আমার চোখের সামনে আব্বুকে গুলি করলো

ভেড়ামারা প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার চাঁদগ্রামে গুলিতে নিহত আওয়ামী লীগ নেতা সিদ্দিকুর রহমানের ছোট ছেলে মোহাম্মদ মুজাহিদ। মুজাহিদ এবার এসএসসি পরীক্ষা দেবে। বাবাকে গুলি করার প্রত্যক্ষদর্শী সে। ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মুজাহিদ বলে, ‘আমার কাকুরা (চাচা) বাড়ির সামনে মাঠে ঘাস কাটছিলো। ওরা (প্রতিপক্ষ) কাকুদের মারে। এ সময় পাশেই আমার আব্বু ক্ষেতে কাজ করছিলেন। কাকুদের মারার খবর শুনে আমি আব্বুর কাছে যাই। আমার চোখের সামনেই আব্বুকে গুলি করলো ওরা। ওরা ২০-২৫ জন ছিলো। সবার হাতেই অস্ত্র ছিলো।’ মুজাহিদরা দুই ভাই। বড় ভাই ফয়সাল রহমান ঢাকায় চাকরি করেন। শুক্রবার বেলা একটার দিকে চাঁদগ্রামের সড়কের সঙ্গে বাড়ির সামনে মুজাহিদের সঙ্গে বেশ কয়েক মিনিট এই প্রতিবেদকের কথা হয়। এ সময় বাড়ির সামনে মানুষের জটলা ছিলো। পরিবারসহ আত্মীয়-স্বজনেরা কাঁদছিলেন। নিহত সিদ্দিকুরের স্ত্রী আফরোজা খাতুন বিলাপ করতে করতে বলেন, ‘আমার স্বামীকে তপন চিয়ারম্যান (চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান) নিজে অস্ত্রপাতি দিই গুলি করি মাইরিচে। ও ভালো না। ও দাঁড়া থাকি গুলি করালো আমাক স্বামীক। চিয়ারম্যান এতো খারাপ হবি কেন? আমি তার ফাঁসি চাই।’ এ সময় পাশে থাকা আত্মীয়-স্বজনেরা চিৎকার করে চেয়ারম্যানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে সেø¬াগান দিতে থাকেন। সিদ্দিকুর রহমান (৫৩) চাঁদগ্রাম ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মাঠে কাজ করার সময় তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় তার আপন তিন ভাই ইউনুচ আলী ম-ল (৪৮), খালেক ম-ল (৩৯) ও বাদশা ম-ল (৩০) এবং ভাতিজা কুব্বাত আলীও (৩৩) গুলিবিদ্ধ হন। তাদের মধ্যে বাদশার অবস্থা গুরুতর। গুলি করার পাশাপাশি তার পায়ে কোপানোও হয়েছে।
চাঁদগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল হাফিজ তপন জাসদের রাজনীতি করেন। তার আপন ভাই আব্দুল আলীম স্বপন কুষ্টিয়া জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আব্দুুল হাফিজ তপন বলেন, ‘এটা শিখিয়ে দেয়া কথা। এখানে কোনো রাজনীতি নেই। তবে প্রকাশ্যে যে ঘটনা ঘটেছে, এটার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি। যারাই দোষী, তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই। তারা যেটা করছে, এটা রাজনৈতিক হীন মানসিকতা। এগুলো বললে হত্যার প্রকৃত বিষয়ের মোড় ঘুরে যাবে।’

 

Comments (0)
Add Comment