পাল্টাপাল্টি মামলা : আতিকুলের মামলায় আসমা এবং আসমার মামলায় রফিকুল জেলহাজতে

দর্শনা অফিস: দর্শনা বাসস্ট্যান্ডের ভাংড়ি ব্যবসায়ী আক্কাছ আলীর মৃত্যু রহস্যের জট খুলতে বহু নাটকীয় ঘটনার সৃষ্টি হয়েছে। দায়ের করা হয়েছে পাল্টাপাল্টি একাধিক মামলা। অবশেষে আক্কাসের ছোট স্ত্রী আসমার দায়ের করা আত্মহত্যা প্রলোচনা মামলায় রফিকুল ইসলাম জেলহাজতে। দর্শনা বাসস্ট্যান্ডের আক্কাছ আলী মার্কেটের স্বত্বাধিকারী ও দর্শনার বিশিষ্ট ভাংড়ি ব্যবসায়ী আক্কাছ আলীর ঝুলন্ত লাশ গত ১৪ জানুয়ারি শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ভবনের পাশের একটি টিনসেড ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়। টিনসেড ঘরের আড়ার সাথে গলাই দড়ি দিয়ে আতœহত্যা করা হয়েছে বলে দ্বিপক্ষের স্ত্রী আসমা খাতুন দাবী করলেও তা মানতে নারাজ প্রথম পক্ষের স্ত্রী সেলিনা খাতুন। পাল্টাপাল্টি বক্তব্যের কারণে হত্যা নাকি আত্মহত্যা তা নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধুম্রজালের। মৃত্যু রহস্য উৎঘাটনে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল মর্গে। সেই সাথে দ্বি-পক্ষের দু’সন্তান যে আক্কাছের নয় তা প্রমাণের জন্য করা হয় ডিএনএ পরীক্ষা। এদিকে দর্শনা থানা ও চুয়াডাঙ্গা আমলি আদালতে আক্কাছের মৃত্যু রহস্য সম্পদ ভাগাভাগি নিয়ে একাধীক মামলা দায়ের দায়ের করেছে দুপক্ষই।
এদিকে প্রথম পক্ষের স্ত্রীর মেজো ছেলে আতিকুল ইসলাম বাদী হয়ে আক্কাছকে হত্যা ও ওয়ারিশ সনদ জালিয়াতির অভিযোগ তুলে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছেন দ্বিপক্ষের স্ত্রী আসমাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে। বাকি আসামির তালিকায় রয়েছেন দ্বিপক্ষের ছেলে আশিফ, মেয়ে আফরোজা, আশরাফ ও সালমা। ওয়ারিশ সনদ জালিয়াতি মামলায় গত ৫ জুন সালমার জামিন না মঞ্জুর করে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন বিজ্ঞ আদালতের বিচারক। এছাড়া দ্বিপক্ষের স্ত্রী আসমা খাতুন বাদী হয়ে চুয়াডাঙ্গা আমলি আদালতে আত্মহত্যায় প্ররোচনা ও জালিয়াতির অভিযোগ তুলে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন ৬ জনের বিরুদ্ধে। মামলা দুটির আসামির তালিকায় রয়েছেন দর্শনা বাসস্ট্যান্ডের আক্কাছ মার্কেটের শেখ মেডিকেলের স্বত্বাধিকারী রফিকুল ইসলাম, আক্কাছের প্রথম স্ত্রী সেলিনা বেগম, ছেলে সেলিম ইউসুফ সুজন, আতিকুল ইসলাম, নাছিম ও বাসস্ট্যান্ডের হোসেন আলীর ছেলে শহিদুল। আত্মহত্যায় প্ররোচনা মামলায় গত পরশু রোববার চুয়াডাঙ্গা আমলি আদালতের বিচারক জোহরা খাতুন জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে রফিকুল ইসলামকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এদিকে আশিফ জানান, মৃত্যুর ৫ দিনের মাথায় ১৯ জানুয়ারি দর্শনা থানা পুলিশ তার বাবার ভাংড়ি দোকান তল্লাশি চালিয়ে আক্কাছের লেখা একটি চিরকুট উদ্ধার করে। যে চিরকুটে লেখা ছিলো আমার মৃত্যুর জন্য রফিকুল দায়ী। আমার সাথে চিটারী করেছে, আমার জমি ও দোকান লিখে নিয়েছে শেখ মেডিকেলের মালিক। ইতি আক্কাছ আলী। চিরকুটটি আক্কাছ আলীর হাতে লেখা কিনা তাও পরিক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। তবে এখনো পর্যন্ত আক্কাছের মৃত্যু রহস্য জোট ধোয়াশার মধ্যেই রয়েছে। মৃত্যু রহস্যের জট না খুললেও দিনদিন মামলা সংখ্যা বাড়ছে ধা ধা করেই।

Comments (0)
Add Comment