জীবননগর বিসিকেএমপি হাইস্কুলে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ : কর্তৃপক্ষের অস্বীকার    

 

জীবননগর ব্যুরো: জীবননগর উপজেলার মাধবপুরে অবস্থিত বিসিকেএমপি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণির ৩জন কর্মচারী নিয়োগ নিয়ে অর্থ বাণিজ্য করা করার অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করা হলেও তড়িঘড়ি নিয়োগ দিতে আজ রোববার নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে। তবে বিদ্যালয়ের পক্ষ হতে এ অভিযোগ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত বলে দাবি করা হয়েছে।

জীবননগর উপজেলার হাসাদহ ইউনিয়নের মাধবপুরে অবস্থিত বিসিকেএমপি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৪র্থ শ্রেণির ৩জন কর্মচারী নিয়োগে সম্প্রতি স্থানীয় একটি দৈনিকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। কিন্তু এ নিয়োগ সম্পন্ন হওয়ার আগেই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির ও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে নাইমুর রহমান নামের এক যুবক আদালতে মামলা করেন। মামলার বাদী নাইমুর রহমান বলেছেন, আমার বাপ-দাদারা বিদ্যালয়ের জমিদাতা সদস্য। আমি শিক্ষিত বেকার যুবক। উক্ত বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণি পদে আমিও একজন চাকরি প্রার্থী ছিলাম। কিন্তু বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বিশ্বাস ও প্রধান শিক্ষক মাহাবুব আলম আমাকে আবেদনের আগে তাদের সাথে টাকা পয়সার বিষয়টি শেষ করার কথা বলেন। অন্যথায় আবেদন করে কোনো লাভ হবে না বলেও তিনি জানান। তাদের সাথে স্কুলের নিয়োগ সংক্রান্তে কথা বলতে গেলে তাদের স্পষ্ট কথা মোবাইল ফোন নিয়ে যাওয়া যাবে না। তাদের এমন অনৈতিক দাবির কারণে আমি চুয়াডাঙ্গা আদালতে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ও প্রধান শিক্ষক মাহাবুব আলমকে বিবাদী করে দেং-১২৪/২২ মামলা করি। সেই মামলায় তারা আদালতকে কোনো জবাব না দিয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীদেরকে নিয়োগ দিতে তড়িঘড়ি করে নিয়োগ সম্পন্ন করতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে (১ ডিসেম্বর) বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী আব্দুর রশিদের মাধ্যমে প্রার্থীদের নিকট ৪ ডিসেম্বর নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য ভাইভা কার্ড সরাসরি হাতে পৌঁছে দেন। বিদ্যালয়ের অনুকুলে জমিদাতা মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে আল-মামুন বলেন, আমি বিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মী পদে চাকরির জন্য আবেদন করেছি। কিন্তু স্কুল কর্তৃপক্ষ আমার নিকট হয় টাকা নয়তো ৫ কাঠা জমি দাবি করছেন। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের তিন আত্মীয়কে চাকরি দিতে নিয়োগ কমিটি ইতোমধ্যেই সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত করেছেন বলে শুনছি। তারা হচ্চেন-নিরাপত্তাকর্মী পদে আলিফ ফেরদৌস পাপ্পু, পরিচ্ছন্ন কর্মী পদে রাসেল ইসলাম এবং আয়া পদে শিহাব উদ্দিনের স্ত্রী। তারা সকলেই মাধবপুর গ্রামের বাসিন্দা। বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক পাভেল মেহমুদ আব্দুর রউফ আমাদের নিকট টাকা দাবী করেন। জনৈক মাজেদুল ইসলামের অভিযোগ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহাবুব আলম ও সভাপতি আবুল কালাম আজাদ আমার নিকট প্রস্তাব দেন যে, আমার ভাই মুনসুর আলীর সাথে ১৯ শতক জমি যে মামলা চলছে সেই জমি লিখে দিলে তারা আমার উক্ত ভাইয়ের যে কোন একটা মেয়েকে চাকরি দেবে। কিন্তু ১৯ শতক জমির দাম প্রায় ২৪ লাখ টাকা। উক্ত জমির বিনিময়ে কিভাবে চতুর্থ শ্রেণির চাকরি করা সম্ভব চিন্তা করে আমরা আর সে প্রস্তাবে রাজি হয়নি। বিদ্যালয়টি ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের একক আধিপাত্য বিস্তার করে চলছে। প্রধান শিক্ষক মাহাবুব আলম বলেন, আমার কিংবা ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা মোটেও সত্য নয়। আমরা কারো নিকট টাকার প্রস্তাবও দেয়নি, আবার কারো টাকা নিয়েও নিয়োগ দিচ্ছি না। যা কিছু হচ্ছে বিধি মোতাবেক হচ্ছে। মামলা হয়েছে। কিন্তু মামলায় আদালত নিয়োগ স্থগিতের কোনো আদেশ দেয়নি। তাই আমরা নিয়ম অনুযায়ীই নিয়োগের প্রস্তুতি নিয়েছি। অভিযোগকারীর অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রনোদিত। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আমজাদ হোসেন বলেন, মামলার ব্যাপারে আমি কোন কাগজপত্র পাইনি এবং আমার বিষয়টি জানা নেই। ৪ ডিসেম্বরের নিয়োগ বিষয়ে আমি অবগত আছি। তবে মামলার বিষয়ে খোঁজখবর নেবো।

Comments (0)
Add Comment