হাসমত আলী: দামুড়হুদা উপজেলায় বৃষ্টির অভাবে নদীনালা, বিলখাল, পুকুরসহ জলাশয়গুলো পানিশূন্য থাকায় কৃষকেরা পানির অভাবে পাট জাগ দিতে পারছেন না। অনেক কৃষক পাট কেটে জমিতেই ফেলে রেখেছেন। এখন পাট কাটার ভরা মরসুম হলেও কৃষকরা পানির অভাবে তা কাটতে দেরী করছে। এ অবস্থায় কৃষকেরা পড়েছেন মহাবিপাকে। এ বছর দামুড়হুদা উপজেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ৬ হাজার ৯শত ৪৫ হেক্টর নির্ধারণ করা হলেও চাষ হয়েছে ১০ হাজার ৫শত ৩৫ হেক্টর জমিতে।
কুড়–লগাছি ইউনিয়নের রেজাউল করিম মিন্টু মাস্টার বলেন, চলতি বছর আমার ৫ বিঘা জমিতে পাটের আবাদ রয়েছে। পাটের ফলন ৬৫ মণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে বাজারে দামও ভালো না। আমি পানির অভাবে পাট জাগ দেয়া নিয়ে চিন্তার মধ্যে আছি। এবার এখনো তেমন ভারী বৃষ্টিপাত না হওয়ায় এলাকায় নিচু জলাশয়ে পানি জমেনি। পাট জাগ দেয়ার মতো বৃষ্টিপাত না হয়, তাহলে মাঠ থেকে দূরে ভৈরব নদীতে পাট নিয়ে সেখানে জাগ দিতে হবে। বর্তমান বাজারে প্রতি মণ পাট দুই হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কুড়–লগাছির সীমান্তবর্তী গ্রামের আমির হেসেন বলেন, এ বছর বৃষ্টির পানির অভাবে পাট জাগ দিতে সমস্যা হচ্ছে। এ সময় আমন ধান রোপন ও পাট জাগ দেয়ার জন্য বৃষ্টির পানির খুবই প্রয়োজন। এ বছর ভরা বর্ষাকালেও তেমন বৃষ্টিপাত হয়নি।
দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গার খাবলিপাড়ার কৃষক আতিয়ার রহমান বলেন, এ বছর বৃষ্টিপাত তেমন একটা না হওয়ায় মাঠ-ঘাট প্রায় পানি শূন্য। এখন পাট কাটার উপযোগী হলেও বৃষ্টির পানির অভাবে পাট জাগ দেয়া নিয়ে খুবই চিন্তায় আছি। চলতি বছর প্রতি বিঘা জমিতে পাট উৎপাদনের জন্য ১২-১৪ হাজার টাকা খরচ হয়। সেই হিসাবে বাজার দাম কম। দাম নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি।
দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিসার মনিরুজামান বলেন, এ বছর দামুড়হুদা উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার অধিক জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। এখন পাট কাটার উপযুক্ত সময়। ইতোমধ্যেই অনেক চাষি পাট কাটা শুরু করেছেন। কৃষকেরা অপেক্ষায় আছেন, বৃষ্টি হলে তারা পুরোদমে পাট কাটা শুরু করবেন। তবে আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি শেষ পর্যন্ত বৃষ্টিপাত না হলে রিবন রেটিং পদ্ধতিতে পাট পচালে অল্প খরচে পাট পচানো সম্ভব। এ পদ্ধতিতে পাটের মানও ভালো হয়।