চুয়াডাঙ্গায় শহরে পানির মিটার চুরির সময় হাতনাতে ২জন ধরা

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকায় পানির মিটার চুরির ঘটনা বেড়ে গেছে। শুধু পানির মিটারই নয়, বাড়ি ও দোকানের মালামালও চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন কোনো না কোনো এলাকায় হানা দিচ্ছে সংঘবদ্ধ এই সিন্ডিকেটটি। শহরবাসীর দীর্ঘ প্রতীক্ষার সুপেই পানির মুখ দেখার আগেই গত কয়েক মাসে প্রায় চারশতাধিক পানির মিটার চুরির ঘটনা ঘটেছে। এতে রাষ্ট্রীয় সম্পদ গিলে খাচ্ছে এই চক্রটি। ভুক্তোভুগিরা থানায় সাধারণ ডায়েরি করলেও পুলিশ তাদের নাগালও ছুতে পারেনি। এ ঘটনায় পৌর এলাকাজুড়ে চোর আতঙ্ক বিরাজ করছে। অবশেষে গতকাল এক বাড়িতে চুরির সময় এই সিন্ডিকেটের দুই সদস্যকে আটক করে এলাকাবাসী। তবে এই সিন্ডিকেটের মূল হোতারা রয়েছে ধরা ছোয়ার বাইরে। পরে হালকা উত্তম-মাধ্যমের পর দুজনকে দেয়া হয় পুলিশে।
পুলিশ বলছে, এরা একটা শক্তিশালী সিন্ডিকেট। রাঘব বোয়ালরা ধরা ছোয়ার বাইরে। এদেরকে চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
জানা যায়, দীর্ঘদিনের সুপেয় পানির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে চুয়াডাঙ্গা শহরের ছাগলফার্ম এলাকায় পানি শোধনাগারের উদ্বোধন করা হয়েছে গত বছরের ১৪ নভেম্বর। সেই বিশুদ্ধ পানির ছিটেফোটাও পাননি পৌর এলাকাবাসী। কবে মিলবে তাও কেউ স্পষ্ট করে বলতে পারছেন না পৌর কর্তৃপক্ষ। এই সুপেই পানির ব্যবহারের জন্য গত ৮-৯ মাস ধরে পৌরসভা কর্তৃক পানির মিটার লাগানো শুরু করে শহরজুড়ে। এরপর থেকেই শুরু হয় মিটার চুরি। সুপেয় পানি পান করার আগেই বেশির ভাগই পানির মিটার চুরি হয়ে গেছে। আর এই পানির মিটার নামে মাত্র মূল্যে বিক্রি করছে।
এদিকে গতকাল পৌর এলাকার গুলশানপাড়া থেকে পানির মিটার চুরির সময় হাতেনাতে দুজনকে আটক করে এলাকাবাসী। আটককৃতরা হলেন, চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার বনানীপাড়ার জয়নাল আবেদীনের ছেলে রবিউল (৪৫) ও তালতলা পশুহাটপাড়ার মৃত আলিম উদ্দিনের ছেলে আরিফুল ইসলাম (৩০)।
জানা গেছে, গতকাল সকালে শহরের গুলশানপাড়ার মৃত লোকমান ম-লের ছেলে নূর ইসলামের বাড়ি ফাঁকা থাকায় হানা দেই এই সিন্ডিকেটের দুই সদস্য। একজন ঘরের মধ্যে আর একজন বাড়ির বাইরে পানির মিটার চুরি করতে ব্যস্ত, ঠিক এই সময় নূর ইসলামের স্ত্রী নুরুন্নাহার বাড়িতে আসলে ধরা পড়ে যায় এই দুই চোর। পরে কৌশলে আটকিয়ে হালকা পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। এ সময় তাদের নিকট থেকে একটি পাখিভ্যান ও জব্দ করে পুলিশ।
চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর কামরুজ্জামান চাঁদ বলেন, গত কয়েক মাসে পৌর এলাকায় প্রায় চারশতাধিক পানির মিটার চুরির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল চুরির সময় দুজনকে আটক করে পুলিশে দেয়া হয়েছে। তার আগের দিনও দুটি মিটার চুরি হয়েছে। এরা একটা সিন্ডিকেট। এদেরকে থামাতে না পারলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে। চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মালিক খোকন বলেন, এই শোধনাগার ও পানির মিটার (প্রজেক্ট) ঠিকাদার আমাকে এখনো বুঝ করে দেয়নি। তাই পৌর কর্তৃপক্ষ পানির মিটারের কোনো খোঁজ খবর রাখছে না। তবে শুনেছি গত ৭-৮ মাস যাবৎ পানির মিটার লাগাচ্ছে। এরপর থেকেই চুরি হচ্ছে। এই ব্যাপারে আমি কোনো মন্তব্য করবো না। চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন, গুলশানপাড়ায় থেকে মিটার চুরির সময় এলাকাবাসী দুজনকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে। এ ঘটনায় রাতেই একটি মামলা দায়ের হয়েছে। এরা একটা সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের বাকিদের ধরতে মাঠে নেমেছে পুলিশ।

Comments (0)
Add Comment