মুজিবনগরে লাভজনক ব্যবসার ফাঁদে ৩ ব্যক্তি : সালিসে আদায়কৃত টাকা আত্মসাৎ করেছেন কেদারগঞ্জ বাজার কমিটির সভাপতি

 

মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুরের মুজিবনগর এলাকায় লাভজনক ব্যবসায় শেয়ার করার নামে টাকা নিয়ে ব্যর্থ হয়েছে প্রতারক আব্দুর রহিম (৩০) নামের এক যুবক। এ ঘটনায় স্থানীয় কেদারগঞ্জ বাজার কমিটিতে সালিস দিলে রক্ষক হয়ে ভক্ষকের কাজ করেছেন বাজার কমিটির সভাপতি কুতুব উদ্দিন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ আব্দুর রহিম ৩ কিস্তিতে বাজার কমিটির সভাপতি কুতুব উদ্দিনকে টাকা ফেরত দিলেও তিনি তা পাওনাদারদের না দিয়ে নিজে আত্মসাৎ করেছেন।

জানা যায়, মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের নাজিরাকোনা গ্রামের নওশাদ খাঁ ওরফে পঁচার ছেলে আব্দুর রহিম তার ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানিতে শেয়ার হওয়ার জন্য প্রস্তাব করলে পাশর্^বর্তী বল্লভপুর মুসলিমপাড়ার আক্কাস আলী ম-লের ছেলে মো. শাহাবুদ্দীন, একই গ্রামের জাহাঙ্গীর মল্লিকের ছেলে নাহিদ ও মানিকনগর গ্রামের আছুর আলীর ছেলে সোহেল যথাক্রমে ৮০ হাজার, ৮০ হাজার ও ৭০ হাজার টাকা প্রদান করেন। কয়েক মাসের মধ্যে ব্যবসাটি গুটিয়ে যেতে থাকে। প্রশ্ন আসে কোম্পানিরা শেয়ার ক্রেতারা লাভসহ জমা টাকা ফেরত পাবেন কিনা? হিসাব নিকাশ শেষে তাদের ৩ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ফেরত দেওয়া কথা হয়। শাহাবুদ্দীনকে ৩০ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে বাকি ৫০ হাজার টাকা পরে ফেরত দেবে বললেও আজও পাননি টাকা ফেরত।

এদিকে এ ঘটনায় ২০২০ সালের ১৬ জুলাই কেদারগঞ্জ বাজারে একটি সালিস বসে। ওই সালিসে বাজার কমিটির সভাপতি কুতুব উদ্দিন আব্দুর রহিমের নিকট থেকে টাকা ফেরত নিয়ে ভুক্তভোগীদের প্রদান করা হবে মর্মে জানানো হয়। কিন্তু ওই টাকা অদ্যবধি ফেরত পাননি শাহাবুদ্দীন, নাহিন ও সোহেল। তবে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন আব্দুর রহিম ২০২১ সালের ২৫ মার্চ এক লাখ ৪০ হাজার টাকা, একই বছরের ৫ মে ২২ হাজার টাকা ও ১৮ জুন ২৫ হাজার টাকা বাজার কমিটির সভাপতি কুতুব উদ্দিনকে ফেরত দিয়েছেন। কিন্তু ওই টাকা আমরা পায়নি।

এদিকে শাহাবুদ্দীন পাওনা টাকা আদায়ে চলতি বছরের পয়লা মার্চ বাগোয়ান ইউপি আদালতে আব্দুর রহিমের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে। একাধিকবার দিন পাল্টাছে কিন্তু আজও তার পাওনা টাকা আদায় হয়নি।

তবে বাগোয়ান ইউপি চেয়ারম্যান আয়ুব হোসেন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি সত্য। কিন্তু আমার জানা মতে তিন কিস্তিতে প্রায় দুই লাখ টাকা কেদারগঞ্জ বাজার কমিটির সভাপতি কুতুব উদ্দিন আব্দুর রহিমের বা তার পরিবারের লোকদের নিকট হতে রসিদের মাধ্যমে আদায় করেছেন। ওই টাকা ভুক্তভোগীরা না পাওয়াটা অত্যন্ত দুঃখজনক ও লজ্জার বিষয়।

এদিকে ভুক্তভোগীরাসহ এলাকার অনেকে জানিয়েছেন দীর্ঘদিন বাজার কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক না থাকায় ও মেযাদ উত্তীর্ণ হওয়ার ২ বছর পার হতে চললেও নতুন কমিটি না হওয়ায় সভাপতি কুতুব উদ্দিন স্বেচ্ছাচারীর মত কাজ করছেন। তিনি জেলা পরিষদের দোকান বরাদ্দ দেয়ার নামে লাখ লাখ টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে ভুক্তভোগীরা মানববন্ধন করেছেন ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করেছেন।

Comments (0)
Add Comment