কুষ্টিয়ায় মানব পাচার ও মুক্তিপণ আদায় চক্রের দুই সদস্য গ্রেফতার

 

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: মানব পাচার শেষে আটক রেখে পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়কারী চক্রের দুই সদস্যকে কুষ্টিয়া থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২১ অক্টোবর) সারারাত জেলার দৌলতপুরে অভিযান পরিচালনা করে তাদের গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার দৌলতখালী এলাকার হাবিল সর্দারের ছেলে রেজাউল করিম হিমেল (৪০) ও দৌলতপুর মাদিয়া ত্রিমোহনী এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে পারভেজ রানা (২৭)। শনিবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে কুষ্টিয়া পুলিশ লাইনের মিডিয়া কক্ষে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন পুলিশ সুপার খাইরুল আলম।

পুলিশ জানায়, কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের সাদিপুর এলাকার আব্দুস সামাদের ছেলে ইশরাক শাহরিয়ার জয়কে কম্বোডিয়ায় ভালো বেতনে কম্পিউটার অপারেটরের চাকরি দেবে বলে বিদেশে যেতে প্ররোচিত করে। সেখানে মাসে এক লাখ টাকা বেতন, থাকা-খাওয়া ও আকামাসহ যাবতীয় খরচ কোম্পানি বহন করবে বলে জানায় প্রতারক চক্র। ওই চক্রের কথায় আশ্বস্ত হয়ে ইশরাকের পিতা চলতি বছরের ২৩ মে রেজাউল করিম হিমেলকে তিন লাখ পঁচাত্তর হাজার টাকা দেন। গত ২৪ জুন ইশরাককে কম্বোডিয়ায় পাঠিয়ে দেয়া হয়।

কম্বোডিয়ায় যাওয়ার দুমাস পর প্রতারক চক্রের আরেক সদস্য মো. শোভন হোসেন তাকে জিম্মি করে একটি অজ্ঞাত জায়গায় আটকে রেখে জয়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কাজ করতে চাপ সৃষ্টি করে এবং আট লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। সেখানে তাকে তিন দিন আটক রাখে। পানি ছাড়া আর কিছু খেতে দেয়া হয়নি তাকে। এ সময় তাকে বৈদ্যুতিক শকসহ নানাভাবে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। হিমেলের মোবাইলের মাধ্যমে জয়ের সঙ্গে তার পরিবার যোগাযোগ করলে জয় পরিবারকে এ অত্যাচারের বিষয়ে জানায়। পরে ওই চক্রকে ৮ লাখ টাকা দিতে রাজি হলে বিভিন্ন বিকাশের মাধ্যমে ৪ লাখ ৬০ হাজার টাকা পাঠিয়ে দেয় জয়ের পরিবার। বাকি তিন লাখ টাকা দিতে না পারলে তারা জয়ের কাছে থাকা দুটি মোবাইল, নগদ ৯০ হাজার টাকা ও পাসপোর্ট-ভিসা কেড়ে নেয়। তাকে ওই অবস্থায় রাস্তায় বের করে দেয়। গত ২৬ সেপ্টেম্বর কম্বোডিয়ান দূতাবাস, থাইল্যান্ড দূতাবাস এবং দুই দেশের ইমিগ্রেশন ও টিকিট বাবদ ১ লাখ ৭৫ টাকা খরচ করে আউট পাস দিয়ে জয়কে বাংলাদেশে আনা হয়।

 

Comments (0)
Add Comment