রোমাঞ্চকর জয়ে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ

স্টাফ রিপোর্টার:শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে রোমাঞ্চকর জয়ে ইতিহাস গড়ল বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টির সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে এই প্রথম সিরিজ জয়ের নজির গড়ল টাইগাররা।

তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করে বাংলাদেশ।

মঙ্গলবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে প্রথমে ব্যাট করে ১৩৩ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।

টার্গেট তাড়ায় ১৫ রানে ৫ উইকেটে হারানো পাকিস্তান; ফাহিম আশরাফের অবিশ্বাস্য ব্যাটিংয়ে জয়ের দুয়ারে গিয়ে হোঁচট খায়। ১৯.২ ওভারে ১২৫ রানে অলআউট হয়ে পাকিস্তান ম্যাচ হারে ৮ রানে। ২-০ ব্যবধানে জিতে সিরিজ নিশ্চিত করে স্বাগতিকরা।

এদিন সহজ ম্যাচ কঠিন করে জিতল বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৩৩ রানের পুঁজি নিয়ে বোলিংয়ে দুর্দান্ত শুরু করে টাইগাররা। ১৫ রানে পাকিস্তানের ৫ উইকেট তুলে নিয়ে নিশ্চিত জয়ের পথেই ছিল বাংলাদেশ।

কিন্তু ইনিংসের শুরুতে পাকিস্তানকে চেপে ধরা বাংলাদেশ; এরপর একাধিক ক্যাচ মিস এবং বাজে ফিল্ডিংয়ের কারণে পরাজয়ের শঙ্কায় ছিল বাংলাদেশ।

শেষ ওভারে জয়ের জন্য পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল মাত্র ১৩ রান। হাতে ছিল শেষ উইকেট। মোস্তাফিজের করা প্রথম বলে বাউন্ডারি হাঁকান আহমেদ দানিয়াল। দ্বিতীয় বলেও বাউন্ডারি হাঁকানোর চেষ্টা করেন এই ম্যাচে অভিষেক হওয়া দানিয়াল। মোস্তাফিজের স্লোয়ারে স্লগ করে ছক্কা মারতে গিয়ে ডিপমিড উইকেটে ক্যাচ তুলে দেন তিনি।

সীমানার কাছে দাঁড়িয়ে থাকা শামিম হোসেন পাটোয়ারি উড়ে আসা বলটি তালুবন্দি করেন। তখন স্টেডিয়াসহ সারা দেশের ক্রিকেট ভক্তরা উল্লাসে মেতে ওঠেন।

রোমাঞ্চকর এই জয়ে সিরিজ নিশ্চিত করল বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে এটিই বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ জয়।

মঙ্গলবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চরম বিপর্যয়ে পড়ে যায় বাংলাদেশ।

সেই অবস্থা থেকে দলকে খেলায় ফেরান জাকের আলি অনিক ও শেখ মেহেদি হাসান । তারা পঞ্চম উইকেটে ৪৯ বলে ৫৩ রানের রেকর্ড জুটি গড়েন।

মেহেদি ২৫ বলে ৩৩ রান করে ফিরলেও ইনিংসের শেষ বল পর্যন্ত লড়াই করে যান জাকের আলি। তিনি ৪৮ বলে এক চার আর ৫টি ছক্কার সাহায্যে দলীয় সর্বোচ্চ ৫৬ রান করে ইনিংসের শেষ বলে আউট হন। তার দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ১৩৩ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ।

১২০ বলে ১৩৪ রানের সহজ টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৪.৪ ওভারে মাত্র ১৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে কঠিন বিপদে পড়ে যায় পাকিস্তান। দলের নিশ্চিত পরাজয় জেনেও অবিশ্বাস্য ব্যাটিং করেন ফাহিম আশরাফ। তার দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে জয়ের দুয়ারে চলে যায় পাকিস্তান।

৩১ বলে চারটি চার আর সমান ছক্কায় ফিফটি হাঁকানোর পরের বলেই আউট হন ফাহিম। তিনি ১৯তম ওভারে দুই চার আর এক ছক্কায় ১৫ রান আদায় করে ওভারের শেষ বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন।

ফাহিম আশরাফের উইকেট পতনের ম্যাচ থেকে কার্যত ছিটকে যায় পাকিস্তান। তারপরও কিঞ্চিত আশা জেগেছিল তাদের। জয়ের জন্য শেষ ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। হাতে ছিল এক উইকেট। পাকিস্তান তাকিয়ে ছিল দুই পেস বোলার আহমেদ দানিয়াল ও সালাম মিরাজের দিকে।

এই ম্যাচে অভিষেক হওয়া দানিয়াল ইনিংসের শেষ ওভারে মোস্তাফিজের করা প্রথম বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ফের জয়ের আশা জাগান। কিন্তু দ্বিতীয় বলে মিড উইকেটের উপর দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে সীমানার কাছে ধরা পড়েন তিনি। দানিয়ালের উইকেট হারানোর মধ্য দিয়ে পাকিস্তান ১৯.২ ওভারে ১২৫ রানে অলআউট হয়। বাংলাদেশ ৮ রানের জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করে।

বাংলাদেশের হয়ে ৩ উইকেট নেন শরিফুল ইসলাম। আর দুটি করে উইকেট নেন মেহেদি হাসান ও তানজিম হাসান সাকিব। গুরুত্বপূর্ণ শেষ উইকেটটি নেন মোস্তাফিজ।