মুজিবনগর স্বাস্থ্য কর্মকর্তার জোগসাজসে টেন্ডার ॥ লিখিত অভিযোগের পরও কিছুই জানেন না সিভিল সার্জন

স্টাফ রিপোর্টার: মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এমএসআর দরপত্র বাতিলের দাবিতে করা আবেদনের সাড়া মেলেনি। দরদপত্র দাখিলের নির্ধারিত সময়ের পরে তিনটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করলেও তাদের মধ্য থেকেই পছন্দের প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে সিভিল সার্জন বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করে তিনটি প্রতিষ্ঠান। তবে অভিযোগের বিষয়টি জানা নেই বলে সাংবাদিকদের জানান মেহেরপুর সিভিল সার্জন ডা. নাসির উদ্দীন।

কিছুতেই যেনো থামছে না স্বাস্থ্য বিভাগের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির বিষয়। সারাদেশে আলোচিত কয়েকটি ঘটনার পর আবারও আলোচনায় উঠে এসেছে মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার বিষয়। এমনটি জানিয়ে এলাকার সচেতন কয়েকজন ও ভুক্তভোগীরা জানান, এমএসআর টেন্ডার নিয়ে নানা অভিযোগের বিষয়ে ভুক্তভোগীরা এখন ওপরতলা থেকে নিচতলা পর্যন্ত হাঁটছেন। সংশ্লিষ্ঠদের কাছ থেকে যথাযথ প্রতিকার না পেয়ে ক্ষোভ বাড়ার পাশাপাশি স্বাস্থ্য বিভাগের ওপর মানুষের আস্থার জায়গাও সংকুচিত হচ্ছে। লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অধীন মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে মেডিকেল এন্ড সার্জিক্যাল রিকুইজিটস (এমএসআর) সামগ্রী ক্রয়ের জন্য গত ২৩ ফেব্রুয়ারি দরপত্র আহ্বান করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা। ২৩ মার্চ দুপুর ১২টা পর্যন্ত ছিলো দরপত্র দাখিলের শেষ সময়। কয়েকটি প্রতিষ্ঠান নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দরপত্র দাখিল করে। সাহিদা ট্রেডার্স, বৃত্ত সাপ্লাই ট্রেডিং এবং আমান ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল নামের তিনটি প্রতিষ্ঠানের দরপত্র দাখিল করা হয় দুপুর ১২ টা ৭ মিনিটে। নির্ধারিত সময়ের পরে দরপত্র দাখিলে সহায়তা করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রেজওয়ান আহমেদ। ঘটনার সময় মুজিবনগর থানার এসআই এসএম গোলাম মোর্শেদ ও হাসপাতালের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও সবচেয়ে বড় প্রমাণ রয়েছে হাসপাতালের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে। এ ঘটনায় ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান জুয়াইরিয়া ইন্টারন্যাশনাল ও প্রান্ত ইন্টারন্যাশনাল এর পক্ষে মেহেরপুর সিভিল সার্জন ও স্বাস্থ্য অধিদফতরে লিখিত অভিযোগ করা হয়। নির্ধারিত সময়ের পরে দরপত্র বাক্সে দরপত্র দাখিলের বিষয়ে সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংরক্ষণে নেই বলে দাবি করেন মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রেজওয়ান আহমেদ। গোপন আঁতাতের টেন্ডারের বিষয়টি আড়াল করতেই সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংরক্ষণ করা হয়নি বলে দাবি করছেন ভুক্তভোগীরা। প্রমাণ নষ্ট হওয়ায় গোপন আতাতের বিষয়টি তাদের কাছে আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে। লিখিত অভিযোগের বিষয়ে সিভিল সার্জন অফিস ভুক্তভোগীদের কোনোকিছুই অবগত করেনি। তাই বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগীদের মাঝে ব্যাপক ক্ষোভ বিরাজ করছে। লিখিত অভিযোগের বিষয়টি গোচরে আনলে মেহেরপুর সিভিল সার্জন ডা. নাসির উদ্দীন বলেন, আবেদনের বিষয়টি সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে জানাতে পারবো। তবে সব অভিযোগ মিথ্যা এবং টেন্ডার কমিটির সিদ্ধান্তে টেন্ডার সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রেজওয়ান আহমেদ।

 

Comments (0)
Add Comment