জীবননগরে ঘন কুয়াশায় বোরো ধানের বীজতলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় চাষিরা

জীবননগর ব্যুরোঃ পৌষ মাসের শুরুতে চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে তীব্র শীত, হিমেল বাতাস ও ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। গত কয়েকদিন ধরে এখানে মৃদু শৈত্য প্রবাহ বয়ে চলেছে। ঘন কুয়াশায় দেখা মিলছে না সূর্যের আলো। তীব্র কুয়াশায় কৃষি জমির ফসলের ক্ষতির শঙ্কা করছেন বোরো চাষিরা। বিশেষ করে বোরো ধানের বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা।

জীবননগর উপজেলার ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, চাষিরা নিচু জমিতে বোরো মৌসুমের জন্য বিভিন্ন জাতের ধান বীজ বপন করেছেন। আর ১০-১২ দিন পরে চাষিরা বীজতলা থেকে চারা সংগ্রহ করে ধানের জমিতে রোপণ করবেন। ঘন কুয়াশায় বীজতলা থেকে চারা বাঁচাতে অনেকেই পলিথিন দিয়ে ঢেকে রেখেছেন। ইতোমধ্যেই তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় অনেক বীজতলার চারা হলুদ বর্ণ ধারণ করে শুকিয়ে যাচ্ছে। এতে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা।
জীবননগর উপজেলার উথলী গ্রামের বোরো চাষি আশরাফুল ইসলাম বলেন, গত তিন ধরে ঘন কুয়াশা আর তীব্র শীতের কারণে বোরো ধানের বীজতলায় ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। যদি এধরনের আবহাওয়া আরও কিছু দিন অব্যাহত থাকে তাহলে ধানের বীজতলা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যাবে।
গয়েশপুর গ্রামের মান্নান মোল্লা বলেন, আর মাত্র ১০ দিন পরে বীজতলা থেকে চারা নিয়ে ধানের জমিতে লাগানো হবে। কিন্তু ঘন কুয়াশার কারণে চারার আগাগুলো হলুদবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন সকালে লম্বা লাঠি দিয়ে চারার ওপর নাড়া দিয়ে শিশিরগুলো ফেলে দিই। তারপরেও এমন ঘন কুয়াশা আর কিছুদিন থাকলে চারাগুলো শুকিয়ে যেতে পারে। জীবননগর উপজেলার অনেক চাষি এখন বোরো ধানের বীজতলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন।
জীবননগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন জানান, তীব্র শীত ও কুয়াশায় বোরো ধানের বীজতলায় ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। অনেক চারা হলুদবর্ণ হয়ে যায়। ছত্রাক আক্রমণ করে চারা শুকিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। চাষিদের পলিথিন দিয়ে বীজতলা ঢেকে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সকালে বীজতলার ঠান্ডা পানি পরিবর্তন করে দিতে বলা হয়েছে। তাছাড়া লম্বা লাঠি দিয়ে চারার ওপর জমে থাকা শিশিরগুলো ফেলে দিতে বলা হয়েছে। তীব্র কুয়াশা থেকে বীজতলা রক্ষার জন্য চাষিদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এদিকে কনকনে শীত আর ঘন কুয়াশা আরও কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অফিস।