সুবিধা বঞ্চিত এতিম শিশুদের একদিনের বিনোদন

চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের সহযোগিতায় নারী কল্যাণ সমিতির বিশেষ আয়োজন

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা শিশু সদনের শিশুরা হেসে খেলে উন্নতমানের খাবার খেয়ে এবং কেক কেটে চমৎকার দিন কাটিয়েছেন গতকাল। সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল পর্যন্ত পুলিশ শিশু পার্কে উৎসবমুখর পরিবেশে নানা আয়োজনে অংশ নিয়ে স্বস্তির শ^াস ছেড়ে শিশু সদনে ফেরে তারা।

চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের সহযোগিতায় বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতির আয়োজনে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালায় পুলিশ সুপারপতিœ সমিতির সভানেত্রী ফরিদা ইয়াসমিন সার্বিক তত্ত্বাবধানে ছিলেন। এরপর উপস্থিত সিভিল সার্জন পতিœ নাহার পারভীন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) পতিœ শারমীন আক্তার সুমিসহ শিশু সদনের শিক্ষকদের পাশে নিয়ে শিশু সদনের শিশুদের সাথে নিয়ে কেক কেটে সকলের মুখে তা তুলে দিয়ে অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। এর আগে দুপুরে উন্নতমানের খাবার পারিবেশন করা হয়। সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর পর্যন্ত সুবিধাবঞ্চিত এসব শিশুরা পুলিশপার্কের সকল রাইড বিনামূল্যে উপভোগ করে। হেসে খেলে উল্লাসে মেতে দিনটি কাটিয়ে বিদায় বেলায় আয়োজনের প্রধান অতিথি পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুনের প্রশ্নের জবাবে সকলে সমস্বরে বলে উঠে, খুউব সুন্দর একটি দিন কাটলো আমাদের। আয়োজনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাত হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) আবু তারেক, সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিছুজ্জামান লালন, সদর থানার অফিসার ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মাহব্বুব রহমান, চুয়াডাঙ্গা প্রেসক্লাব সভাপতি সরদার আল আমিনসহ পুলিশ অফিসারদের অনেকে।

সংক্ষিপ্ত আলোচনা পর্বে আয়োজনের প্রধান অতিথি পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, নারী কল্যাণ সমিতি নারীদের নিয়েই বেশি কাজ করে। চুয়াডাঙ্গা শিশু সদনে এতিম তথা সুবিধাবঞ্চিত নারীদেরই আবাসিক শিক্ষাদানের ব্যবস্থা রয়েছে। নারী কল্যাণ সমিতি যে উদ্যোগ নিয়েছে তা প্রশংসার দাবি রাখে। এদের পাশে আমাদের দাঁড়ানো প্রয়োজন। শিশুদের স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার জন্য শিশুদের স্নেহ, আদর, ভালোবাসা দেয়া খুউবই দরকার।

পুলিশ সুপার বলেন, চুয়াডাঙ্গায় দায়িত্বগ্রহণের পর কয়েক দফা এই শিশুদের খুব কাছাকাছি হয়েছি। ওদের আবদার মেটাতে ব্যাডমিন্টন খেলার র‌্যাকেড, ফেদারসহ বেশ কিছু উপকরণ দিয়েছি। ক্রিকেট সেটের আবদার রয়েছে। অচীরেই তা দেয়া হবে।

পুলিশ সুপার শিশুদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, শুধু বিনোদন নয় লেখাপড়া করে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার যে সুযোগ পেয়েছো তা যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে মানুষের মতো মানুষ হতে হবে। নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে সমাজে বহু বঞ্চিতদের পাশে দাঁড়িয়ে সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে। আপনজদের কাছে না পেয়ে শিশু সনদে রয়েছো এবং লেখাপড়া করছো ভেবে একাকিত্ব ভাববে না। আমি এবং আমরা সবসময় তোমাদের পাশে অভিভাবক হিসেবে রয়েছি থাকবো। মাঝে মাঝেই আমি তোমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাবো, যেকোনো প্রয়োজনে জানালে আমি অবশ্যই তা পূরণ করবো। সমস্যা হলেও দ্রুত জানাতে হবে। ব্যবস্থা নেবো। কোনোভাবেই তোমরা ভাববে না, তোমরা একা। তোমাদের পাশে জেলা পুলিশ রয়েছে। থাকবে।

উল্লেখ্য, সুবিধাবঞ্চিত এতিম শিশুদের নিয়ে একদিনের বিনোদন শীর্ষক আয়োজনে চুয়াডাঙ্গা সরকারি শিশু সদনের ৬০ জনের বেশি শিশুসহ শিক্ষকদের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

Comments (0)
Add Comment