কুষ্টিয়ায় পৃথক দুটি হত্যা মামলায় ৩ জনের যাবজ্জীবন

 

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার মিরপুরে মোটরসাইকেল চাপায় বন্ধুকে হত্যার দায়ে ইন্তাদুল হক (৩৪) ও রুহুল আমীন (৩৪) এবং দৌলতপুরে শ^াসরোধে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামী হোচেন আলীর (৫৩) যাবজ্জীবন কারাদ-সহ অর্থদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। রোববার দুপুর দেড়টায় কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ অতিরিক্ত আদালত-১ এর বিচারক তাজুল ইসলাম এবং আদালত-২ এর বিচারক রেজাউল করীম জনাকীর্ণ আদালতে সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় দেন। রায়ে কারাদ-সহ ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও একবছর সাজার আদেশ দিয়েছেন আদালত। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন দৌলতপুর উপজেলার নারায়নপুর দহকুলা গ্রামের আফছার মোল্যার ছেলে ইন্তাদুল হক (৩৪), জালু মোল্লার ছেলে রুহুল আমিন (৩৪) এবং স্ত্রী হত্যায় দৌলতপুরের দীঘলকান্দি পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত আসান আলীর ছেলে হোচেন আলী (৫৩)।

আদালতের মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় দৌলতপুর উপজেলার নারায়ণপুর দহকুলা গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে ফিরোজকে (২৫) তার বন্ধু ইন্তাদুল (২৫) ও জালু মোল্লার ছেলে রুহুল আমিন (২৫) বাড়ি থেকে বেড়াতে যাওয়ার কথা বলে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে যায়। পরে ওইদিন রাত ১১টার দিকে একটি মাইক্রোতে মৃত ফিরোজের মরদেহ তার বাড়ির সামনে ফেলে রেখে চলে যায়। এ ঘটনায় পরিকল্পিত হত্যার অভিযোগ এনে ঘটনাস্থল মিরপুর হওয়ায় নিহত ফিরোজের পিতা বাদি হয়ে দুইজনের নামোল্লেখসহ মিরপুর থানায় হত্যা মামলা করেন।

অপর মামলায় ২০১১ সালের ১৮ নভেম্বর রাতে পারিবারিক কলহের জেরে দৌলতপুর উপজেলার দীঘলকান্দি পূর্বপাড়া গ্রামের বাসিন্দা হোচেন আলী তার স্ত্রী মরজিনা খাতুনকে (৩৭) গলায় ওড়না পেচিয়ে শ^াসরোধ করে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই উপজেলার শেরপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সামছুদ্দিন ম-লের ছেলে মারজেল ম-ল বাদি হয়ে দৌলতপুর থানায় বোনের স্বামী হোচেন আলীকে আসামি করে দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা করেন।

মামলা দুটি তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ১৩ এপ্রিল নিহত ফিরোজের বন্ধু ইন্তাদুল এবং জালু মোল্লার ছেলে রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মিরপুর থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক ইকবাল হোসেন। সেখানে একই তরুনীর সাথে দ্বিমুখী প্রেমের প্রতিদ্বন্দ্বি হওয়ার কারণে বন্ধু ইন্তাদুল ফিরোজকে কৌশলে মোটরসাইকেল চাপা দিয়ে হত্যা করেছে বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে। ২০১২ সালের ১৬ এপ্রিল দৌলতপুর থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক আবুল কালাম আজম পারিবারিক কলহের জেরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামী হোচেন আলীর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন।

কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাড. অনুপ কুমার নন্দী জানান, পৃথক দুটি হত্যা মামলায় পুলিশের দেয়া তদন্ত প্রতিবেদনে দীর্ঘ স্বাক্ষ্য শুনানী শেষে আসামিদ্বয়ের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ-সহ প্রত্যেককে পৃথকভাবে ২৫ হাজার টাকা করে অর্থ দন্ডাদেশ অনাদায়ে আরও ১বছরের সাজা দ-াদেশ দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত।

Comments (0)
Add Comment