একাদশে ৫ পরিবর্তন কি ভুল ছিল? যা বললেন লিটন

মিরপুরে গতকাল পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ পেয়েছিল এক বিরল সুযোগ, যা বাংলাদেশ সচরাচর পায় না। মধুর এক সমস্যাই ছিল। পুরো শক্তির দল নিয়ে হোয়াইটওয়াশের জন্য খেলবে, নাকি সিরিজ আগেই নিশ্চিত হওয়ায় বেঞ্চ শক্তি যাচাই করবে, তা নিয়ে ছিল দ্বিধা। ম্যানেজমেন্ট বেছে নিয়েছিল দ্বিতীয় পথটা—দলের বেঞ্চের শক্তি বাজিয়ে দেখার সুযোগটাই নিয়েছে বাংলাদেশ।

তবে ফলটা ভালো হয়নি। বোলিংয়ে সুবিধা করতে পারেনি, এরপর ব্যাটিংয়ে মুখ থুবড়ে পড়ে বাংলাদেশ ম্যাচটা হেরেছে ৭৪ রানে।

এই ম্যাচে বাংলাদেশ একাদশে পাঁচ পরিবর্তন নিয়ে নেমেছিল। দলে আসেন তানজিদ হাসান তামিম, মেহেদি হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, তাসকিন আহমেদ ও নাসুম আহমেদ। তাদের জায়গা করে দিতে একাদশ থেকে বাদ পড়েন পারভেজ ইমন, তৌহিদ হৃদয়, তানজিম হাসান সাকিব, মুস্তাফিজুর রহমান ও রিশাদ হোসেন।

কেন এত পরিবর্তন, সে প্রশ্নের জবাবে অধিনায়ক লিটন দাস বলেন, ‘দেখেন তাসকিন অনেকদিন পর ক্রিকেটে ব্যাক করেছে। আর আপনারা হয়তোবা সবাই জানেন যে ও যদি কন্টিনিউয়াসলি খেলতে থাকে ওর ইনজুরির চান্স প্রোব্যাবলি বেশি থাকবে। শরিফুলও সেম, পাকিস্তান সিরিজে ও গ্রোইন ইনজুরিতে পড়েছিল। ইনফ্যাক্ট ক্যান্ডিতে না ডাম্বুলায় যেন ওর একটু গ্রোইন এ প্রবলেম ছিল। সো জিনিসটা এমন না, আপনাকে বুঝতে হবে যে কোন প্লেয়ারটার কতটুকু, কোন কোন গেম খেলালে তার জন্য ভালো হবে।’

তানজিদ ও তাসকিন টি-টোয়েন্টিতে দলের নিয়মিত সদস্য হলেও মিরাজ, সাইফউদ্দিন ও নাসুম এই সংস্করণে অনিয়মিত। আর ওপেনার মোহাম্মদ নাইম আগের ম্যাচে সুযোগ পেয়েছিলেন, দ্বিতীয়বার সুযোগ পেয়েছিলেন নিজের সামর্থ্য প্রমাণে। কিন্তু সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি সবাই।

টি-টোয়েন্টিতে বরাবরই সমালোচনার মুখে থাকা মেহেদি হাসান মিরাজ প্রথম ওভারেই দেন ১৪ রান। এরপর অধিনায়ক লিটন দাস আর তাঁকে বোলিংয়ে আনেননি। ব্যাট হাতে আট বল খেলে ১০ রান করে মিড-অফে ধরা পড়েন ফাহিম আশরাফের শর্ট বল পুল করতে গিয়ে।

নাইম আগের ম্যাচে করেছিলেন মাত্র ৩ রান, এবারও ব্যর্থ হয়েছেন। ১৭ বলে করেন মাত্র ১০ রান। রান তাড়ায় এভাবেই ব্যর্থ হয় টপ অর্ডার।

এক বছর পর টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা নাসুম আহমেদ বল হাতে ছিলেন দলের সেরা। ৪ ওভারে ২২ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট।

তবে সাইফউদ্দিনের দিনটা কেটেছে ভালো মন্দের মিশেলে। বল হাতে শুরুতে কিপটে ছিলেন। ৩ ওভারে দিয়েছিলেন ৯ রান। তবে শেষ ওভারে দুই ছক্কাসমেত হজম করেছেন ১৯ রান। এরপর ব্যাট হাতে ৩৪ বলে অপরাজিত ৩৫ রানের ইনিংস খেলেন। তবে তার এই মন্থরগতির ইনিংস দলের হারের ব্যবধানটাই কমাতে পেরেছে কেবল।

এই ম্যাচ থেকে ম্যানেজমেন্ট অন্তত এটুকু বুঝেছে—কে তাদের পরিকল্পনার অংশ হবেন, আর কাদের বাদ দিলে ভালো হবে।

শেষ ম্যাচের এই পরীক্ষানিরীক্ষা তাই খারাপ হয়নি, বিশ্বাস লিটনের। তিনি বলেন, ‘আমাদের হাতে কিন্তু বাংলাদেশে যারা দেখছেন তার থেকে আরও দু-তিনজন আছে যারা কি না বেস্ট পেস বোলার। সো আমরা যদি তাদেরকে হারায় ফেলি কোনো কারণে তাহলে কিন্তু যে স্বপ্নটা বা যে আশা নিয়ে আমরা চিন্তা করি সেখানে কিন্তু আমরা পৌঁছাতে পারব না। সো আমার মনে হয় প্রত্যেকটা প্লেয়ারকেই সুযোগ দেওয়াটা উচিত এবং সাথে সাথে তাদের স্বাস্থ্যের জিনিসটা দেখা উচিত।’