প্রেমিকের সঙ্গে অভিমান : কুষ্টিয়ায় ছাত্রীমেস থেকে গাংনীর তরুণীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়া শহরের বাবর আলী গেট এলাকার একটি ছাত্রীমেস থেকে এক শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার সকালে তার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। মারা যাওয়া শিক্ষার্থীর নাম জান্নাতুল ফেরদৌস ওরফে মৌ (১৮)। তিনি মেহেরপুর গাংনী উপজেলার মথুরাপুর গ্রামের জিল্লুর রহমানের মেয়ে। জান্নাতুল উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি হওয়ার জন্য পড়াশোনা করছিলেন। বাবর আলী গেট এলাকায় এমএম টাওয়ার ছাত্রীমেসের ৪তলায় একটি কক্ষে তিনি একা থাকতেন। ওই ছাত্রীমেসে অন্তত ৫০ জন ছাত্রী বাস করেন।

ছাত্রী নিবাসের বাসিন্দারা জানান, এইচএসসি পাস করার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে ওই ছাত্রী মেসে থেকে কোচিং করছিলেন জান্নাত। জান্নাত তার প্রেমিকের সঙ্গে রাগারাগি করে কয়েকদিন ধরেই আত্মহত্যার চেষ্টা করছিলেন। এজন্য মঙ্গলবার রাতে তার সঙ্গে ছিলেন বান্ধবীরা। রাত ১টার পর তারা সবাই ঘুমাতে যান। সকালে উঠে বান্ধবীরা তাকে ডাকতে গিয়ে দরজা বন্ধ দেখতে পান। তারা আশপাশের লোকজনদের ডেকে দরজা ভেঙে ফেলার ব্যবস্থা করেন। পরে রুমের মধ্যে প্রবেশ করে দেখেন ওড়না পেঁচানো অবস্থায় ঝুলছেন জান্নাত। এ সময় তার হাতে ব্যান্ডেজ ছিলো।

ছাত্রীমেসের ব্যবস্থাপক দীপ্তি খাতুন বলেন, জান্নাতুল চলতি মাসের ৯ তারিখ এই ছাত্রীনিবাসে ওঠেন। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে জান্নাতুলের সঙ্গে তার সর্বশেষ কথা ও দেখা হয়। এরপর বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত জান্নাতুলের কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছিলো না। ডাকাডাকি করে না পেয়ে তার পরিবারকে ফোন দেয়া হয়।

দীপ্তি খাতুন আরও বলেন, এরপর ঘরের প্লাস্টিকের দরজা ভেঙে ভেতরে গিয়ে দেখতে পান তার লাশ গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় বৈদ্যুতিক পাখা লাগানোর হুকের সঙ্গে ঝুলছে। এরপর বিষয়টি জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯ এ কল করে জানানো হয়। কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। লাশের পাশ থেকে পুলিশ একটি চিঠি উদ্ধার করেছে। তা দেখে ধারণা করা হচ্ছে, জান্নাতুল আত্মহত্যা করেছেন।

কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি সাব্বিরুল আলম বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, জান্নাতুল আত্মহত্যা করেছেন। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা করা হবে।

Comments (0)
Add Comment