন। টাকা পয়সার অভাবে করাতে পারিনি। এখানে ফ্রি চিকিৎসা সেবা পাওয়ায় আমার মাকে সুস্থ্য করে বাড়ি নিয়ে যেতে পারছি। এটা আমার জন্য খুশির আনন্দের। মেহেরপুর মুজিবনগর উপজেলার তারানগর গ্রামের বৃদ্ধ মা নুরুননাহার বেগম বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ্য। এসব রোগের কথা কাউকে বলতেও পারি না। কয়েক যায়গায় ডাক্তার দেখিয়ে চিকিৎসায় অনেক টাকা খরচ হবে জানালে আমার চিকিৎসার আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম। হঠাৎ খবর পেলাম মেহেরপুরের ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশন ফ্রি অপারেশেন করাচ্ছে। দেরি না করে মেয়েকে সাথে নিয়ে ইমপ্যাক্ট হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। আগামি মঙ্গলবার আমার অপারেশ হবে। তিনি সুস্থ্য হবার জন্য সকলের নিকট দোয়া চান।

সার্জারী পরবর্তী সেবা প্রদানকারী পোস্ট অপারেটিভ কেয়ার ইনচার্জ মনিকা দেবি বলেন, ২০ বছর ৩০ বছর ধরে জরায়ু সমস্যায় ভোগা রুগিদের অপারেশন করে পোস্ট অপারেটিভ কেয়ারে সেবা দিয়ে যাচ্ছি। যেন রুগিরা দ্রুত সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরতে পারেন। অসুস্থ্য রুগিরা সুস্থ্য হয়ে হাসি মুখে বাড়ি ফিরে গেলে আমাদের খুব ভাল লাগে। মনে হয় ভগমানের অশেষ কৃপা আমাদের জন্য। যার কারনে আমরা অসুস্থ্য মায়েদের সেবা দিতে পারছি। ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশন মেহেরপুর প্রোগ্রামের সার্জারী চিকিৎসক খন্দকার হুমায়রা আরেফিন বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে মায়েদের জরায়ু সমস্য জনিত রোগের ফ্রি অপারেশন করা হচ্ছে। চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হয়ে মায়েরা খুশি মনে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। এতে রুগিরা যেমন খুশি হচ্ছে, রুগিদের খুশিতে আমরাও খুশি। ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ মেহেরপুর প্রোগ্রামের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসক মোঃ সফিকুল ইসলাম বলেন, দেশে অসহায় ও দরিদ্র অন্তত ৫ লক্ষ মা আছেন যারা পোলাপস রোগে আক্রান্ত। দারিদ্রতার কারনে তারা চিকিৎসকের কাছে যান না। আমরা সেই সকল মায়েদের খুঁজে খুঁজে নিয়ে এসে ফ্রি চিকিৎসা করাচ্ছি। বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষে একেবারেই ফ্রি চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। রুগিরা শুধুমাত্র গাড়ি ভাড়া দিয়ে হাসাতালে আসলেই সকল খরচ বহন করছে ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশন। তিনি পোলাপস আক্রান্ত মায়েদের ইমপ্যাক্ট ফাউন্ডেশনে এসে চিকিৎসা নেবার জন্য আহবান জানান।

Comments (0)
Add Comment