কালীগঞ্জে ২০০ বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট : দেড় হাজার পরিবার ঘরছাড়া

কালীগঞ্জে ২০০ বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট : দেড় হাজার পরিবার ঘরছাড়া
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ২নং জামাল ইউনিয়নে সম্প্রতি দু’পক্ষের সহিংসতার ঘটনায় সংবাদ সম্মেলন করেছে উপজেলা বিএনপি। গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় শহরের নলডাঙ্গা সড়কে বিএনপির নির্বাচনি কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সহিংসতার ঘটনায় ইউনিয়নের ২০টি গ্রামের প্রায় দেড় হাজার পরিবার ঘরছাড়া এবং প্রায় ২ শতাধিক বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করা হয় সংবাদ সম্মেলনে। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ইলিয়াস রহমান মিঠু। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম সাইদুল, পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন, মোশাররফ হোসেন, জবেদ আলী, মোহাম্মদ আলী জিন্নাহসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। লিখিত বক্তব্যে ইলিয়াস রহমান মিঠু বলেন, গত ৩০ ও ৩১ মে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষ্যে উপজেলা ও পৌর বিএনপি দুই দিনব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করে। ২নং জামাল ইউনিয়নেও কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। কিন্তু ওই ইউনিয়নে যেন বিএনপি কোনো কর্মসূচি পালন করতে না পারে, সেজন্য আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ইসলাম মোল্লা ৪ আগস্ট বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ মামলার আসামি আলাউদ্দিন আলা এবং সাবেক জামায়াত নেতা ইউনুস আলীর নেতৃত্বে জামাল ইউনিয়নে ঢাল-সড়কি, রামদা নিয়ে মোটরসাইকেলে মহড়া দিয়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করা হয়। তিনি আরও বলেন, ৩১ মে রাতে উপজেলার নাকোবাড়িয়া গ্রামে নজরুল ইসলাম মোল্লা, আলা চেয়ারম্যান ও ইউনুস আলী দফায় দফায় বৈঠক করে বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর আক্রমণের পরিকল্পনা করে। সংঘর্ষ ও লুটপাটের বিষয়টি উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপির নেতারা থানার ওসিকে জানালেও তিনি আমলে নেননি। রাত থেকে শুরু করে সংঘর্ষের দিন সকাল ৭টা পর্যন্ত বারবার প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। সময়মতো সহযোগিতা ও পুলিশ মোতায়েন করা হলে এ সংঘর্ষ এড়ানো সম্ভব হতো। তিনি বলেন, এই সংঘর্ষের ঘটনায় জামাল ও কোলা ইউনিয়নের দুই শতাধিক বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। ঘরছাড়া হয়েছে প্রায় ১৫০০ পরিবার। এসব পরিবার এখন আবাদের জমিতেও যেতে পারছে না। এই সংঘর্ষকে পুঁজি করে বিএনপির ত্যাগী নেতা ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল ইসলামকে মিথ্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। যার সঙ্গে ঘটনার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। অথচ থানার ওসি গড়িমসি করে তদন্ত ছাড়াই তার নাম এজাহারে অন্তর্ভুক্ত করে মামলা গ্রহণ করেছেন। অবিলম্বে নুরুল ইসলামের নামে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং সহিংসতার মূল হোতা নজরুল ইসলাম মোল্লা ও আলাউদ্দিন আল আজাদকে দ্রুত গ্রেফতার না করা হলে ওসির প্রত্যাহারের দাবিতে লাগাতার কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে বিএনপি। কালীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, সংঘর্ষের ব্যাপারে আগে থেকে কিছুই জানতাম না। জানামাত্রই আমি ফোর্সসহ সকাল ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে যাই।
প্রসঙ্গত, গত ১ জুন ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার নাকোবাড়িয়া এলাকায় সামাজিক আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষে দুইজন নিহত হন। এরপর থেকেই জামাল ইউনিয়নের অন্তত ২০টি গ্রামে বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের হয়েছে।