সাফল্য এমনি আসে না উৎকর্ষতা মেলে ধরতে হয়

চুয়াডাঙ্গা অনলাইন মার্কেট’র প্রথম বর্ষপূর্তিতে উদ্যোক্তা মিলন মেলায় পুলিশ সুপার

স্টাফ রিপোর্টার: কেউ নিজ হাতে রান্না করে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারের মাধ্যমে বিক্রি করেন, কেউ কেউ কাপড়ে পেইন্ট করে পাঞ্জাবি কাপড় সরবরাহ করেন। কারো বাণিজ্য অর্গানিক ফুড। কাস্টমাইজ জামা কাপড়, শিশুদের পোষাকসহ নানা পদের পণ্য তৈরি করে যেমন কেউ কেউ সরবরাহ করে নিজের গড়া প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সৃষ্টি করে চলেছেন কর্মসংস্থান, তেমনই অনেকেই রয়েছেন ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে পাওয়া অর্ডার অনুপাতে বাড়িতে বসেই কেক তৈরি করে সরবরাহের মাধ্যমে স্বনির্ভরতা অর্জন করছেন। এরকম ২৫ জনের মত উদ্যোক্তাদের নিয়ে গতকাল শুক্রবার সকাল ১১টায় চুয়াডাঙ্গা পুলিশ পার্ক মিলনায়তনে বসেছিলো উদ্যোক্তাদের মিলন মেলা।
চুয়াডাঙ্গা অনলাইন মাকের্ট নামক ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার গ্রুপের ১ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত উদ্যোক্তা মেলায় প্রধান অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব সভাপতি দৈনিক মাথাভাঙ্গা সম্পাদক সরদার আল আমিন। উদ্যোক্তা আরমান মোমিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনাসভা পর্বে আয়োজক আবু মহিদ আহমেদ ও তার পতিœ মহিমা মুন্নী সার্বিক তত্বাবধানে ছিলেন। অনুষ্ঠানের মধ্যমণি প্রধান অতিথি পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশে^ বিপ্লব ঘটিয়েছে। এ মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে অনেকেই উচ্চতার শিখরে পৌঁছে যাচ্ছেন, অনেকে অপ-ব্যবহারে পিছিয়েও পড়ছেন। চুয়াডাঙ্গায় বেশ কয়েকটি গ্রুপ রয়েছে যার মাধ্যমে অসংখ্য উদ্যোক্তা তাদের উৎপাদিত পণ্য সহজেই ভোক্তা সাধারণের নিকট পৌঁছে দিচ্ছেন। এতে যেমন উদ্যোক্তার সামনে খুলছে উজ্জ্বল সম্ভাবনার দ্বার, তেমনই ছোট বড় উদ্যোক্তা হচ্ছে সমৃদ্ধ। ভোক্তাদেরও সময় সাশ্রয়ী হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গা অনলাইন মাকের্ট নামক ম্যাসেঞ্জার গ্রুপ স্বচ্ছ্বতার সাথে মধ্যসত্ত্বা করতে পেরেছে বলেই এক বছর পূর্তিতে চমৎকার আয়োজন করে আগামী দিনের পথকে সুগম করছে। এটা দেখে আমাদের ভাল লাগছে। আমরা অবশ্যই ভালকাজের উৎসাহ যোগায়। আমাদের প্রধানমন্ত্রী এবং তার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয় দেশে ইন্টারনেট সম্প্রসারণেই শুধু নয়, ডিজিটাল দেশ গড়ার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আমি বিশ^াস করি, তরুণ প্রজন্ম অনলাইন সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে নিজের এবং দেশের সমৃদ্ধতা অর্জন করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে। মনে রাখতে হবে, মেধা সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে ভাগ্যের চাকা ঘোরানো সহজ। বসে থাকলে চলবে না, নিজের উৎকর্ষতা মেলে ধরতে সর্বদা সচেষ্ট থাকতে হবে।
উদ্যোক্তাদের মধ্যে বেশ ক’জন নারী উদ্যোক্তা বক্তব্য রাখেন। তারা তাদের উদ্যোগ এবং সফল হওয়ার গল্প বলেন। তাসিব মেঘ নামের উদ্যোক্তা বাড়ি তৈরি খাবার সরবরাহের মধ্যদিয়ে কীভাবে এগিয়ে যাচ্ছেন তার বর্ণনা দেন। সাবিনা আফরিন রিমি পোষাক ও কসমেটিক্স পৌঁছে দেন। সুমাইয়া খাতুন পাঞ্জাবি ও কাপড় পেইন্ট করে বিক্রি করেন। আরমান মোমিনের অর্গানিক ফুড, শাহারুমি সানজি কাস্টমাইজ জামাকাপড়, মোমতাজ মোহল সাহিদা সকল ধরনের পোষাক, অভি ভুইয়া ছেলে মেয়ে সবার জন্যই কাপড় চোপড়, মিথিলা মল্লিক বাড়ি তৈরি করা কেক ও ফাস্টফুড, মিলা মাহবুব কাস্টমাইজ পোষাক, জেএফ জান্নাত হাতের কাজের জামা কাপড়, ইপি খাতুন বাড়ি তৈরি খাবার, সাফুয়া আলম সাইবা মেয়েদের পোষাক, সোহেল ঐতিহ্যবাহী খাবার, নিথু আহমেদ বাড়ি তৈরি কেক, নুসরাত জোয়ার্দ্দার চৈতি অর্গানিক রূপচর্চা, নয়ন খন্দকার মধু খেজুর তীল ফল, জান্নাতুল সিফা কসমেটিকস, রুজমন নাহার মেয়েদের পোষাক, তানিয়া জোয়ার্দ্দার, লিমা আজাদ, সিফাত ইসলাম, ইদ্রিস আহমেদ ও সারমিন ইসলামের রয়েছে বাড়ি তৈরি খাবার নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার গল্প।
অনুষ্ঠানে আলোচনা পর্ব ছাড়াও ছিলো কেক কেটে চুয়াডাঙ্গা অনলাইন মার্কেট নামক প্রতিষ্ঠানের জন্মদিন পালন। বেশ ক’জন উদ্যোক্তাকে তাদের কাজে সাফল্য অর্জনে প্রদান করা হয় স্বীকৃত সনদ ও ক্রেস্ট।

Comments (0)
Add Comment