কুষ্টিয়ায় হত্যা মামলায় একজনের আমৃত্যু দুজনের যাবজ্জীবন

 

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে বাধা দেয়ায় এবং পূর্ব শত্রুতার জেরে ইমরান রশিদ নামে এক ব্যক্তিকে হত্যার দায়ে একজনের আমৃত্যু ও দুই আসামির যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও তাদেরকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদ- দেয় আদালত। সোমবার দুপুরে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আালতের বিচারক মুহাম্মদ তাজুল ইসলাম এ রায় ঘোষণা করেন। আমৃত্যু কারাদ-প্রাপ্ত আসামি হলেন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কাটদহ চর এলাকার জমশের আলীর ছেলে জিয়া। যাবজ্জীবন দ-প্রাপ্ত দুই আসামি হচ্ছেন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কাটদহ চর এলাকার আসান আলীর ছেলে মোস্তফা এবং একই উপজেলার শাকদহর চর এলাকার ইবাদত আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর।

দ-প্রাপ্ত আসামি জিয়া ও জাহাঙ্গীর বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। তবে রায় ঘোষণার সময় অপর যাবজ্জীবন কারাদ-প্রাপ্ত আসামি মোস্তফা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাকে কুষ্টিয়া জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়। একই সাথে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মিলন, আহসান এবং জসিম নামের ৩ জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

কুষ্টিয়া জজ কোর্টের সরকারি কৌশুলী (পিপি) অনুপ কুমার নন্দী রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আদালত এবং এজাহার সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কাটদহ চর এলাকার বাদশা মাস্টারের ছেলে ইমরান রশিদ (২৮)। ২০০৪ সালের ২১ নভেম্বর রাতে পরিবারের লোকজনের সাথে খাবার খাওয়ার পর ইমরান রশিদ প্রতিবেশী চাচাতো ভাই আশরাফুলের বাড়িতে যান এবং চাচাতো ভাইয়ের সাথে ওই বাড়িতেই ঘুমিয়ে পড়েন। রাত একটার দিকে আসামিরা দল বেঁধে অস্ত্র নিয়ে ইমরানের বাড়িতে যান এবং ইমরানকে খোঁজাখুঁজি করেন। এ সময় ইমরানের পরিবারের লোকজন আসামিদেরকে জানান, ইমরান তার চাচাতো ভাইয়ের বাড়িতে ঘুমাচ্ছে। এ কথা শোনার পর আসামিরা ইমরানের চাচাতো ভাইয়ের বাড়িতে যান এবং ইমরানকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে গলায় ও বুকে গুলি করে হত্যা করে।

দ-প্রাপ্ত আসামিরা চরমপন্থী দলের সদস্য, চাঁদাবাজী অপহরণ খুনসহ নানা অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িত বলে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। তাদের অপরাধ কর্মকাণ্ডে বাধা দেয়ায় এবং পূর্ব শত্রুতার জেরে ইমরানকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পরদিন ২২ নভেম্বর নিহত ইমরান রশিদের ছোট ভাই হুমায়ুন রশিদ বাদী হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে মিরপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

দীর্ঘ তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালের ২৯ অক্টোবর আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। এরপর আদালত এ মামলায় ১৪ জন স্বাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে সোমবার রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।

Comments (0)
Add Comment