বনমেরু রোগে আক্রান্ত জাহাঙ্গীর তার ছেলেটির জন্য বাঁচতে চায়

আনোয়ার হোসেন: জাহাঙ্গীরের মতো প্রাণবন্ত এক উজ্জ্বল যুবকের জীবন কি আমাদের চোখের সামনেই নিঃশেষ হয়ে যাবে? জাহাঙ্গীর আলমের ৬ বছরের আদরের ছেলে তামিম কি এ বয়সে তার বাবাকে হারাবে? হাসপাতালে শয্যা পাশে বসে শুধু বাবার দিকে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে তামিম। প্লাস্টিক অ্যানিমিয়ায় আক্রান্ত জাহাঙ্গীর আলম তার ছেলেটির জন্য বাঁচতে চায়। তার এই অশ্রুসিক্ত বাঁচার আকুতি যেনো বিধাতা শুনতে পান।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গার পল্লি খাসকররা ইউনিয়নের রায়সা বড়দাড়িপাড়ার গোলাম লস্করের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (২৮)। ৩ ভাই ও দু বোনের মধ্যে জাহাঙ্গীর সবার ছোট। মরণব্যাধি প্লাস্টিক অ্যানিমিয়া রোগের আক্রান্ত হয়ে তার সঙ্গে যুদ্ধ করছেন প্রায় তিন বছর। দুরাগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ায় টাকার অভাবে অনেকটাই স্তিমিত হয়ে পড়েছে তার চিকিৎসা। ঠিকমতো চিকিৎসা করাতে পারলে ভালো হয়ে উঠবে জাহাঙ্গীর আলম এমনটিই জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। প্লাস্টিক অ্যানিমিয়া আক্রান্ত জাহাঙ্গীর আলমের চোখে মুখে শুধু বাঁচার আকুতি। এক বছর ধরে বেশি অসুস্থ হওয়ার কারণে চলাচল করতে পারেন না।

জাহাঙ্গীর বলেন, তার সংসারে রয়েছে ৬ বছরের ছেলে তামিম ইকবাল ও স্ত্রী। তাদের নিয়ে তিনি মোটামুটি সুখেই জীবনযাপন করছিলেন। ভাগ্যের নির্মম পরিহাস ২০১৭ সালের মাঝামাঝি তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্থানীয় হাসপাতালসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে পরীক্ষা নিরীক্ষার পর ডাক্তার জানায়, প্লাস্টিক অ্যানিমিয়া অর্থ্যাৎ বনমেরু ক্যান্সার ধরা পরেছে। তারপর তিনি সাধ্য অনুযায়ী এবং বন্ধু-বান্ধবদের সহায়তায় ভারতের হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। জমি জায়গা বিক্রি করে এতে কয়েক লাখ টাকা খরচ করেছেন। ডাক্তার বলেছেন সার্জারির মাধ্যমে এ রোগ নিরাময় সম্ভব। বনমেরু ট্রান্সফার করালে পুরোপুরি সুস্থ হতে পারে জাহাঙ্গীর। প্রয়োজন ২৫-৩০ লাখ টাকা। বর্তমানে বাড়িভিটা ছাড়া আর কোনো টাকার উৎস নেই। সংসার চালানো যেখানে জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে কষ্টকর সেখানে চিকিৎসার জন্য এতো অর্থ পাবে কোথায়? তাছাড়া প্রতিদিনই এক ব্যাগ ও পজেটিভ রক্ত ও এক হাজার ৪৭০ টাকার ওষুধ প্রয়োজন। বর্তমানে জাহাঙ্গীর আলম চুয়াডাঙ্গা সদর হাসাতপালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

জাহাঙ্গীর জানান, ‘মৃত্যু নিশ্চিত ভেবে দেনার বোঝা মাথায় নিয়ে মৃত্যুর প্রহর গোনা ছাড়া আমার আর কোনো উপায় নেই। আমি মরে গেলে আমার পরিবার দেখার মতো আর কেউ রইলো না। আমার একমাত্র সন্তান তানিমের জন্য আমি কিছুই করে যেতে পারলাম না’ এভাবেই কান্নাজড়িত গলায় কথাগুলো বলছিলেন জাহাঙ্গীর।

তিনি আরও জানান, ‘জমি বিক্রি করে ঢাকার পিজি হাসপাতাল ও ভারতে চিকিৎসা নিয়েছি। বর্তমানে বাড়িভিটার জমি ছাড়া আর কোনো জমি নেই। তাই বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মানবতার জননী জননেত্রী শেখ হাসিনা এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন ধনী ব্যক্তি, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনসহ সারা বাংলাদেশের সকল ধনী ব্যক্তিদের কাছে আমার প্রাণ বাঁচাতে চিকিৎসার জন্য আর্থিক সাহায্যের জন্য আকুল আবেদন করছি। প্রিয় দেশবাসী আপনাদের সহযোগিতা ও সহমর্মিতাই ফিরিয়ে দিতে পারে আমার জীবন। আমি দেনার বোঝা মাথায় নিয়ে মরতে চাই না। আপনাদের সহযোগিতায় বাঁচতে চাই।’

জাহাঙ্গীরের শয্যা পাশে থাকা স্ত্রী তানিয়া খাতুন জানান, আমার স্বামীর বনমেরু ট্রান্সফার করালে সম্পূর্ণ সুস্থ হবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তার জন্য প্রয়োজন প্রায় ৩০ লাখ টাকা। তিনি আরও বলেন, প্রতিদিন এক হাজার ৪৭০ টাকার ওষুধ লাগে তার সাথে এক ব্যাগ রক্ত। প্রতিদিন রক্ত পাওয়া যায় না। এজন্য ২-৩ দিন পর পর রক্ত দিচ্ছি। আমাদের জায়গা জমি যা ছিলো সবই বিক্রি করে দিয়েছি। এখন আমরা নিঃস্ব। তিনি ধনী ব্যক্তিদের কাছে আবেদন জানান তার শিশু সন্তানের কথা ভেবে যেনো সকলেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়। সাহায্য পাঠানোর জন্য রোগী জাহাঙ্গীর আলমের ০১৯৪৫৯৫০২৬৬ মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।

 

Comments (0)
Add Comment